।। প্রথম কলকাতা ।।
Christmas Destination 2022: এই ব্যস্ততার জীবনে ছুটি পাওয়া খুবই মুশকিল। আর যদি পাওয়া যায়, তবে কি তা হাতছাড়া করা যায়। সারা বছরের সমস্ত ক্লান্তি দূর করতে ডিসেম্বরে একটা ছোটখাটো ভ্রমণের পরিকল্পনা করে থাকেন সবাই। ডিসেম্বর মানেই ক্রিসমাস (Christmas), আর ক্রিসমাস আসা মানেই ডাকছে পাহাড়, ডাকছে সমুদ্র। কিন্তু তার সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে পকেটের দিকেও। তবে সমস্ত দিক বজায় রেখে কোথায় যাওয়া যেতে পারে? এমনটাই এখন ভাবছেন অনেকে। জায়গা হতে হবে ভালো, আবার সেই সঙ্গে বাজেটের বাইরে খরচা করা চলবে না। রইল সেরকমই কিছু জায়গার হদিশ-
*বড়ন্তি (Baranti)- নতুন বছরের শুরুটা যাঁদের পাহাড়ের কোলে করার ইচ্ছে, তাঁদের জন্য পুরুলিয়ার বড়ন্তি গন্তব্য হতে পারে। এখানে রয়েছে বেশ ভালো ভালো রিসর্ট। তার সঙ্গে রয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। যেখানে বসে সূর্যোদয় দেখার মজাই আলাদা। রিসর্টের ভাড়া মোটামুটি সাধ্যের মধ্যেই থাকে। তবে তা আগে বুক করে নিলে ভালো হয়। বড়ন্তি থেকে ২১ কিমি দূরে রয়েছে জয়চন্ডী পাহাড়। যদি ইচ্ছে হয় তাহলে, ঘুরে আসতে পারেন সেখানেও। এখানে শ্যুটিং হয়েছে ‘হীরক রাজার দেশে’ ছবিটির। বলতে গেলে এই জায়গাটির সঙ্গে বাঙালিদের আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। তবে এখানে গেলে দেখার অনেক কিছুই রয়েছে। আপনার বাজেট অনুযায়ী আপনি ঠিক করতে পারেন কোথায় কোথায় ঘুরবেন!
বড়ন্তির একদিকে আছে বিহারিনাথ পাহাড়, কাছে গড়পঞ্চকোট, আর অন্যদিকে পাঞ্চেত ড্যাম। এখান থেকে ঘুরে আসা যায় কল্যাণেশ্বরী মন্দিরও। সেইসঙ্গে যদি হাতে সময় থাকে, তাহলে দন্ডাহিত পাহাড় থেকে ট্রেক করে আসা যায়। তবে যদি এত জায়গা ঘুরতে নাও ইচ্ছে করে, তাহলে বড়ন্তি নদীর পাড়ে বসে সূর্যাস্ত দেখবেন। মন আপনেই ভালো হয়ে যাবে। এক কথায় এখানে গেলে আপনার সমস্ত ক্লান্তি দূর হবে। আর সেইসঙ্গে কম খরচায় অনেক কিছু দেখাও যাবে।
*ধনৌলতি, উত্তরাখণ্ড (Dhanaulti)- উত্তরাখণ্ডের একটি বিখ্যাত পার্বত্য অঞ্চল হল এই ধনৌলতি। এখানে পরিবেশ অত্যন্ত শান্ত ও সুন্দর। যাঁরা একটু শান্তিপ্রিয় মানুষ, হই-হট্টগোল খুব একটা পছন্দ করেন না তাঁদের জন্য এই জায়গাটি সেরা। শহরের কোলাহল থেকে দূরে পাইন আর দেবদারু গাছের মাঝে সেলিব্রেট করুন ক্রিসমাস। এই জায়গাটি রয়েছে মুসৌরি থেকে মাত্র ২৮ কিলোমিটার দূরে। বলতে গেলে, এখানকার সবুজ প্রকৃতি আপনাকে মুগ্ধ করবে। বহু মানুষ এখানে যায় মনোরম পরিবেশ উপভোগ করতে। অল্প খরচে ছুটির কয়েকটা দিন ঘুরে আসার জন্য এটি আপনার পছন্দ হয়ে উঠতে পারে।
*মাউন্ট আবু, রাজস্থান (Mount Abu)- কম খরচে রাজস্থানের মাউন্ট আবু ভালো একটি হিল স্টেশন। এই পাহাড়ের উপরেই রয়েছে একটি মন্দির, যা গোটা অঞ্চলের মূল আকর্ষণ। তাছাড়া এখানকার মনোরম পরিবেশ দেখতে মানুষের ভিড় লেগেই থাকে। আরাবল্লী পাহাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে ঘুরে আসুন এখানে। মরুরাজ্যের এই একমাত্র হিল স্টেশনটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৭২২ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। সবুজ ঘন বন আর ক্যাকটাসের সঙ্গে দেখতে পাবেন নাক্কি লেক, ট্রেভার্স ক্রোকোডাইল পার্ক, অচলগড় দুর্গের ধ্বংসাবশেষ। মরু অঞ্চলের উত্তাপ থেকে দূরে এই এলাকায় রয়েছে সুন্দর সুন্দর রিসর্ট। আর সবটাই বাজেটের মধ্যে। শীতকালের ছুটিতে এবারে ঘোরার জন্য বেছে নিন মাউন্ট আবুকেই।
*বোলপুর, শান্তিনিকেতন (Bolpur)- পাহাড়ের মনোরম দৃশ্য উপভোগ করার জন্য হাতে রয়েছে অনেক অপশন। কিন্তু অনেকেই শীতের এই ছুটি কাটাতে, হাতের কাছে কোনও ভালো জায়গা খুঁজে থাকেন। আর সেই সঙ্গে যদি চিন্তা করেন বাজেটের, তাহলে বোলপুর আপনার পছন্দের জায়গা হয়ে উঠবে। হাতের কাছে দু-তিন দিনের ছুটি কাটানোর মতো জায়গা এটি। এই জায়গার সঙ্গে মিশে রয়েছেন কবিগুরু, আর সেইসঙ্গে রয়েছে বাউলের গান। এক কথায় বলতে গেলে, এই জায়গা বাঙালির ঐতিহ্যকে বহন করছে। এখানে হোটেল বা লজের ভাড়া খুব বেশি পড়ে না। ক্রিসমাসের সময় এখানে গেলে পৌষ মেলার আনন্দ নেওয়া যায়। এমনিতে প্রায় সারা বছরই এখানে ভিড় লেগে থাকে। কিন্তু বড়দিনের সময় গেলে বাড়তি পাওনা হিসেবে এখানে থাকে পৌষ মেলা ও তার পরবর্তী ভাঙা মেলা। আর এই সময়ে সেখানে গেলে আগে থেকে বুক করতে হবে হোটেল, নয়তো পড়তে হতে পারে সমস্যায়।
* পুষ্কর রাজস্থান (Pushkar)- পুষ্করে রয়েছে একটি ব্রহ্মা মন্দির এবং বিখ্যাত পশু মেলার জন্য পরিচিত এই শহর। এটি শুধুমাত্র একটি ধর্মীয় স্থান নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে ঐতিহ্য। যদি আপনি কোনও আধ্যাত্মিক স্থানে ঘুরতে যেতে চান, তাহলে তার জন্য পুষ্করে যাওয়াই যায়। আজমের থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পুষ্করের মন্দির ও হ্রদ ভক্তদের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয়। বলা হয়, প্রত্যেক ব্যক্তিরই একবার করে অন্তত পুষ্করে আসা উচিত। তো সে দিক থেকে শীতের ছুটিতে এখানে ঘুরতে যাওয়াই যায়। এখানকার স্থানীয় বাজার থেকে নানা ধরনের জিনিসপত্র কিনতে পারেন, ঘাটে ছোট ফটোশ্যুটও করা যেতে পারে। রাজস্থানের অন্যান্য সমস্ত পর্যটন কেন্দ্রগুলির থেকে পুষ্কর অনেক সস্তায় ঘুরে আসা যায়।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম