কাশ্মীরের যখের ধনই পাকিস্তানের চাই! এমন কী আছে এই উপত্যকায় ? ছলচাতুরির ইতিহাস স্বাক্ষী

।। প্রথম কলকাতা ।।

কাশ্মীরে এমন কোন গুপ্তধন আছে যা পেতে এত মরিয়া পাকিস্তান? কাশ্মীর পেলে কী লাভ ইসালামাবাদের? কেন কাশ্মীর এতটা গুরুত্বপূর্ণ ভারত-পাকিস্তানের জন্য? শুধু হরি সিংয়ের কাহিনী জানলেই হবে না নেপথ্যে ছিল অনেক বড় লাভের অঙ্ক। চীনের হাতে কাশ্মীরের একটা পার্ট কীভাবে চলে গেল? উত্তর প্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ ও বিহার ভারতের ৪৭ শতাংশ মুসলিমের বাস এই ৩ রাজ্যে কৈ এই রাজ্যগুলোকে তো নিজেদের দখলে করার চেষ্টা করেনা পাকিস্তান? কাশ্মীরে এমন কি সম্পদ আছে যা নিয়ে এত টানাটানি? শুধুই কি কাশ্মীরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য?

রাজা হরি সিং নিজে ডোগরা সম্প্রদায়ের হয়ে শাসন করেছিলেন এক মুসলিম রাজত্ব। পাকিস্তানের অতিলোভেই তারা হারিয়ে ফেলেছিল কাশ্মীর। কাশ্মীরের যে অংশ ভারতের তা পাকিস্তানের হাতে থাকলে অর্থনীতি নিয়ে আর ভাবতে হত না এমনটাই দাবি করেন বহু বিশেষজ্ঞ। ভাববেন না শুধুমাত্র কাশ্মীরে মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ বলেই পাকিস্তানের নজর কাশ্মীরের দিকে। আসলে অঙ্ক কষা হয়েছিল যা অনেক কম মানুষই জানেন কাশ্মীর আসলে কতটা বড় জানেন? ১৯২৫ সালে অবিভিক্ত কাশ্মীরের গদিতে বসেন রাজা হরি সিং কিন্তু রাজনৈতিক ভাবে নিরপেক্ষ অবস্থান ধরে রাখতে চেয়েছিলেন তিনি। পরবর্তীকালে নর্থ ওয়েস্ট ফ্রন্টিয়ার প্রভিন্স যা আজকের খাইবার পাখতুনখোয়া থেকে আসা পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে তাড়াতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সাহায্য নেওয়া ছাড়া তাঁর আর কোনও উপায় ছিল না তাঁর কাছে। পরিস্থিতির ফলস্বরূপ ১৯৪৭-এর ২৬ অক্টোবর ইনস্ট্রুমেন্ট অব অ্যাসেশনে স্বাক্ষর করেছিলেন হরি সিং জিন্না অবশ্য বলেছিলেন এসব চুক্তি তিনি মানেন না।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন না মানার যথেষ্ট কারণ আছে। যেহেতু কাশ্মীরে তখনও হিন্দুদের থেকে মুসলিমসংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল জম্মুতে ছিল মূলত হিন্দুদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা তাই পাকিস্তান আপাদমস্তক মুসলিম দেশ হওয়ায় তাদের দিকেই কাশ্মীরের জনগনকে ঝোকানোর চেষ্টা করে জিন্নার দেশ। আসলে কাশ্মীরে এমন কিছু সম্পদ রয়েছে তা পাকিস্তানের হাতে এলে মালামাল হয়ে যাবে তারা যদিও কাশ্মীরের একটা পার্ট গিলগিট বালটিস্তান যা পাক অধিকৃত কাশ্মীরেই অবস্থিত। তা পাকিস্তানের কাছে থাকা সত্ত্বেও তারা কিছুই বিশেষ করতে পারেনি। ঝিলাম, সিন্দু, রাভি, চেনাব, ঝেলাম, তাওই পাঁচ নদী বয়ে যায় কাশ্মীর দিয়ে। পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশ কৃষিকার্যের জন্য অনুকূল। একবার এই পাঁচ নদীর পুরোপুরি দখল পেলে পাকিস্তান অনেক বেশি শস্যশ্যামলা হয়ে উঠতে পারে। দ্বিতীয়ত কাশ্মীরে থাকা ব্যাপক পরিমাণে খনিজ সম্পদ ও কাঠ ইসলামাবাদের আসলে চোখ সেদিকেই কাশ্মীরে এই নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠতে পারে বড়বড় হাইড্রো পাওয়ার প্ল্যান্ট।

এবার বুঝতে পারছেন কাশ্মীর দখল কেন পাকিস্তানের স্বপ্ন। বর্তমানে কাশ্মীরের ১৩২৯৭ স্কোয়ার কিমির এলাকা গিলগিট রয়েছে পাকিস্তানের হাতে। প্রায় ৪ মিলিয়ন মানুষের বসবাস সেখানে। ১৯৪৭ সালে ভারত পাকিস্তান যুদ্ধে তা দখল করে পাকিস্তান। এদিকে ৩৭২৪৪ স্কোয়ার কিমি আকসাই চীন কাশ্মীরের আরেকটা অংশ রয়েছে চীনের অধীনে। ১৯৬২ সালের চীন-ভারত যুদ্ধের মধ্যে দিয়ে চীন কাশ্মীরের আকসাই-চীন অংশটি নিজেদের দখলে করে নেয়। আর তার পরের বছর পাকিস্তান কাশ্মীরের ট্রান্স-কারাকোরাম অঞ্চলও চীনের হাতে ছেড়ে দেয়। বর্তমানে পাকিস্তানের যা অর্থনৈতিক অবস্থা তাতে পাকিস্তানের বহু মানুষেরই দাবি কাশ্মীর কাড়ার মতো ক্ষমতা পাকিস্তানের আর নেই, শেষ বরং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের জনগনের দাবি তারা ভারতের সঙ্গে যুক্ত হতে চায়। পাকিস্তানের অত্যাচার তারা আর মেনে নিতে পারছেন না। তাই কাশ্মীর দখল যে স্বপ্ন যুগ যুগ ধরে দেখছে জিন্নার দেশ। সেটা যে স্বপ্ন থেকে যাবে তা বলাই বাহুল্য।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version