Ker Puja: কের পুজোর গণ্ডিতে নেই জন্ম-মৃত্যু, বহু প্রাচীন ত্রিপুরার এই পরম্পরা

।। প্রথম কলকাতা ।।

Ker Puja: প্রতিটি জনজাতির মধ্যেই ভিন্ন ভিন্ন রীতি নীতি প্রচলিত রয়েছে। তাঁরা তাদের বিশ্বাস এবং যুক্তি দিয়ে বছরের পর বছর সেগুলি পালন করে আসেন। সেই রকমই ত্রিপুরার একটি ঐতিহ্যবাহী উৎসব হল কের পুজো। এই পুজোর প্রচলন করেছিলেন ত্রিপুরার রাজারা। যুগ যুগ ধরে সেই পুজো একই রকম ভাবে চলে আসছে। তবে বর্তমানে সময়ের সাথে সেই পুজোতে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। কের পুজোর সমস্ত খরচ বহন করা হয় ত্রিপুরা সরকারের তরফ থেকে।

ত্রিপুরার আদি জনজাতির মানুষ কের পুজো করেন। তাদের বিশ্বাস এই পুজো মূলত রোগব্যাধি দূর করতে এবং শত্রুর কু-নজর থেকে তাদেরকে বাঁচাতে সাহায্য করে। সর্বপ্রথম রাজাদের আমলে রাজ কোষাগারে এই পুজো হতো। পরবর্তীতে পুরাতন আগরতলার চতুর্দশ দেবতা মন্দিরের পুজো শুরু করা হয়। এখনও সেখানেই প্রতিবছর কের পুজো হয়। চতুর্দশ দেবতা মন্দিরের বাৎসরিক উৎসব যা খার্চি উৎসব নামে পরিচিত সেটি সমাপ্ত হওয়ার এক সপ্তাহ পরে কের পুজোর আয়োজন শুরু হয়।

যিনি কের পুজো করেন তাকে বলা হয় চন্তাই। এক কথায় সেখানে পুরোহিত হলেন চন্তাই। এই কের পুজো মূলত একটা গণ্ডিকে কেন্দ্র করে হয়। পূর্বে আগরতলা শহর জুড়ে কের পুজোর গণ্ডি দেওয়া হত। গণ্ডি আঁকা সম্পূর্ণ হলে তবেই পুজো শুরু হতো। যারা একবার গণ্ডির মধ্যে প্রবেশ করতেন তাঁরা দুদিনের এই কের পুজো শেষ না হওয়া পর্যন্ত বাইরে বের হতে পারতেন না। কথিত রয়েছে , কের পুজোর এই গণ্ডির মধ্যে নাকি কোন মানুষের জন্মও হয় না এবং কোন মানুষের মৃত্যু আসে না । তাই এই গণ্ডির ভেতরে কখনও কোন গর্ভবতী মহিলা কিংবা অতি বৃদ্ধ মানুষকে আসতে দেওয়া হয় না।

আগে যখন শহরজুড়ে কের পুজোর গণ্ডি কাটা হতো তখন তাদেরকে আগেই শহরের বাইরে নিয়ে যাওয়া হতো। কিন্তু এখন এই পুজোর পরিসর অনেক ছোট করে দেওয়া হয়েছে। সামান্য জায়গা জুড়ে নির্দিষ্ট গণ্ডি এঁকে দেওয়া হয়। সেখানেই দুদিন ধরে চলে পুজো। এই পুজোর বেশ কিছু রীতিনীতি প্রচলিত রয়েছে । যেমন পুজো শুরুর আগের দিন এবং পুজোর দিন কোথাও কোনো বাড়িতে আগুন জ্বালানো হয় না। পুজোর আগুন জ্বালানো হয় শুকনো বাঁশের সঙ্গে বাঁশ ঘষে। এরপর সেই আগুন নিয়ে যাওয়া হয় বাড়িতে বাড়িতে। আগে যদিও বা প্রায় সব বাড়িতেই পুজোর আগুন নিয়ে যাওয়ার রীতি ছিল। কিন্তু এখন সব বাড়িতে না হলেও আগরতলার বেশ কিছু বাড়িতে আগুন নিয়ে যাওয়ার রীতি রয়েছে।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version