Miscarriage: বারে বারে মিসক্যারেজ? আতঙ্কিত না হয়ে দেখুন

।। প্রথম কলকাতা ।।

 

 

Miscarriage: আজকের দিনে ‘মিসক্যারেজ’ একটা বড় চিন্তার বিষয়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে ঠিক কেন হচ্ছে মিসক্যারেজ? কীসের খামতি থেকে যাচ্ছে মায়েদের শরীরে? গর্ভের সন্তানকে সুরক্ষিত রাখতে হবু মায়েদের ঠিক কী কী প্রিকোশন নেওয়া উচিত? এই বিষয়ে চিকিৎসকদের পরামর্শ কী? পরিসংখ্যান বলছে, অন্তত ১০-১৫ শতাংশ মায়েরাই এই সমস্যায় ভোগেন। বিষয়টা বুঝতে গেলে চিকিৎসা বিজ্ঞানকে একটু জানতে হবে আমাদের। আর সেটার জন্য প্রতিটি তথ্যকে মন দিয়ে শুনতে হবে আপনাকে।

 

চিকিৎসকরা বলছেন, প্রেগন্যান্সির প্রথম ট্রাইমেস্টার বা প্রথম ১২ সপ্তাহ সবচেয়ে বেশি সেনসিটিভ হয়। সাধারণত এই সময়টাতেই মিসক্যারেজ বেশি হয়ে থাকে। আবার অনেক সময় দেখা যায়, ইউরিন টেস্ট হয়ত পজিটিভ কিন্তু আল্ট্রাসোনোগ্রাফি টেস্টে কিছুই ধরা পড়ছেনা। যেটাকে ডাক্তারি ভাষায় বলা হয় আর্লি মিসক্যারেজ। চিকিৎসা বিজ্ঞান বলছে, এর কারণ হতে পারে ক্রোমোজোমের গণ্ডগোল। এছাড়াও মায়ের সুগার, হাই প্রেশার বা থাইরয়েডও এর একটা কারণ হতে পারে। জরায়ুতে ইনফেকশনের বিষয়টাকেও উড়িয়ে দিচ্ছেননা চিকিৎসকরা।

 

তবে মিসক্যারেজ যদি ২৮ সপ্তাহের মধ্যে হয় এবং তা যদি বারে বারে হয় তাহলে সমস্যা আরও গভীরে। সেক্ষেত্রে চলে আসে জেনেটিক ডিসর্ডারের তত্ব। এই পর্যায়ে চিকিৎসকরা সাধারণত সোনোগ্রাফি, কিছু রক্ত পরীক্ষা এবং ক্ষেত্রবিশেষে এক্সরে বা এন্ডোস্কোপি করে থাকেন। তাতেও সমস্যা ধরা না পড়লে ক্রোমোজোমাল ডিফেক্ট আছে কি না তা খোঁজার চেষ্টা করা হয়।

 

তবে সমস্যা যাই হোক না কেন, চিকিৎসকরা বলছেন এর চিকিৎসা আছে। শুধু প্রয়োজন, সঠিক সময়ে সঠিক ট্রিটমেন্ট। এমন অনেকেই আছেন যারা প্রথমবার মিসক্যারেজের কারণকে খতিয়ে দেখেন না। কোনও চিকিৎসা ছাড়াই দ্বিতীয়বার মা হওয়ার চেষ্টা করেন। আর তাতেই হয় হিতে বিপরীত। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, সমস্যা পূর্বের চেয়েও বেশি বেড়ে গেছে।

 

আবার মায়ের শরীরে পর্যাপ্ত পুষ্টি না থাকলেও মিসক্যারেজের মত সমস্যা দেখা যায়। এই সমস্যাটা বেশি দেখা যায় গ্রামীণ এলাকার মহিলাদের মধ্যে। সেক্ষেত্রে প্রেগন্যান্সির শুরুতেই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নেওয়া জরুরি। শরীর বুঝে যথাযথ সমাধান চিকিৎসকরাই বলে দেবেন। তবে চিকিৎসকরা যে বিষয়টায় সবচেয়ে বেশি জোর দিচ্ছেন তা হল, ডেইলি লাইফস্টাইল। সন্তানকে সুস্থভাবে ভূমিষ্ঠ করতে হবু মায়েদের নিজের শরীরের প্রতি নজর দেওয়াটা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। শরীরে কোনও ইনফেকশন বাসা বাঁধছে কি না? বা কোনও অবাঞ্ছিত অসুখ শরীরে এসে জুড়ে বসেছে কি না তা দেখা জরুরী।

 

মনে রাখবেন সন্তান শরীরে আসার পর নয়, তার আগেই থেকেই মায়েদের যত্ন নেওয়া উচিত। যথেচ্ছ পরিমাণ জল, পুষ্টিকর খাবার, মরশুমি ফল তো খেতেই হবে। সাথে ডায়েট থেকে বাদ দিতে হবে অতিরিক্ত মিষ্টি, চা, কফি, চিনি ইত্যাদি। কারণ মা সুস্থ থাকলেই বাচ্চা সুস্থ থাকবে যে।

 

তবে অনেকেই একটা মারাত্মক ভুল করে থাকেন। সেটা হল, গর্ভাবস্থায় সম্পূর্ণ বেডরেস্টে থাকা। যদি সত্যিই বেডরেস্ট প্রয়োজন হয় সেটা আপনার চিকিৎসক আপনাকে বলে দেবে। তবে সেরকমটা না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়েই হালকা ব্যায়াম করা উচিত। এতে যেমন শরীর ভালো থাকবে তেমন অ্যাংজাইটিও দূরে থাকবে। অ্যাংজাইটি থেকে মনে পড়ল, এই সময়টা হবু মায়ের পাশাপাশি হবু বাবাদেরও সতর্ক থাকতে হয়। স্ত্রীর কোনও সমস্যা হচ্ছে কি না সেই খবরটা স্বামীরই রাখা উচিত। এতে মায়েরা মোরাল সাপোর্ট পায় এবং মানসিকভাবে খুশি থাকেন।

 

এবার আসি চিকিৎসার কথায়, গর্ভাবস্থার একদম শুরুর দিকে কিছু পরীক্ষা করা আবশ্যক। যেমন মায়ের অ্যানিমিয়া, হিমোগ্লোবিনের মাত্রা, আয়রন ইত্যাদি। এছাড়াও নিয়মিত সুগার, প্রেশার এবং থাইরয়েড চেক করাটাও জরুরী। সাধারণত প্রেগন্যান্সির ১১ থেকে ১৩ সপ্তাহের মধ্যে নিউকাল থিকনেস এবং ডবল মার্কার টেস্ট করা হয়। এতে ভ্রুণের ক্রোমোজোমে কোনও সমস্যা আছে কি না তা বোঝা যায়। ২১ নম্বর ক্রোমোজোমে কোনও সমস্যা থাকলে ডাউন সিন্ড্রোমের আশঙ্কা থাকে। সর্বোপরি একটাই কথা বলব, প্রেগন্যান্সির আগে প্ল্যান করুন। পরামর্শ নিন চিকিৎসকদের। কারণ যাকে পৃথিবীতে আনছেন তাকে সুস্থ রাখার দায়িত্বটাও কিন্তু আপনারই।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version