।। প্রথম কলকাতা ।।
Chandrayaan 3 Landing: ল্যান্ডার বিক্রমের পেট থেকে রোভার প্রজ্ঞান বেরিয়ে ১৪ দিন থাকবে চাঁদের বুকে। মণিমুক্তো কুড়োবে? খুঁজবে বরফ? চাঁদের গ্যাসে ভবিষ্যৎ দেখছে ইসরো? প্রজ্ঞানের ১৪ দিনের পুরো প্ল্যান ফিক্সড। চাঁদের বুকে ১৪ দিন কাটাবে রোভার প্রজ্ঞান। কিন্তু পৃথিবীর সঙ্গে কানেকশন ঘটবে কিভাবে? পৃথিবীর সময়ের হিসেবে ১৪ দিন চাঁদের দক্ষিণ পিঠে সূর্যের আলো থাকবে। যে আলোকে কাজে লাগিয়েই শক্তি তৈরি করবে রোভার! তাতেই প্রজ্ঞান দৌড়বে। ছ’টি চাকায় ভর করে চাঁদের বুকে এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত চষে বেড়াবে।
প্রতি সেকেন্ডে ১ সেন্টিমিটার পথ পাড়ি দেবে প্রজ্ঞান। সঙ্গে ক্যারি করবে একাধিক বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতি। লক্ষ লক্ষ বছর ধরে চাঁদের ভূমিরূপ কী ভাবে তৈরি হয়েছে, কোন কোন উপাদান দিয়ে চাঁদের মাটি তৈরি, তা খতিয়ে দেখে বার্তা পাঠাবে প্রজ্ঞান। আগামী দু’সপ্তাহ ধরে স্পেকট্রোমিটার বিশ্লেষণের মাধ্যমে চাঁদের মাটিতে কোন ধরনের খনিজ বস্তু আছে, তা খুঁটিয়ে দেখবে। এই সমস্ত পরীক্ষাগুলি করার জন্য ল্যান্ডার এবং রোভারের সঙ্গে রয়েছে পাঁচটি বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি। রোভারের সঙ্গে রয়েছে একাধিক দিকনির্দেশক স্বয়ংক্রিয় হাই রেজোলিউশন ক্যামেরা। রোভার চাঁদে ঘুরে ঘুরে ছবি তুলবে, নুড়ি-পাথর কুড়োবে, বরফের অস্তিত্ব খুঁজবে! না এখানেই শেষ নয়। চাঁদে বাতাস নেই, বায়ুমণ্ডল নেই, চৌম্বকক্ষেত্রও নেই, কিন্তু নানারকম গ্যাস আছে! চাঁদের মাটির কাছে গ্যাসের স্তর পরীক্ষা করবে রোভার। হিলিয়াম, নাইট্রোজেন কী মাত্রায় আছে তা পরিমাপ করবে।
তাছাড়া, চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে সূর্যের তেজ বেশি সময় ধরে দেখা যায় না। তার কারণ চাঁদ তার কক্ষপথে সামান্য হেলে থাকে। ফলে চাঁদের উত্তর মেরুর তুলনায় দক্ষিণ মেরু অনেক বেশি অন্ধকার। এই কারণে হিমশীতল দক্ষিণ মেরুতে বরফ থাকার সম্ভাবনা বেশি। আর বরফ মানেই জল! জলের তড়িৎ বিশ্লেষণে পাওয়া যাবে হাইড্রজেন ও অক্সিজেন। এখান থেকে লাভ হবে দু’টো, এক, হাইড্রজেন ব্যবহার করা যেতে পারে জ্বালানি হিসেবে। দুই, অক্সিজেন শ্বাস নিতে সাহায্য করবে তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি চাঁদের মাটিতে প্রজ্ঞানই এঁকে দেবে ভারতের জাতীয় পতাকা এবং ইসরোর লোগো। প্রজ্ঞান চাঁদ থেকে যা যা তথ্যসংগ্রহ করবে, তার সব কিছুই পাঠিয়ে দেবে ল্যান্ডার বিক্রমে।
বিক্রম সেই বার্তা পাঠাবে পৃথিবীতে প্রজ্ঞান শুধু বিক্রমের সঙ্গে কথা বলতে পারবে। তবে, শুধু রোভার প্রজ্ঞান নয়, চাঁদে তথ্য খুঁজবে চার রক্ষী। রম্ভা, চ্যাস্টে, ইলসা, অ্যারে, এদের সাহায্যেই চাঁদে বাজিমাত করবে চন্দ্রযান ৩। চাঁদে অবতরণের পর কাজ শুরু ল্যান্ডার বিক্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকা এই চারটি পেলোডেরএই পেলোডগুলোই চাঁদের ‘অজানা রহস্য’ খুলে দেবে ইসরোর সামনে। চাঁদের বুকে সূর্য থেকে আসা প্লাজ়মা কণার ঘনত্ব, পরিমাণ এবং পরিবর্তনগুলি নিরীক্ষণ করবে রম্ভা বা রেডিয়ো অ্যানাটমি অফ মুন বাউন্ড হাইপারসেন্সিটিভ আয়নোস্ফিয়ার অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ার। চ্যাস্টে বা চন্দ্র’স সারফেস থার্মোফিজ়িক্যাল এক্সপেরিমেন্ট মেপে দেখবে চন্দ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা।
অবতরণস্থলের আশপাশের মাটির কম্পন সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করবে ইলসা বা ইনস্ট্রুমেন্ট ফর লুনার সিসমিক অ্যাক্টিভিটি। আর, ‘লেজ়ার রেট্রোরিফ্লেক্টর’ অ্যারে চাঁদের গতিশীলতা বোঝার চেষ্টা করবে অর্থাৎ চাঁদের প্রাকৃতিক কার্যপ্রণালী সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য নিরীক্ষণ করে তা পৃথিবীতে পাঠানোর দায়িত্ব এই চার পেলোডের কাঁধে। টার্গেট ছিল, ল্যান্ডার বিক্রম এর সফট ল্যান্ডিং। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে প্রথম দেশ হিসাবে ভারত ইতিহাস গড়েছে।এত দিন চাঁদের অনাবিষ্কৃত এই দিকটিতে কোনও দেশের চন্দ্রযানই পা রাখেনি। সেক্ষেত্রে ভবিষ্যতে যদি গবেষণা এবং সম্পদের নিরিখে চাঁদের এই এলাকা বিজ্ঞানীদের কাছে গুরুত্ব পায়, বিশেষ ইনফো হাতে আসে তবে ভারত সেখানে ইম্পরট্যান্ট ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম