।। প্রথম কলকাতা ।।
Indians Not Sleeping Well: ঘুম নেই ভারতীয়দের চোখে। অনিদ্রায় ভুগছেন দেশের প্রায় ১০ কোটি মানুষ। ভয়ঙ্কর তথ্য দিল দিল্লি এইমস। এ কোনও মহামারির চেয়ে কম নয়। কীভাবে ফিরবে নিশ্চিন্তের ঘুম? চিকিৎসকরা বাতলে দিচ্ছেন উপায়। আপনিও কি অনিদ্রা রোগে ভুগছেন?
এ এক এমন রোগ, যা নিয়ে কোনও হইহই নেই, চেঁচামেচি নেই। একদম নিঃশ্বব্দেই গোটা দেশজুড়ে ঘটে যাচ্ছে এক বিরাট মহামারি। অথচ সেটা নিয়ে একেবারেই মাথা ঘামাচ্ছিনা আমরা। তবে বিশেষজ্ঞরা কিন্তু সেটা একেবারেই অগ্রাহ্য করছেন না। বরং বারবার সাবধান করছেন আমাদের। অনিদ্রার এই রোগ যে কী ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করতে পারে, তা আমরা ধারণাও করতে পারছিনা।
তবে এই ঘটনা যে কেবল ভারতেই, তা কিন্তু নয়। বলা ভালো গোটা বিশ্বের মানুষ এখন এই অনিদ্রা রোগের শিকার। দিল্লি এইমসের ২০২৩ সালের সমীক্ষা বলছে, ভারতের অন্তত সাড়ে দশ কোটি মানুষ এখন ঘুমের সমস্যায় জর্জরিত। অথচ এর বেশিরভাগই এই স্লিপ ডিসঅর্ডারের ক্ষতিকর দিকগুলি নিয়ে সচেতন নন। কেবলমাত্র পর্যাপ্ত পরিমাণে না ঘুমানোর জন্য মারাত্মক সব রোগ বাসা বাঁধছে আমাদের শরীরে।
আপনি জেনে অবাক হবেন যে, পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়ার কারণে মানুষের ভাবনা চিন্তা অবধি লোপ পেতে পারে। গ্যাস, অম্বল, অ্যাসিডিটি তো বটেই বহু দূরারোগ্য ব্যাধিও বাসা বাঁধতে পারে আমাদের শরীরে। শরীরের মেটাবোলিজম পাওয়ার কমে গিয়ে তরতরিয়ে বাড়বে ওজন। অল্প বয়সেই উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিসের মত সমস্যা তো আসতেই পারে।
কিন্তু ঠিক কোন কারণে এই বিপুল সংখ্যক মানুষ অনিদ্রা রোগে ভুগছে?
এর একটা বড় কারণ হিসেবে চিকিৎসকরা বলছেন আমাদের আধুনিক লাইফস্টাইলের কথা। সরকারি অফিস হোক বেসরকারি, এখন সব জায়গাতেই কাজ হয় ল্যাপটপ বা ডেস্কটপেই। সারাটাক্ষণ ঐ স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকা মারাত্মক ক্ষতিকর। এছাড়া যাদের ডিউটি শিফটিং-এ চলে, সেইসব মানুষের তো ঘুমানোর নির্দিষ্ট কোনও রুটিনই নেই। এই অনিয়মিত স্লিপ সাইকেল থেকেই শুরু হচ্ছে অনিদ্রা রোগ। তাছাড়া ঘুমের আগে চা, কফি খাওয়ার অভ্যাস বা মুভি ওয়েব সিরিজ দেখার অভ্যাসটাও কিন্তু মোটেও ভালো না। চা বা কফি ব্রেনকে সজাগ করে তোলে। পাশাপাশি কাজের চাপ, পারিবারিক টেনশন ইত্যাদি তো আছেই। আর এইসব নানা কারণে মানুষের দু চোখের পাতা থেকে উধাও হয়েছে ঘুম।
এখন গল্প হচ্ছে, যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে টেকনোলজি থেকে মুখ ফেরালে তো চলবেনা। তবে তার মাঝেও ভালো ঘুম পেতে হলে এই কয়েকটি জিনিস আপনি করতেই পারেন।
ঘুমের অন্তত ৩ ঘন্টা আগে থেকে চা, কফি জাতীয় পানীয় একেবারেই খাবেন না।
চেষ্টা করুন ঘর অন্ধকার করে ঘুমাতে।
ঘুমানোর আগে মোবাইল, ল্যাপটপ, টিভি ইত্যাদি থেকে দূরে থাকুন।
সারা দিনে অন্তত ৩০ মিনিট এক্সারসাইজ করুন।
চেষ্টা করুন রাতের খাবার তাড়াতাড়ি খাওয়ার।
ম্যাগনেসিয়ামযুক্ত খাবার কিন্তু অনেকটাই হেল্প করে।
রোজকার মেনুতে রাখুন মেলাটোনিনযুক্ত খাবার। টমেটো, শসা, ব্রোকোলি, সরিষা, আখরোট, বেদানা ইত্যাদিতে মেলাটোনিন থাকে। অনিদ্রা দূর করতে গরম দুধের কোনো বিকল্প নেই।
চিকিৎসকরা বলছেন, এই কয়েকটি উপায় মেনে চললে অনেকটাই রেহাই মিলবে। মাথায় রাখবেন আমাদের দৈহিক কার্যকলাপের প্রায় সবটাই ঘুমের উপর নির্ভরশীল। এবং একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দিনে ৭ থেকে ৯ ঘন্টা কিন্তু ভিষনভাবে জরুরি। তাই মোটেও অবহেলা নয়। এমনকি প্রয়োজন পড়লে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম