Madhya Pradesh Temple: এই মন্দিরে পুজো দেয় ৮০০ বছরের প্রেতাত্মারা! রয়েছে গায়ে কাঁটা দেওয়া রহস্য

।। প্রথম কলকাতা ।।

Madhya Pradesh Temple: ৮০০ বছর ধরে এই মন্দিরের পুজো দিয়ে যায় প্রেতাত্মারা। মৃত্যুর পরেও ভক্তরা অমর হয়ে রয়েছেন। তারাই প্রতিদিন দেবী মায়ের আরাধনা করেন। সূর্যের আলো ফোটার আগে চারিদিকে যখন জনপ্রানীর চিহ্ন থাকে না, তখন সেই প্রেতাত্মারা মায়ের পুজো দিয়ে যান। মায়ের পায়ে নিবেদন করেন টাটকা ফুল। এই কথা শুনে অনেকেই বিশ্বাস করতে চান না। যারা অবিশ্বাস করে এই মন্দিরে গিয়েছিলেন, রাতারাতি তাদের সমস্ত সংকোচ দূর করেছেন মা শারদা। রহস্যে মোড়া এই মন্দির রয়েছে মধ্যপ্রদেশে। মাইহার শহরে এই মন্দিরকে ঘিরে রয়েছে এমন কিংবদন্তি যা মানুষকে সত্যি আশ্চর্য করে। শারদা মাতা মন্দিরে পৌঁছাতে আপনাকে পেরোতে হবে, প্রায় হাজারের বেশি সিঁড়ি। এছাড়াও রয়েছে রোপওয়ে।

আজও প্রতিদিন ভোরবেলায় এই মন্দিরে পুজো দিয়ে যায় ৮০০ বছরের পুরনো আত্মা। প্রতিদিন সকালে দরজা খোলার পরেই দেখা যায় দেবীর পায়ের কাছে পড়ে রয়েছে টাটকা ফুল, মালা। শত শত বছর ধরে মানুষ বিশ্বাস করে আসছে, অমর ভক্তের আত্মা এই ভাবেই মাকে লুকিয়ে পুজো দিয়ে যান। সেই আত্মাকে কেউ দেখতে পান না। কিন্তু পুজোর ফুলকে সবাই দেখতে পান।

কোন মা তার সন্তানের ধর্ম, বর্ণ, গোত্র বিচার করেন না। কোন সন্তান যদি তাকে ছেড়ে চলে যান তিনি আশায় বুক বেঁধে থাকেন। অপেক্ষা করেন। আশা করেন, তার সন্তান তার কাছে একদিন ঠিক ফিরে আসবে। কিন্তু মৃত্যুর বাঁধন উপেক্ষা করে সন্তান কি আদৌ ফিরে আসে? এই মনুষ্যজগৎ হল এক অদ্ভুত লীলা ভূমি। এখানে অদ্ভুত সব নিয়মও বাস্তবিক ভাবে মিলে যায়। কথিত আছে, প্রতি ব্রাহ্ম মুহূর্তে মধ্যপ্রদেশের মাইহারে শারদা মাতার মন্দিরে সমবেত হন মৃত সন্তানরা। মা সতী আর দক্ষ যজ্ঞের কথা সবাই জানেন। বিষ্ণুর সুদর্শন চক্রে ছিন্ন ভিন্ন হয়ে সতীর শরীরে এক একটি অংশ যেখানে পড়েছিল সেখানেই তৈরি হয় শক্তিপীঠ। এরকম রয়েছে মোট ৫১ টি শক্তি পীঠ। যার মধ্যে একটি শারদা মায়ের মন্দির। পুরাণ অনুযায়ী, মায়ের কণ্ঠ হার পড়েছিল এই মাইহারে। তারপর থেকেই মাইহারে মা সারদা দেবী হিসেবে বিরাজমান। তার সাথে রয়েছে শিবের রূপ। আশ্চর্যের বিষয় হল, এই মন্দিরের গেলে একটি প্রস্তর ফলক দেখতে পাবেন। যেখানে খোদাই করা রয়েছে দুই বীর যোদ্ধার নাম। এই দুই যোদ্ধা দুই ভাই। একজনের নাম আলহা আর অপরজন উদল। মধ্যপ্রদেশের (MadhyaPradesh) মানুষ আজও এই দুই বীর ভাইয়ের কথা মনে রেখেছে। এক সময় পৃথ্বীরাজ চৌহানের মত দুর্ধর্ষ যোদ্ধাও এই দুই ভাইয়ের কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। কথিত আছে আলাহ আর উদলের পরাক্রমশালী শক্তির উৎস দেবী শারদা। তারা যখনই যুদ্ধে যেতেন তখনই দেবীর পুজো করতেন। বিশেষ করে আলহা ছিল দেবীর একনিষ্ঠ ভক্ত। তিনি দেবীর বরে টানা ১২ বছর সবার ধরা ছোঁয়ার বাইরে চলে গেছিলেন। তাকে কেউ আঘাত করতে পারত না। পৃথিবীর কালের নিয়মে মৃত্যু হয় আলাহ আর উদলের। কিন্তু তাদের আত্মা শারদা মায়ের মন্দির ছেড়ে যেতে পারেনি। তাই তারা আজও ব্রাহ্ম মুহূর্তে যখন চারিদিকে কেউ থাকে না তখন মন্দিরে এসে পুজো দিয়ে যান। ঠিক যেমনটা করতেন বেঁচে থাকাকালীন।

এই মন্দিরের দরজা রাত ২ টো থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত বন্ধ থাকে। এই সময় মন্দিরে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। এমনকি পুরোহিতরাও মন্দিরের বাইরে থাকেন। মন্দিরটি রয়েছে চিত্রকুট পর্বতের পাদদেশে। মন্দিরের কাছেই রয়েছে একটি হ্রদ, যার নাম আলহা কুণ্ডু। এর জলে দুই ভাই স্নান সেরে নাকি মন্দিরে মায়ের পুজো করেন। সূর্যের আলো ফুটতে না ফুটতেই ফিরে যান প্রেতলোকে। এই মন্দির ঘিরে রয়েছে নানান লোককথা আর গা ছমছমে কাহিনী। শোনা যায়, একবার কিছু পুরোহিত জোর করে এই রহস্য উদ্ধারের চেষ্টা করেছিলেন। তারা চেয়েছিলেন চুপিসারে মন্দিরে কারা পুজো দিয়ে যান তাদেরকে দেখবেন। তাই লুকিয়ে ছিলেন মন্দিরের গর্ভে। সকাল না হতে হতেই তাদের রক্তাক্ত দেহ পাওয়া গিয়েছিল মন্দিরে। সেখান থেকে আজও ওই সময় মন্দিরে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না। শারদা মায়ের মন্দিরকে ঘিরে গড়ে ওঠা কিংবদন্তীর সঙ্গে বৈজ্ঞানিক কোনো যুক্তি নেই। তবে আজও বহু মানুষ প্রতিবছর এখানে ভিড় করেন। আপনিও যদি এই গা ছমছমে রহস্যের স্বাদ পেতে চান তাহলে যেতে পারেন মধ্যপ্রদেশে।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version