।। প্রথম কলকাতা ।।
Heat Stroke: কাঠফাটা রোদ, মাথায় গনগনে সূর্য। রাস্তায় হাঁটার সময় দুপুর রোদে যদি শরীর ঝিমঝিম করে, দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস পড়ে,কিংবা হার্ট রেট বেড়ে যায় একটু সাবধান। প্রচণ্ড পিপাসা পেলে কিংবা শরীর দুর্বল লাগলে বিষয়টা হালকা ভাবে নেবেন না। যদি দেখেন শরীরের তাপমাত্রা হঠাৎ করে বাড়ছে তাহলে দ্রুত ছায়ায় বসে পড়ুন। ঘাড়ে মাথায় জল দিন। না হলে ভয়ঙ্কর বিপদ। হতে পারে হিট স্ট্রোক। এর ফলে মৃত্যুও হতে পারে। এই হিট স্ট্রোক কী? কিভাবে বুঝবেন আপনার হিট স্ট্রোক হবে? হিট স্ট্রোক হলে বাঁচবেন কীভাবে?
তাপমাত্রা কোথাও ৪০ ডিগ্রি, কোথাও ৪০ ডিগ্রির বেশি। গরমে যেন ভাজা ভাজা হয়ে যাচ্ছে গোটা দেশ। গুমট ভাব, চড়া রোদ আর প্রচণ্ড দাবদাহের মিলেমিশে নাভিশ্বাস ওঠার জোগাড়। কিন্তু এই গরমে কাজ তো করতেই হবে। এগরমে লোকের মুখে মুখে ঘুরছে একটাই কথা, হিট স্ট্রোক। ঝলসানো গরমের ভয়ঙ্কর বিপদের আরেক নাম এই হিট স্ট্রোক। একটু অসতর্ক হলেই চলে যেতে পারে মূল্যবান প্রাণ।
হিট স্ট্রোক গরমের একটা মারাত্মক স্বাস্থ্যগত সমস্যা। গরমের কারণে মানুষের শরীরের তাপমাত্রা বাইরের আবহাওয়ার সঙ্গে ভারসাম্য রাখতে পারেনা। শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। তখনই তাকে বলা হয় হিট স্ট্রোক। সেই সময় শরীরের তাপমাত্রা পৌঁছে যায় প্রায় ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইটে।
হিট স্ট্রোকের আগে হিট ক্র্যাম্প বা হিট এক্সহসশন হতে পারে। এক্ষেত্রে মাংস পেশিতে ব্যথা, হঠাৎ করে প্রচণ্ড তৃষ্ণা, শরীর দুর্বল লাগতে পারে। এগুলি সবই হিট ক্র্যাম্পের লক্ষণ। এর পরের ধাপে হয় হিট এক্সহসশন। এই সময় বমি ভাব, মাথা ঝিমঝিম করা, মাথাব্যথা, দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস, অতিরিক্ত ঘামতে থাকা প্রভৃতি লক্ষণ গুলি দেখা দেয়। এই সময় যদি সতর্ক না হন তাহলে হিট স্ট্রোক অনিবার্য।
হিট স্ট্রোকের লক্ষণ
দ্রুত শ্বাস প্রশ্বাস
হঠাৎ ঘাম বন্ধ হয়ে যাওয়া
শরীরের তাপমাত্রা প্রায় ১০৪- ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট
রক্তচাপ কমে যাওয়া
মাথা ঝিমঝিম করা
কথায় অসংলগ্নতা
খিঁচুনি
অজ্ঞান হয়ে যাওয়া
ত্বক শুষ্ক এবং লালচে ভাব
বমি ভাব
হিট স্ট্রোক হলে কী করবেন?
হিট স্ট্রোকের আগের পর্যায়কে বলা হয় হিট ক্র্যাম্প বা হিট এক্সহসশন। এই পর্যায়ের লক্ষণ গুলি দেখা দিলে ছায়া রয়েছে এমন জায়গায় চলে যান। সেটা কোন ঘরের মধ্যেও হতে পারে। যদি সম্ভব হয় ফ্যান আর এসি ছেড়ে দিন। স্নান করার চেষ্টা করুন কিংবা ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছে ফেলুন। এই সময় ভুলেও চা বা কফি পান করবেন না। উপরন্তু প্রচুর পরিমাণে প্রচুর ঠান্ডা জল কিংবা খাবার স্যালাইন পান করুন। এইভাবে প্রথমেই হিট স্ট্রোককে প্রতিরোধ করা যায়। যদি একবার হিট স্ট্রোক হয়ে যায় তখন দ্রুত রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। তখন আর বাড়িতে চিকিৎসা করলে হবে না। এক্ষেত্রে দেরি হয়ে গেলে প্রাণও চলে যেতে পারে। যদি অন্য কারোর আপনার সামনে হিট স্ট্রোক হয় যতক্ষণ অ্যাম্বুলেন্স না আসে ততক্ষণ রোগীকে শীতল স্থানে নিয়ে গিয়ে শরীর জলে ভিজিয়ে দিয়ে বাতাস করুন। চেষ্টা করুন যাতে রোগের শরীরের তাপমাত্রা কমানো যায়। যদি রোগীর জ্ঞান থাকে তাহলে তাকে খাবার স্যালাইন দিতে পারেন। বারংবার খেয়াল করুন রোগীর শ্বাস-প্রশ্বাস চলছে কিনা। রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
কারা ঝুঁকিতে?
- শিশু এবং বৃদ্ধদের শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা কম থাকার কারণে হিট স্ট্রোকের আশঙ্কা সবথেকে বেশি।
- দিনের বেলায় যারা রোদের মধ্যে প্রচণ্ড পরিশ্রম করেন, যেমন শ্রমিক, রিকশাচাল।
- এছাড়াও যদি শরীরে জলশূন্যতা দেখা দেয় তাহলে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।
বাঁচতে কী করবেন?
কোনমতেই শরীরের জলের অভাব ঘটতে দেওয়া যাবে না। এই সময় হালকা ঢিলেঢালা সুতির কাপড় পরবেন। যত সম্ভব চেষ্টা করবেন বাড়ির মধ্যে ছায়াযুক্ত স্থানে থাকার। বাইরে বেরোলে অবশ্যই মাথায় টুপি ছাতা কিংবা কাপড় ব্যবহার করবেন। তৃষ্ণা না পেলেও ঘনঘন জল পান করা উচিত। চাইলে তাজা ফলের জুস খেতে পারেন। চা কফি জাতীয় পানীয় এই সময় একটু এড়িয়ে চলুন। যে সমস্ত সবজি কিংবা ফলে বেশি জলীয় অংশ রয়েছে সেগুলি বেশি করে খান। বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত, এই সময়ের টানা রোদ এড়িয়ে চলুন। মাঝে মাঝে নুন চিনির শরবত করে খেতে পারেন। দরকার পড়লে শ্রমসাধ্য কাজগুলি রোদের মধ্যে না করে রাতে কিংবা খুব সকালে করুন। আর যদি রোদের মধ্যে করতেই হয় তাহলে মাঝে মাঝে বিশ্রাম নিন। রোদে বাইরে বেরোলে সঙ্গী বানান সানস্ক্রিন আর সানগ্লাসকে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম