।। প্রথম কলকাতা ।।
Benefits of Writing Diary: কতগুলি টুকরো কাগজে বাঁধানো একটা ডায়েরি আপনার কাছে আশীর্বাদ হিসেবে প্রমাণিত হতে পারে। আজকের ব্যস্ত দিনে কারও কাছে অন্যের ভালো মন্দ শোনার মত বিশেষ সময় থাকে না। সকলেই নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত। নিজেদের সমস্যায় জর্জরিত। সেই জায়গায় কখনও মনে হতেই পারে আপনি কথা বলার মানুষ পাচ্ছেন না। আশেপাশে অনেকেই রয়েছে কিন্তু তারপরেও একটা নিঃসঙ্গতা ঘিরে ধরছে আপনাকে। সেই সময় আপনার সব থেকে ভালো বন্ধু হয়ে উঠতে পারে কাগজ কলম।
নিজের মনের কথা যেটা কাউকে বলতে চেয়েও বলতে পারছেন না সেটা লিখে ফেলুন ডায়েরির পাতায় হয়তো হতে পারে সেই ডায়েরি জায়গা করে নেবে আপনার আলমারির একদম ওপরের সেল্ফে কিংবা ড্রয়ারের এক কোণে। এই ডায়েরি লেখা কিন্তু আপনার একেবারে নিজের সময়। নিজের সাথে কিছুটা সময় কাটানোর জন্য, নিজেকে আরও ভালোভাবে বোঝার জন্য আজ থেকে শুরু করুন ডায়েরি লিখন। এই ডায়েরি লেখার অভ্যাস কতটা ইতিবাচক, ব্যক্তিগত দিক থেকে এই অভ্যাস কতটা সাহায্য করবে আপনাকে সেই সংক্রান্ত কিছু তথ্য রয়েছে আজকের প্রতিবেদনে।
* মানসিক চাপ কমে : এমন অনেক কথাই রয়েছে যা কাউকে বলা যায় না। আবার এমন কিছু কথাও থাকে যেটা আপনি বলতে চান কিন্তু নয় শোনার মত মানুষ নেই, নয় ভরসাযোগ্য মানুষের অভাব। তাই নিজের সঙ্গেই কথা বলুন। আপনি ডায়েরি লিখছেন মানে আপনার দোষ গুণ ভালো খারাপ সবটা স্বীকার করছেন। নিজের সাথে নিজে কথা বলছেন। তাই মনোবিদরাও বলেন মনের কথা মনে চেপে রেখে উদ্বেগ সৃষ্টি করার থেকে সেগুলিকে কাগজে ফুটিয়ে তোলা অনেক ভালো। তাতে মানসিক চাপ কমবে বেশ খানিকটা।
* আত্মশুদ্ধির সুযোগ : মানুষ মাত্রই ভুল হয়। কেউ এমন নেই যে বলতে পারবেন তাঁর জীবনে কখনও ভুল করেননি। কিছু কিছু কাজ আমরা একেবারে নিজেদের অজান্তেই করে ফেলি। আবার কিছু কাজ করার পরে সেটা নিয়ে আমাদের ঠিক ভুলের ধারণা বিকশিত হয়। কাজেই আপনি নিজের নিয়মিত কর্মকাণ্ড যদি ডায়েরিতে লিখতে শুরু করেন তাহলেই বুঝতে পারবেন কোন কাজটা আপনার ঠিক হল আর কোন কাজটা করা হল ভুল। নিজের ভুল নিজে খুঁজে বের করে তা শুধরে নেওয়া কিন্তু বিশাল বড় গুণ। আর এটা যদি করতে পারেন তাহলে অবশ্যই আত্মতুষ্টি হবে।
* স্মরণশক্তি বাড়ে : একটা কথা কখনও চিন্তা করে দেখেছেন ? এক সময় টেলিফোনের নাম্বার এবং একেবারে প্রথম দিকে মোবাইল ফোনের নাম্বার পর্যন্ত আমাদের ঠোঁটস্থ থাকতো। কিন্তু এখন বিজ্ঞান প্রযুক্তির যুগে আমরা অনেক সময় পরিবারের সদস্যদের নাম্বার পর্যন্ত মনে রাখতে পারি না। সেই জায়গায় নিয়মিত ডায়েরি লিখলে আপনার প্রয়োজনীয় এবং জরুরী বিষয়গুলিও সেখানে লিপিবদ্ধ হচ্ছে। কাজেই ভুলে যাওয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। আর দিনলিপি লেখা মস্তিষ্কের ধারণ ক্ষমতা বাড়ায়, স্মৃতিশক্তিকে আরও তীক্ষ্ণ করতে সাহায্য করে।
* হাতের লেখা ভালো হয় : ছাত্র জীবন শেষ হয়ে যাওয়ার পর আমাদের লেখার অভ্যাস ধীরে ধীরে কোথায় যেন হারিয়ে যায়। কেউ যদি লেখালেখির সঙ্গে জড়িত থাকেন তিনি হয়তো কাগজ-কলম এর সঙ্গেও সম্পর্ক রাখেন। কিন্তু অন্যান্যরা কম্পিউটারের এমএস ওয়ার্ড আর মোবাইলের কিবোর্ডেই সীমাবদ্ধ থাকে। সে ক্ষেত্রে নিয়মিত ডায়েরি লিখলে প্রথমত কাগজে-কলমে লেখার অভ্যাস হারিয়ে ফেলবেন না। দ্বিতীয়ত আপনার হাতের লেখা হবে একেবারে মন মত।
* নিজেকে গুছিয়ে নেওয়ার সুযোগ : এখন প্রত্যেকেই একটা ইঁদুর দৌড়ে দৌড়াচ্ছেন। কেউ পড়াশোনার জন্য, কেউ চাকরির জন্য, কেউ ব্যবসার জন্য আবার কেউ পরিবারকে ভালো রাখার উদ্দেশ্যে। যার কারণে অনেকেই নিজেকে বড্ড অগোছালো করে ফেলেছেন। ডায়েরিতে যদি প্রতিদিন রাতে শোবার আগে আপনি পরের দিন কী কী কাজ করতে চান কিংবা সেই দিন কী কী করলেন তা লিপিবদ্ধ করেন তবে নিজেকে সুসংগঠিত করার একটা সুযোগ থেকে যায়। আগের দিনের ভুল ত্রুটি এড়িয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। পরের দিনের জীবনকে বেশ খানিকটা গুছিয়ে নেওয়া যায় ডায়েরির পাতাতেই।
এক কথায় বলতে গেলে নিজেকে সময় দেওয়া সব থেকে বেশি প্রয়োজন। নিজের কথা শোনা আরও বেশি প্রয়োজন। তাই অন্যের উপর নির্ভরশীল না হয়ে আজ থেকেই শুরু করুন ডায়েরি লেখা। নিয়মিত ডায়েরি লেখার অভ্যাস আপনার জীবন অনেকখানি বদলে দিতে সাহায্য করবে। কোন দিন আপনার অজান্তেই ডায়েরি হয়ে উঠবে সব থেকে কাছের বন্ধু, ভরসার জায়গা।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম