।। প্রথম কলকাতা ।।
আপাদমস্তক প্রযুক্তিতে মোড়া গোটা ছবি Avatar : The Way of Water। হলিউডের বিখ্যাত পরিচালক জেমস ক্যামেরুনের (James Cameron) নতুন ছবি। ২০০৯ সালে এসেছিলো অবতার ছবির প্রথম পার্ট। সেখানেও ব্যবহার হয়েছিল আধুনিক প্রযুক্তি। ১৩ বছর পর মুক্তি পাওয়া অবতারের দ্বিতীয় পার্টেও রয়েছে অবিশ্বাস্য প্রযুক্তির সম্ভার। দেখলে মনেই হবে না যে গোটা ছবি শুটিং হয়েছে কম্পিউটার জেনারেটেড ওয়াটারে (CGI Water)। সাধারণত হলিউডের ছবি মানেই ফাটাফাটি সব VFX এর খেলা। এমনকি খোদ জেমস ক্যামেরুনও তাঁর Terminator ও The Abyss ছবিতে দুর্দান্ত অ্যানিমেশন ও ভিজুয়াল এফেক্টের ব্যবহার করেছিলেন।
তবে অবতারের দ্বিতীয় পার্টে নতুন মাত্রা যোগ করেছে আধুনিক CGI (কম্পিউটার জেনারেট ইমেজারি) প্রযুক্তি। অনেকেই জানেন না, ১৯৯৪ সালেই অবতারের চিত্রনাট্য তৈরি করে ফেলেছিলেন জেমস ক্যামেরুন। কিন্তু তার পরিকল্পিত মোশন টেকনোলোজি তখন অতটা আধুনিক হয়নি। ২০০৫ সালে মোশন প্রযুক্তি অনেকটা আধুনিক হলে তিনি এই ছবির শুটিং শুরু করেন।
আরও পড়ুন : মসিহা যখন প্রযুক্তি! iPhone ক্র্যাশ ডিটেকসন ফিচার প্রাণ বাঁচালো আরও এক মহিলার
অবতার দ্বিতীয় পার্টে নজর কেড়েছে ক্যামেরা রিগ
জানা গিয়েছে, জেমস ক্যামেরুন অবতারের জন্য একটি ক্যামেরা রিগ প্রযুক্তি ব্যবহার করেন। এখানে কলা-কুশলীদের মাথায় ক্যামেরা সংযুক্ত করা হয়। যার ফলে ছবিতে অভিনেতাদের অনেক রিয়েল দেখা যায়। প্রতিটি দৃশ্য ও তাদের অভিব্যক্তি আরও ভালো ভাবে ফুটিয়ে তোলা যায় দর্শকদের সামনে। এই প্রযুক্তি তাঁর সিনেমাটোগ্রাফিকে এক অন্য মাত্রায় পৌঁছে দিয়েছে। অবশ্যই প্রযুক্তির পাশাপাশি তাঁর যে পরিচালনার দক্ষতার তাও যেন পর্দা ঠুকরে বেরিয়ে এসেছে অবতার ছবির মাধ্যমে।
আরও পড়ুন : অবশেষে আসছে Twitter ব্লু টিক সাবস্ক্রিপশন! ভেরিফায়েড ব্যাজ পেতে কত খরচ করতে হবে?
জেমস ক্যামেরুন ও জল
এই পরিচালকের বহু ছবি রয়েছে যার পটভূমি জল। উদাহরণস্বরূপ – ১৯৮৯ সালের The Abyss, ১৯৯৭ সালের Titanic এবং ২০২২ সালের Avatar : The Way Of Water। তবে তাঁর সাম্প্রতিক ছবি জলের গোটা সংজ্ঞাই বদলে দিয়েছে। ছবির সিংহভাগ শুটিং হয়েছে জলের নিচেই। এর জন্য অভিনেতাদের হেড রিগ ক্যামেরা ব্যবহার করতে হয়েছে, লেগেছে আন্ডারওয়াটার মোশন প্রযুক্তির সাহায্যও।
আরও পড়ুন : Maruti-র গাড়ি নাকি দেশলাই বাক্স! ক্র্যাশ টেস্টে 1 স্টার পেতেই প্রতিক্রিয়া নেটাগরিকদের
ম্যান মেড পুকুরে শুটিং ও কম্পিউটার ইমেজারি
জানা যায়, ছবির শুটিং হয়েছে ছবির প্রযোজক জন ল্যান্ডউ এর বাড়ির একটি সুইমিং পুলে। এখানে একটি পারফরম্যান্স ক্যাপচার ট্যাঙ্ক তৈরি করা হয়েছিল। ট্যাঙ্কটি ৩২ ফুট গভীর ছিল এবং প্রায় ৯০,০০০ গ্যালন জল ধারণ করেছিল। (এখানে বলে রাখি, টাইটানিকে এর জন্য নির্মিত সামুদ্রিক জলের ট্যাঙ্কে ১৭ মিলিয়ন গ্যালন জল ছিল)। এই পুলে তৈরি করা হয়েছিল জানলা, যেখান থেকে ছবির কর্মীরা ক্যামেরা অপারেট করার সুযোগ পেত। এই শুটিংয়ের সময় ব্যবহৃত কম্পিউটার ইমেজারির ফলেই অভিনেতা ও কলাকুশলীদের সম্পূর্ণ রিয়েল মনে হয়েছে ছবিতে।
অবতার ছবির সাফল্য
অবতার ছবির প্রথম পার্ট বিশ্বজুড়ে ২.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার উপার্জন করেছে। এটি বিশ্বের সর্বোচ্চ আয় করা ছবির মধ্যে একটি। অবতারের দ্বিতীয় পার্ট অর্থাৎ Avatar : The Way of Water এর বিশ্বজুড়ে বক্স অফিস কালেকশন (Box Office Collection) এখনও অবধি ১২৪ মিলিয়ন অতিক্রম করে ফেলেছে। এই ছবির পরবর্তী পার্টও আসবে বলে জানিয়েছেন পরিচালক। যেখানে প্যান্ডোরা (Pandora) এবং অবতারের ইউনিভার্স আরও বড় করে ফুটিয়ে তোলা হবে।