।। প্রথম কলকাতা ।।
Acne Myth: প্রতিটি মেয়ের কাছেই খানিকটা দুঃস্বপ্নের মত হল মুখে অ্যাকনে প্রবলেম বা ব্রণর প্রবলেম। যখন মুখে ব্রণ ওঠে তখন যার কাছ থেকে আমরা যেমন তথ্য পায়, একবার না একবার সেটা অবশ্যই ট্রাই করে দেখি। এই করতে গিয়ে এমন কিছু প্রচলিত বিশ্বাস আমাদের মনের মধ্যে খুঁটি গেড়ে বসে যা বছরের পর বছর থেকেই যায়। যেমন ধরুন ব্রণ প্রসঙ্গে বেশিরভাগ মানুষেরই ধারণা শুধুমাত্র এটা টিন এজারদের প্রবলেম। আবার অনেকেই মনে করেন অ্যাকনে প্রণ স্কিনে কোন ময়েশ্চারাইজারের দরকার হয় না। এইগুলি যদি আপনিও কোন সময় বিশ্বাস করে থাকেন তবে বড় ভুল করেছেন।
আজকের প্রতিবেদনে প্রচলিত কিছু অ্যাকনে মিথ নিয়ে আলোচনা করা হল। যা আপনার মন থেকে ভ্রান্ত ধারণা গুলি দূর করতে সাহায্য করবে। কিছু কমন প্রচলিত অ্যাকনে মিথ হল –
* অ্যাকনে প্রণ স্কিনের জন্য ময়েশ্চারাইজার প্রয়োজন হয় না
ড্রাই, অয়েলি কম্বাইন্ড সবরকম স্কিনের জন্য যখন ময়েশ্চারাইজার প্রয়োজন হয় তখন অ্যাকনে প্রণ স্কিনের মানুষ কেন ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারবেন না ? প্রশ্ন ওঠার স্বাভাবিক। এই তথ্য একেবারেই ভুল। মশ্চারাইজার ব্যবহার করা হয় স্কিনের ন্যাচারাল অয়েলের ভারসাম্য রক্ষা করার জন্য। এতে স্কিন দেখতে লাগে আরও ফ্রেশ, আরও ইয়ং এবং পাম্পিং। যদি অ্যাকনের সমস্যা হচ্ছে বলে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা বন্ধ করে দেওয়া হয় তবে স্কিন অতিরিক্ত ড্রাই কিংবা অতিরিক্ত অয়েলি হয়ে গিয়ে আরও বেশি ব্রণর সমস্যা দেখা দিতে পারে।
* অ্যাকনে শুধুমাত্র টিন এজারদের সমস্যা
এটা সত্যি যে প্রায় ৮৫% টিন এজাররাই অ্যাকনের সমস্যায় ভোগেন। একটি গবেষণাতে এই তথ্যই উঠে এসেছে। কিন্তু তাই বলে যে শুধুমাত্র ব্রণ টিন এজারদের হয় এমন ধারণা মনে পোষন করা উচিত নয়। কারণ এটা সম্পূর্ণ সঠিক নয়। বর্তমানে দেখা গিয়েছে ৩০-৪০ এমন কি ৫০ বছর বয়সি মহিলাদের মুখেও ব্রণ হচ্ছে। এছাড়াও প্রেগনেন্সির সময় মহিলাদের হরমোনাল চেঞ্জ এর কারনে ব্রণ দেখা দেয়। মেনোপজের কারণেও অনেক সময় ব্রণ হয়ে থাকে। কাজেই বিষয়টি একেবারেই স্পষ্ট যে ব্রণ শুধুমাত্র টিন এজারদের সমস্যা নয়।
* ব্রণ কমাতে হলে স্কিনের ন্যাচারাল অয়েল রিমুভ করতে হবে
অনেকেই মনে করেন এই ন্যাচারাল অয়েলের জন্যই ব্রণ সৃষ্টি হয় আমাদের মুখে। তাই যদি মুখের ন্যাচারাল অয়েলটাকেই কমিয়ে দেওয়া যায় তবে ব্রণ সমস্যা একেবারে মিটে যাবে। কিন্তু এই কাজটি করতে গেলে বরং আরও বেশি সমস্যা সৃষ্টি হবে। কারণ ন্যাচারাল অয়েল আমাদের স্কিনকে রক্ষা করে। তাই এটি যদি রিমুভ করে দেওয়া হয় তবে ব্যাড ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ বাড়বে। স্কিনের পি এইচ এর ভারসাম্য থাকবে না এবং আরও বেশি ব্রণর সমস্যা দেখা দেবে।
* লেবুর রস, রসুন আর টুথপেস্ট মাখলেই ব্রণ কমে যায়
লেবুর রস এবং রসুনের মধ্যে যে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল উপাদান রয়েছে তা অস্বীকার করার জায়গা নেই। কিন্তু এটা যদি ব্রণের উপরে লাগানো হয় তবে স্কিনে লালচে ভাব সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল থাকে। এছাড়াও টুথপেস্ট এর মধ্যে বেকিং সোডা সহ বিভিন্ন ধরনের উপাদান থাকে যা আমাদের ত্বকের জন্যে উপকারী নয়। সে ক্ষেত্রে মুখের কোষ গুলি নষ্ট হয়ে যেতে পারে । তাই পিম্পল কমানোর জন্য অন্তত লেবুর, রসুন আর টুথপেস্টের মিশ্রণ বিশেষ কাজে আসে না।
* কোষ্ঠকাঠিন্য হলেই অ্যাকনে হয়
এটা সবথেকে বেশি প্রচলিত ধারণা যে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় কেউ ভুগছে মানেই তাঁর অ্যাকনে হবে কিংবা কারও মুখে ব্রণ হয়েছে মানেই সে কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছে। এর কিন্তু কোন বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দেখা দিলে শরীরে উদ্বেগ বেড়ে যায়। যার কারণে হরমোন নিঃসরণের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এর ফলে ব্রণ হতে পারে । কিন্তু ব্রণ হওয়ার সঙ্গে সরাসরি কোষ্ঠকাঠিন্যের কোন সম্পর্ক নেই। তাই নিজের খাদ্য তালিকা বাছাইয়ের সময় অবশ্যই বিষয়গুলি মাথায় রাখতে হবে।
* ব্রণ একাই ঠিক হয়ে যায়
অনেকেরই ধারণা মুখে ব্রণ যেমন একাই হয় তেমন সেটা একাই সেরে যায়। কিন্তু এটা ভেবে বসে থাকলে বরং আরো বেশি সমস্যা সৃষ্টি হবে। যেটা সমস্যা হিসেবে তৈরি হয়েছে তার সমাধানের নিশ্চয় কোন উপায় রয়েছে। তাই সময় নষ্ট না করে অবশ্যই ডার্মাটোলজিস্টের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত। এছাড়াও রেগুলার স্কিন কেয়ারের মধ্যে থাকতে হবে। স্কিনের মধ্যে যদি নোংরা জমে তবে ব্রণর সমস্যা আরও দ্বিগুণ হয়ে যেতে পারে।
এই ধরনের প্রচলিত বিশ্বাস বহু মানুষের মধ্যেই রয়েছে। তবে কোন কিছু বিশ্বাস করার আগে অবশ্যই তা যাচাই করে নেওয়া উচিত। অন্ততপক্ষে একবার চিকিৎসকের সঙ্গে এই বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করে নেওয়া উচিত। নিজের স্কিনকে অ্যাকনে মুক্ত করতে গেলে আপনাকেও বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে। খাদ্যাভ্যাসে যেমন পরিবর্তন আনতে হবে তেমনি জীবন ধারাতেও পরিবর্তন আনতে হবে। এছাড়াও রেগুলার স্কিন কেয়ার রুটিন মেনে চলতে হবে। এইসবের পরেও চিকিৎসকের পরামর্শ সর্বোপরি।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম