।। প্রথম কলকাতা ।।
২০২২ সালে বিশ্বজুড়ে একাধিক উদীয়মান প্রযুক্তি নজর কেড়েছে মানুষের। কোথাও ফেসবুকের মেটাভার্স আবার কোথাও শব্দ গঠনের খেলা ওয়ার্ডেল। চমক দিয়েছে একাধিক নতুন গ্যাজেটও যার মধ্যে অবশ্যই উল্লেখযোগ্য এআর বা অগমেন্টেড রিয়ালিটি হেডসেট এবং নাথিং ফোন ওয়ান (Nothing Phone 1) এর মতো স্মার্টফোন। সবমিলিয়ে বছরভর সাধারণ মানুষকে মজিয়ে রেখেছিল এইসব প্রযুক্তি। যা আমাদের সবার আশা আগামী বছর আরও নতুন সৃষ্টিশীল উপায়ে সাধারণ মানুষের মনিকোঠায় জায়গা করে নিতে পারবে।
২০২২ সালে সবচেয়ে বেশি চর্চায় ছিল যে সব প্রযুক্তি
Wordle
এই বছর সবচেয়ে ট্রেন্ডিং বা চর্চায় ছিল যে প্রযুক্তি সেটি হল ওয়ার্ডেল (Wordle) একটি শব্দছক। অনেকটা দাবার বোর্ডের মতো দেখতে, তবে সম্পূর্ণই ডিজিটাল। এখানে পাঁচ অক্ষরের শব্দ গঠন করতে হয়। থাকে বিভিন্ন খোপ আলাদা আলাদা রঙে। সুযোগ থাকে ৬ বার। এলোমেলো সাজানো পাঁচ অক্ষরের শব্দ নির্বাচন করতে হয় এই গেমে। অনেকাংশে দৈনিক সংবাদপত্রের পাজেল গেমের মতো। তবে এই পাজেল দিনে একবারই সমাধান করা যায়। বর্তমানে এই গেমটির মালিক নিউইয়র্ক টাইমস। যদিও গেমটি খুব নতুন নয়। ২০১৩ সালে জস ওয়ার্ডেল নামে এই ব্যক্তি এই গেমটি তৈরি করেন। ২০২২ সালে গুগল সহ অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি ট্রেন্ডে ছিল এই গেম।
আরও পড়ুন : মসিহা যখন প্রযুক্তি! iPhone ক্র্যাশ ডিটেকসন ফিচার প্রাণ বাঁচালো আরও এক মহিলার
Metaverse
আশাকরি মেটাভার্স সম্পর্কে সকলেই ওয়াকিবহাল। তবে এই প্রযুক্তির প্রচার সবচেয়ে বেশি হয়েছে এই বছর, সৌজন্যে ফেসবুক (Facebook)। কারণ সম্প্রতি সংস্থা তাদের নাম বদলে মেটা (Meta) রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই মেটাভার্স হল একপ্রকার ভার্চুয়াল দুনিয়া। যদিও রক্তমাংসের কোনও উপস্থিতি নেই এখানে। তবে বাস্তব পৃথিবীতে যা যা অভিজ্ঞতা আমরা করে থাকি তা সবই এখানে উপলব্ধ। ভার্চুয়াল কফি শপ থেকে শুরু করে অফিস, প্লে গ্রাউন্ড, স্কুল, ইউনিভার্সিটি, শপিং মল, সিনেমা হল সবই রয়েছে এখানে। এমনকি পৃথিবীর মতো এখানেও আপনি জমি-সম্পত্তি কেনা বেচা যায়। যার জন্য NFT এর সাহায্য নিতে হয়। ২০২২ সালে সবচেয়ে বেশি চর্চায় থাকা প্রযুক্তিগুলির মধ্যে অন্যতম এটি।
Virtual Reality/ Augmented Reality
ভার্চুয়াল রিয়ালিটি বা অগমেন্টেড রিয়ালিটি ব্যবহারকারীদের একটি নতুন পরিবেশে নিমজ্জিত করে। এর জন্য বাজারে এসেছে বিশেষ ভার্চুয়াল রিয়ালিটি এবং অগমেন্টেড রিয়ালিটি হেডসেট। যা চোখে পড়ে এই ভার্চুয়াল দুনিয়া অন্বেষণ করা যায়। যদিও বর্তমানে এটি সোশ্যাল মিডিয়া গেমিংয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। তবে সম্প্রতি ভার্চুয়াল শিপ সিমুলেশন সফ্টওয়্যার মার্কিন নৌবাহিনী, সেনাবাহিনী এবং কোস্ট গার্ড জাহাজের ক্যাপ্টেনদের প্রশিক্ষণের জন্যও ব্যবহার করা হচ্ছে। এক পরিসংখ্যান অনুযায়ী ২০২৯ সালে ১৪ মিলিয়ন ডলারের এআর ও ভিআর ডিভাইজ বিক্রি হয়েছিল। যা ২০২২ সাল শেষ হতে বিশ্বব্যাপী ২০১৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছনোর সম্ভাবনা দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন : Avatar 2 Technology: কম্পিউটার জেনারেটেড ওয়াটারে শুটিং হয়েছে গোটা ফিল্ম, দেখলে মনেই হবে না
Blockchain
ব্লকচেইন বলতে সবার মাথায় প্রথমে যেটা আসে সেটা হল ক্রিপ্টোকারেন্সি। একদমই ঠিক ক্রিপ্টোকারেন্সির ভীত যার উপর নির্ভর করে তৈরি সেটি হল ব্লকচেইন। সহজ ভাষায় বলতে গেলে এই প্রযুক্তি হল এক ধরণের অনলাইন লেজার যেখানে বিটকয়েনের মতো বিভিন্ন ক্রিপ্টোকারেন্সির লেনদেনের তথ্য স্টোর করা হয়। লেনদেনের পরিপ্রেক্ষিতে এই প্রযুক্তিকে অত্যন্ত নিরাপদ এবং আধুনিক কৌশল হিসাবে মনে করা হয়। চলতি বছর ব্লকচেইন প্রযুক্তি এবং ব্লকচেইন ডেভলপার নিয়ে অনেকেই গুগল এবং অন্যান্য মাধ্যমে সার্চ করেন। এই ভবিষ্যত প্রযুক্তিও ২০২২ সালে সবচেয়ে বেশি চর্চিতা প্রযুক্তির মধ্যে একটি।
আরও পড়ুন : মদ খেলে স্টার্ট হবে না বাইক! বিশেষ প্রযুক্তির হেলমেট তৈরি করল ছাত্ররা
Nothing Phone 1
গ্যাজেট ক্যাটাগরির মধ্যে যে ডিভাইজটি সবচেয়ে বেশি ট্রেন্ড করেছে এ বছর তা হল নাথিং ফোন ওয়ান (Nothing Phone 1)। স্বাভাবিক স্মার্টফোনের তুলনায় একেবারেই আলাদা। খুবই স্বচ্ছ ডিজাইন এটির। এই স্মার্টফোনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল এটির ব্যাক প্যানেলে বিভিন্ন পার্টস আপনি নিজের চোখে দেখতে পারবেন। চলতি বছর মার্চ মাসে এই স্মার্টফোনটি লঞ্চ করা হয়। ভারতেও এই স্মার্টফোনটি উপলব্ধ। গ্যাজেট তথা প্রযুক্তির দুনিয়ায় দারুন চর্চায় রয়েছে এই স্মার্টফোন।
উপরোক্ত ৫ প্রযুক্তি ও গ্যাজেট ছাড়াও এই বছর দারুন চর্চায় ছিল ওপেন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স, এজ কম্পিউটিং, মেশিন লার্নিং, কোয়ান্টাম কম্পিউটিং, ৫জি নেটওয়ার্ক, ন্যাচারাল ফেস রিটাচ এর মতো অভাবনীয় সব প্রযুক্তি।