।। প্রথম কলকাতা ।।
Read book: আপনি এখন কিছু একটা করছেন। কিন্তু মন অন্য নানান বিষয় নিয়ে ভাবছে। সে ভাবনা উৎকণ্ঠার হতে পারে। হতে পারে অপ্রাপ্তির, কিংবা তখন হয়তো সে ভাবছে অজানা ভবিষ্যতের কথা। সবমিলিয়ে মন আপনার বশে থাকছে না কিছুতেই। আপনি তখন অস্থির হয়ে উঠছেন। আপনি ভাবছেন শরীর আর মন একসাথে চলছে না। কিংবা কিছুতেই শান্ত করতে পারছেন না মনকে। তার ফলেই বাড়ছে টেনশন। ঘুম আসছে না। বাড়ছে ক্লান্তি। আসলে মন কোথাও যায় না। মন শরীর একসঙ্গে থাকে। আমরাই আসলে মনকে নানা কল্পনায় ভাবিয়ে তুলি। মনকে তাই বসে আনতে চাইলে, এক মুখী করতে চাইলে চাই একাগ্রতা। আর পাঁচটা ভাবনা বাদ দিয়ে একটা ভাবনা নিয়ে থাকা গেলে মন অনেক শান্ত হয়ে আসে। সেই কাজে আপনার বন্ধু হতে পারে বই। বইয়ের পাতায় মুখ গুঁজলে তখন আর পাঁচটা চিন্তা মাথায় থাকে না। তখন আমরা সেই পাঠ্য বিষয়ের ভাবনায় ডুবে যাই। তখনই শান্ত হতে থাকে মন। মুক্তি মিলবে নিদ্রাহীন,ক্লান্তিকর রাতের বিভীষিকা থেকে। এক আধ ঘন্টার জন্য একটা বই যদি ক্লান্তি, বিষণ্নতা সরিয়ে আপনাকে আনন্দ, ঘুমের প্রশান্তি দেয় তার থেকে বড় প্রাপ্তি কি হতে পারে!
এখন প্রশ্ন, এজন্য কি বই পড়তে হবে।
যার যেমন পছন্দ তেমন বইই পড়বেন। শুধু বই কেন, খবরের কাগজ, ম্যাগাজিন পড়তে ইচ্ছা করলে সেটাও রাখুন হাতের কাছে। মনের খোরাক মেটাবে যে লেখ সেটাই পড়ুন। বেড়াতে যেতে ভালোবাসেন? পড়ুন ভ্রমণকাহিনী। জঙ্গল পাহাড় ঘুরে মন শান্ত হবেই। এমন নয় যে প্রতিদিন একটা করে বই শেষ করতে হবে। হয়তো পাঁচ পাতা পড়েই আপনি রেখে দিলেন বই। এরপর ঘুমিয়ে পড়লেন।
একটা বই প্রতিদিনের মানসিক চাপ থেকে দৃষ্টিতে ঘুরিয়ে দেয় অন্যদিকে। যে বিষয়গুলো মনে চাপ তৈরি করে সেগুলো তখন আর সামনে থাকে না। গল্পের মধ্যে ঢুকলেই পাওয়া যায় বাস্তবের বিপদসংকুল জগতের বাইরে আলাদা একটা মানবিক জগৎ। তখনই মন শান্ত হয়ে আসে। তখন উৎকন্ঠায় থাকা পেশিগুলোও অবসর পায়। টান টান অবস্হা থেকে শিথিল হয়। শ্বাস প্রশ্বাস, হৃৎকম্পন স্বাভাবিক হয়ে আসে। দেহে মনে শান্তির ছোঁয়া মেলে।
আজকের জেট যুগে যেসব রোগে নতুন প্রজন্ম বেশি মাত্রায় ভুগছে তার বেশিরভাগের সঙ্গেই মানসিক চাপের সরাসরি যোগ রয়েছে। বই সেই চাপ কমায় ম্যাজিকের মতো। তার সঙ্গে হার্টের রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, স্ট্রোক প্রভৃতি মারণ রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমায়। পায়।
কর্মক্ষেত্র বা পড়াশোনা সব ক্ষেত্রেই সাফল্য পেতে গেলে মনোযোগ একান্ত প্রয়োজন। এক্ষেত্রেও সাহায্য করতে পারে বই। কারণ প্রতিদিন বই পড়লে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। ফলে উন্নতি ঘটে মন সংযোগ ক্ষমতারও। যারা অ্যাটেনশান ডেফিসিয়েন্সি সিনড্রম বা অন্যমনস্কতায় ভুগছেন তারা আজ থেকেই বই পড়া শুরু করুন। দেখবেন অল্প দিনেই পরিস্থিতি একেবারে বদলে যাবে।
আসলে স্ট্রেস এবং অ্যাংজাইটি যত বাড়ে ততই স্মৃতিশক্তির ওপর তার কুপ্রভাব পরবে। ঠিক সময়ে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারা গেলে মনে রাখার ক্ষমতা মারাত্মকভাবে কমে যায়। প্রতিদিন কম করে ৩০ মিনিট বই পড়লেই স্ট্রেস কমবে। স্মৃতিশক্তিও মজবুত হবে।
বই পড়ার সময় ব্রেনের মধ্যে থাকা হাজারো নিউরোন বেশি বেশি করে কাজ করতে শুরু করে দেয়। ফলে সার্বিকভাবে মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে। তাতে যেমন যেমন বুদ্ধির বিকাশ ঘটে তেমনই নানা ধরনের ব্রেন ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে যায়। বই বিশ্লেষন করার ক্ষমতা বাড়ায়।যা এখন কর্পোরেট সংস্থায় কাজের উন্নতির জন্য বিশেষ জরুরি। সব মিলিয়ে বইকে সঙ্গী করে শান্তিতে থাকুন। ভালো থাকুন।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম