Mood Swing: হঠাৎই বদলে যাচ্ছে মেজাজ! মুড সুইং কাটিয়ে ওঠার উপায় জানা আছে ?

।। প্রথম কলকাতা।।

Mood Swing: আচমকাই মেজাজে বড় পরিবর্তন । আদৌ মন ভালো আছে নাকি মন খারাপ তাও বুঝে ওঠা যায় না। কিছুক্ষণ আগে হাসিমুখে ছিল যে পরক্ষণেই তাঁর চোখে মুখে রাগের ছাপ স্পষ্ট। এগুলি কিন্তু অসুখের লক্ষণ। এই অসুখ মনের অসুখ । যার নাম মুড সুইং। অর্থাৎ আপনি হাসিমুখেই ছিলেন , বেশ ভালোই কাটছিল দিন কিন্তু হঠাৎ করেই মন খারাপ হয়ে গেল। আবার হঠাৎ করেই কোন একটা ব্যাপারকে কেন্দ্র করে তীব্র রাগ দেখা গেল। এই মুড সুইং বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নারীদের মধ্যেই দেখা যায় । বিশেষত তাঁরা ঋতু চক্রের সময় এবং গর্ভাবস্থায় এই মুড সুইং এর শিকার হয়।

* কেন হয় মুড সুইং ?

পুরুষ মহিলা উভয় ক্ষেত্রেই মুড সুইং দেখা যায় । তবে মহিলাদের ক্ষেত্রে এর পরিমাণ অনেকটাই বেশি। তাই মহিলাদের কেন মুড সুইং হয় এর কারন ব্যাখ্যা করতে গেলে সাধারন কিছু জিনিস জানা অবশ্যই প্রয়োজন। যেমন মেয়েদের মুড সুইং এর জন্য আসলে দায়ী হল হরমোনাল চেঞ্জ । ঋতুচক্রের ফলে এই হরমোনাল চেঞ্জ হয়। আর তখনই মহিলাদের ক্ষণে ক্ষণে মেজাজ বদল দেখা যায় । এছাড়াও গর্ভাবস্থায় হবু মায়ের শরীরে হরমোন চেঞ্জের ফলেই এই মুড সুইং হয়ে থাকে।

* মুড সুইং এর লক্ষণ কী কী ?

মূলত খিটখিটে ভাব, রাগ , মেজাজ, কান্না , অতিরিক্ত স্পর্শকাতরতা ,অতিরিক্ত চিন্তা, অস্থিরতা, হতাশা প্রভৃতি।

* কখন বুঝবেন মুড সুইং হচ্ছে ?

১) একটা জিনিস যা কিছুক্ষণ আগে পর্যন্ত আপনার বেশ ভালো লাগছিল তবে হঠাৎ করেই ভীষণ বিরক্তিকর হয়ে উঠল।

২) ছোটখাটো বিষয়ে রাগ হওয়া, বিরক্ত ভাব আসা

৩) বন্ধুবান্ধব পরিবারের সদস্যদের এড়িয়ে চলা

৪) যেকোনো কাজে অনীহা, প্রয়োজনের বেশি কথা বলতে বিরক্তিবোধ

৫) শরীরে হরমোনাল চেঞ্জের কারনে অল্পস্বল্প মুড সুইং সব মেয়েদেরই হয়। কিন্তু অতিরিক্ত মুড সুইং মানসিক ভারসাম্য নষ্ট করে ফেলতে পারে। তাই অবশ্যই এই বিষয়টিতে নজরদারি রাখার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।

* মুড সুইং সম্পর্কে অজ্ঞতা

আমরা শরীরের অসুখকে যতটা গুরুত্ব দিয়ে দেখি মনের অসুখকে কিন্তু ততটা গুরুত্ব দিয়ে দেখি না। উদাহরণস্বরূপ এই মুড সুইংয়ের ব্যাপারটাই আমাদের নজর এড়িয়ে যায়। এমনকি দেখা গিয়েছে অনেক সময় যিনি মুড সুইং এর শিকার তিনি নিজেই এই সম্পর্কে অবহিত নন। ভারতের মতো উন্নয়নশীল দেশে এখনও পর্যন্ত মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে তেমন কেউ চিন্তিত নয়। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, শুধুমাত্র মুড সুইংয়ের কারণে সেই মুহূর্তে ভুল বোঝাবুঝিতে আত্মহত্যার মতো ঘটনাও ঘটেছে । তাই মুড সুইং সম্পর্কে নিজে জানা, অন্যকে জানানো অত্যন্ত প্রয়োজন। খুব বেশি পরিমাণে মুড সুইং দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

* মুড সুইং কাটিয়ে ওঠার উপায়

১) যখনই মনে হবে ঘন ঘন আপনার মেজাজে পরিবর্তন আসছে তখনই মন এবং মস্তিষ্ককে শান্ত রাখতে যোগ ব্যায়ামের অভ্যাস করুন।

২) সুষম খাবার খান। নিজেকে খুশি করতে সেই সময় চকলেট চিপসের মত খাবারগুলি খেতেই পারেন।

৩) মুড সুইং আসলে মানসিক চাপ সৃষ্টি করে । আর মানসিক চাপ কমানোর জন্য পর্যাপ্ত ঘুম কিন্তু অত্যন্ত জরুরী।

৪) নিজেকে গুটিয়ে না রেখে প্রকাশ করুন । যা মনে আসছে যা বলতে চাইছেন বলে ফেলুন । এতে সাময়িকভাবে কারও সাথে মনোমালিন্য হলেও বিষয়টি পরবর্তীতে আপনার বা আপনার কাছের মানুষদের ক্ষতি করবে না।

৫) প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পান করুন । রোজ নিজের জন্য কিছুটা সময় বের করে ব্যায়াম করার অভ্যাস করুন।

এইগুলি প্রাথমিকভাবে আপনাকে মুড সুইং কাটিয়ে উঠতে বেশ খানিকটা সাহায্য করবে। তবে তারপরেও অনেক ক্ষেত্রে কাজের চাপ, পারিবারিক চাপ, ব্যক্তিগত সমস্যা, ঘুমের অভাব, বাইপোলার ডিসঅর্ডার প্রভৃতির কারণে সেরোটোনিন ও নরপাইনফ্রাইনের ভারসাম্যে গণ্ডগোল হলেই মুড সুইং দেখা দিতে পারে । বিষয়টি খুব বেশি পরিমাণে আপনাকে ঘিরে ধরলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version