বাজপাখির মতো উড়বে ট্যাক্সি, রহস্যময় এই জিনিস ছুঁলেই নিঃস্ব ? ভারতের অজুবা

।। প্রথম কলকাতা ।।

বাজপাখির মতো এই খতরনাক প্রাণী, উড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে মানুষকে? ভারতের মাটিতে এ কোন অজুবা? রাত জাগা পাখি “মিডনাইট”? কী আছে এর ভেতর? ফাইভ স্টার ফেইল? আকাশ চিরে ঝাঁকে ঝাঁকে ছুটে যাচ্ছে উড়ন্ত প্রহরী। এই মন্ত্রেই দুবাইকে পেছনে ফেলবে ভারত। ছুঁতে গেলে হতে হবে নিঃশ্ব? উড়ন্ত প্রহরীর কামাল, প্রতিবেশী দেশও হাঁ করে দেখবে ভারত কে। আলাদিনের ট্যাক্সি ভারতের ঘরে ঘরে? মাটি থেকে ঝাঁপ ডিরেক্ট জলে? উড়ে উড়ে চলবে আপনাকে নিয়ে। মারাত্মক ক্ষমতা উড়ন্ত ট্যাক্সির। দুবাইয়ের ডিটো এবার ভারতে। যে গন্তব্যে যেতে ১ ঘন্টা থেকে ৩ ঘন্টা সময় লাগে, সেখানে এই উড়ন্ত ট্যাক্সি পৌঁছে দেবে মাত্র ৭ মিনিটে। দূষণ নেমে আসবে একেবারে জিরো তে? শুনে চক্ষু চড়কগাছ হওয়ার জোগাড়? ভারতের পরিবহন ব্যবস্থায় ঝড় তুলবে এই বৈদ্যুতিক উড়ন্ত ট্যাক্সি বা ফ্লাইং-ক্রাফট ‘মিডনাইট’।ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে আকাশ পথে পরিবহণ কাঠামো গড়ে তোলার ক্ষেত্রে কোমর বেঁধে মাঠে নামছে শীর্ষস্থানীয় বিমান সংস্থা ইন্ডিগো এবং যুক্তরাষ্ট্রের আর্চার এভিয়েশনের পৃষ্ঠপোষয়ক ইন্টারগ্লোব এন্টারপ্রাইস।

জানা গিয়েছে, একজন পাইলট এবং ৪ জন যাত্রীকে নিয়ে ১৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত যাত্রা করতে পারবে এই উড়ন্ত ট্যাক্সি বা মিডনাইট ই-এয়ারক্র্যাফ্ট। যে ফ্লাইং ট্যাক্সি যাত্রীদের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে পৌঁছে দেবে তার নামই ‘মিডনাইট ই-এয়ারক্রাফট’। প্রাথমিক পর্যায়ে দিল্লি, মুম্বই এবং বেঙ্গালুরু শহরে এই পরিষেবা শুরু করতে পারে ইন্টারগ্লোব এন্টারপ্রাইস। এই নিয়ে অলরেডি গ্র্যান্ড প্ল্যানিং হয়ে গেছে। সবথেকে বড় বিষয়, এই উড়ন্ত ট্যাক্সি যানজটের তীব্র যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দেবে যাত্রীদের।যানজটের সমস্যা বর্তমানে বড় রকমের মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়িয়েছে মানুষের কাছে। সেক্ষেত্রে বিমান ও হেলিকপ্টারের নাম নেওয়াই যায়, কিন্তু কাছের জায়গাগুলোতে যাতায়াতের জন্য এগুলো মোটেও আদর্শ উপায় নয়। মানুষের সেই প্রয়োজন মেটানোর খোঁজ করতে গিয়েই আবিষ্কার হয়েছে ফ্লাইং ট্যাক্সি, এয়ার ট্যাক্সি বা ইভিটিওএল মানে ইলেকট্রিক ভার্টিক্যাল টেক-অব অ্যান্ড ল্যান্ডিং।

আকাশ পথে এমন ট্যাক্সি পরিষেবা এক নতুন যুগের সূচনা করতে পারে ভারতে। জমকালো দুবাই এয়ার শোতে আর্চার অ্যাভিয়েশনের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা বিলি গোয়েল বলেছেন, এতদিন আমরা বৈজ্ঞানিক গল্প-কাহিনি হিসেবে যা জানতাম তা এখন বৈজ্ঞানিক সত্যতে পরিণত হয়েছে। সত্যিই এটা ঘটছে! এটাই এখন বাস্তবতা। ২০২৫ সালের ভেতরে বাজারে আসছে এটি। সিনেমা, কমিক্স, কল্পকাহিনীর উড়ন্ত ট্যাক্সি এবার বাস্তবের মাটিতে। যেটাতে চড়ার ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা বিমানের মতো হলেও বিমানে যাতায়াত সাধারণত বেশ খরচ সাপেক্ষ।সেই ক্ষেত্রে নিয়মিত এই ট্যাক্সি পরিষেবার খরচ আদৌ সামাল দিতে পারবে মধ্যবিত্ত? ভারতে এই ফ্লাইং ট্যাক্সিতে চড়তে গেলে কতটাকা ভাড়া গুনতে হবে? এটাই এখন সবথেকে বড় প্রশ্ন। এবিষয়ে California-based electric air taxi company, Archer Aviation বলছে উড়ন্ত ট্যাক্সিতে চড়তে মাইল প্রতি একজন যাত্রীকে চার থেকে পাঁচ থেকে ডলার গুনতে হতে পারে। আবার কেউ কেউ বলছেন, ফ্লাইং ট্যাক্সিতে তে চড়ার জন্য প্রতিযোগিতামূলক খরচই রাখা হবে।

যে উড়ন্ত ট্যাক্সি ভারতের মাটিতে পা রাখলে পাশাপাশি গণ-পরিবহন ব্যবস্থায় প্রযুক্তির ক্ষেত্রে আরও এক ধাপ এগোবে ভারত। কারণ এটা তো ফ্যাক্ট এর আগে, এশিয়ার কোনও দেশে এখনও সফল ভাবে উড়ন্ত ট্যাক্সি পরিষেবা চালু হয়নি। সেই জায়গায় প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনে একটি বড় মাইলস্টোন স্পর্শ করবে ভারত। ভারত ছাড়াও, দুবাইভিত্তিক প্রাইভেট অ্যাভিয়েশন অপারেটর এয়ার সেতু যুক্তরাষ্ট্রের আর্চার অ্যাভিয়েশনের সঙ্গে ১০০টি উড়ন্ত ট্যাক্সি কেনার চুক্তি করেছে। এর দাম পড়বে প্রায় ৫০০মিলিয়ন ডলার। ২০২৫ এ বাজারে এলেও আর্চার অ্যাভিয়েশনের প্রধান বলছেন, ২০২৬ সাল নাগাদ সংযুক্ত আরব আমিরাতে উড়ন্ত ট্যাক্সি চালু হবে। প্রাথমিকভাবে দুইটি রুটে এটি চলবে। এর একটি হলো- দুবাই এয়ারপোর্ট থেকে পাল্ম ডেভেলপমেন্ট এবং অপরটি হলো- আবুধাবি এয়ারপোর্ট থেকে সিটি সেন্টার। আসতে আসতে এর চাহিদা আরও বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। অতিসত্ত্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতে শতশত উড়ন্ত ট্যাক্সি চালু করার আশা আর্চার অ্যাভিয়েশনের। যা সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব এবং হেলিকপ্টারের থেকে ১০০ গুণ কম শব্দ তৈরি হয় এই এয়ার ট্যাক্সিতে। সব মিলিয়ে দুর্দান্ত বেনিফিট দেবে ফ্লাইং ট্যাক্সি।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version