Tourism: ট্যুরিজমে শীর্ষ স্থানে নাম পশ্চিমবঙ্গের, কতটা উন্নত বাংলার পর্যটন শিল্প ?

।।প্রথম কলকাতা।।

Tourism: ভ্রমণপ্রেমী মানুষদের জন্য পশ্চিমবঙ্গের বুকে গড়ে উঠেছে একাধিক পর্যটন কেন্দ্র। রাজ্যের পর্যটন শিল্প ক্রমশক উন্নত হয়েছে। বিগত প্রায় ১০-১১ বছরে দক্ষিণবঙ্গ থেকে শুরু করে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গায় পর্যটন কেন্দ্র গুলি আরও সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছে। ইউনাইটেড নেশন ফোরাম বাংলাকে পর্যটন গন্তব্য হিসেবে পুরস্কৃত করেছে। সাংস্কৃতিক পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে বিশ্বের মধ্যে একেবারে শীর্ষে রয়েছে বাংলার নাম। পর্যটনের দিক থেকে রাজ্যে আমূল পরিবর্তন এসেছে, এমনটাই দাবি করেন খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার বিধানসভাতে রাজ্যের পর্যটন শিল্প নিয়ে ওঠা প্রশ্নের উত্তরে পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন শিল্পের উন্নতির কথা উল্লেখ করেন তিনি।

মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন , উত্তরবঙ্গে মাত্র ১১ বছর আগে তেমন কিছুই ছিল না । কিন্তু বর্তমানে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে সমৃদ্ধ উত্তরবঙ্গ। সেখানে নতুন করে তৈরি করা হয়েছে ৩০ থেকে ৩৫টি কটেজ । তৈরি করা হয়েছে রায়গঞ্জের পাখিরালয় । এছাড়াও রয়েছে সেখানে হেলিপ্যাড। উত্তরবঙ্গ বলতেই পশ্চিমবঙ্গবাসীর মাথায় নাম আসে দার্জিলিং , কালিম্পং, কার্শিয়াং প্রভৃতির নাম। প্রত্যেক বছর ছুটির মরশুমে এই সমস্ত জায়গাগুলিতে পর্যটকদের ভিড় চোখে পড়ার মতো থাকে। হিমালয় পর্বতের মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য ভ্রমণপিপাসু মানুষেরা সেখানে গিয়ে উপস্থিত হন।

পূর্বে পশ্চিমবঙ্গের পার্বত্য এলাকায় পর্যটকদের নিরাপত্তা একটা বড় প্রশ্নের জায়গা ছিল। কিন্তু এখন সে বিষয়ে যথেষ্ট সতর্ক সরকার । পর্যটকদের নিরাপত্তাকে বর্তমানে সুনিশ্চিত করা হয়েছে। তাদের সহযোগিতার জন্য পাহাড়ের বুকে গড়ে উঠেছে বহু ক্যাম্প । এছাড়াও সেখানে থাকা খাওয়ার সুব্যবস্থা করা হয়েছে। দার্জিলিং এর কফি হাউজের কথা এখানে না বললেই নয়। পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য কলকাতার মতো দার্জিলিঙেও গড়ে উঠেছে কফি হাউস। সেই কফি হাউস উদ্বোধন করে খোদ সেখানে বসে কফির পেয়ালা হাতে পাহাড়ে সৌন্দর্য উপভোগ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রীও।

উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গকে যুক্ত করার জন্য প্রায় ৩০০০ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়েছে। এমনটাই দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী। যুক্তি অনুযায়ী দেখতে গেলে বর্তমানে দক্ষিণবঙ্গের যে কোন প্রান্ত থেকে উত্তরবঙ্গে যাওয়ার জন্য রয়েছে সরকারি বাস। যা যথেষ্ট পকেট ফ্রেন্ডলি । এছাড়াও রয়েছে সুষ্ঠু রেল পরিষেবা। খুব সহজেই রেলপথে যে কোন মানুষ পাড়ি দিতে পারেন উত্তরবঙ্গের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য।

শুধুমাত্র উত্তরবঙ্গের পর্যটন কেন্দ্রগুলি নিয়ে কথা বললেই হবে না। কারণ দক্ষিণবঙ্গের নতুন পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে যুক্ত হয়েছে ঝাড়গ্রাম। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় খোদ কথা দিয়েছিলেন যে তিনি জঙ্গলমহলকে পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত করবেন। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর থেকেই এ বিষয়ে বিশেষ নজরদারি ছিল তাঁর। আর বলাই বাহুল্য বর্তমানে সত্যিই জঙ্গলমহল ঘুরতে যাওয়ার মত একটি জায়গায় পরিণত হয়েছে। সেখানে প্রায় ছ’টি নতুন সড়ক তৈরি হয়েছে। এছাড়াও তৈরি হয়েছে বহু রিসোর্ট। যেখানে পর্যটকরা চাইলে দু একদিন স্বাচ্ছন্দ্যে কাটাতে পারবেন।

জঙ্গলমহলের কথা যখন উঠল তখন ঝাড়গ্রামের নয়া পর্যটন কেন্দ্রের কথা বলতেই হয় । জঙ্গল রানীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মগ্ন হওয়ার পাশাপাশি রেল পথে ঝাড়গ্রাম থেকে গিধনি যাওয়ার পথে পড়বে আরও এক অপরূপ দৃশ্য। ঝাড়াগেরিয়ার কংসাবতী ক্যানেল। এখানে পর্যটকরা দেখতে পাবেন নীচ দিয়ে চলছে ট্রেন এবং ওপর দিয়ে ক্যানেলের মাধ্যমে জল বয়ে যাচ্ছে। সাধারণত এই ধরনের দৃশ্য খুব একটা দেখা যায় না। সারা দেশে মাত্র দুটি জায়গায় রয়েছে এই রকম ব্যবস্থা। তার মধ্যে নাম আসে ঝাড়গ্রামেরও।

এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে রায়গঞ্জের পাখিরালয়ের কথা উল্লেখ করেন। এটি পর্যটকদের কাছে সত্যিই আকর্ষণের অন্যতম জায়গা । ১৯৭০ সাল নাগাদ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফ থেকেই এই অঞ্চলের উন্নয়ন কাজ শুরু করা হয়েছিল। সেখানে কদম ,শিশু ,জারুল , ইউক্যালিপটাস ইত্যাদি বিভিন্ন পর্ণমোচী গাছ লাগানো হয়। ধীরে ধীরে সেই অরণ্যে আসতে থাকে এশীয় শামুকখোলের মতো অন্যান্য পরিযায়ী পাখির দল। পরবর্তীতে বর্তমান সরকারের আমলে রায়গঞ্জ বন্যপ্রাণ অভয়ারণ্যকে আরও সাজিয়ে তোলা হয়েছে। পর্যটকদের জন্য এই জায়গাকে আরও সমৃদ্ধ করা হয়েছে। এই সমস্ত স্থান গুলির জন্যেই পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন শিল্প ক্রমশ প্রচারিত হচ্ছে লোকমুখে। বিদেশি পর্যটকরা যাতে আরও বেশি পশ্চিমবঙ্গে আসেন তার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থাই করবে সরকার , এমনটাই জানিয়েছিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version