।। প্রথম কলকাতা ।।
Indian Border Laser Wall: আতঙ্কবাদীদের নো এন্ট্রি ভারতে (India), দেশের সীমান্তে (Border) সর্বদা সতর্ক তৃতীয় চোখ লেসার বিম ডিটেকশন সিস্টেম। ভারতের বর্ডারে লেসার দেয়াল (Laser Wall) বসতেই দুশমনদের জন্য শুরু হয়েছে খারাপ দিন। এই বেড়া টপকাতে গেলে মৃত্যু অবধারিত।
জওয়ানদের চোখ এড়িয়ে কিংবা কাঁটা তারের বেড়া কেটে পাকিস্তানি জঙ্গিরা আর ভারতের প্রবেশ করতে পারবে না। কারণ বর্ডারে রয়েছে অদৃশ্য দেয়াল, যাকে চোখে দেখা না গেলেও কাটা যায় না। এড়াতে গেলে মুহূর্তে সংকেত চলে যাবে জওয়ানদের কাছে। এছাড়া সীমান্তে রয়েছে এমন এক তার যার সংস্পর্শে এলে মুহূর্তে ঝলসে যাবে শত্রুরা। ভারত পাকিস্তানের রাজনৈতিক ঝামেলা বহুদিনের। পাকিস্তানি শত্রুদের কারণে বারংবার ভারত-পাক সীমান্তে বারংবার উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। ভারত এক দিক থেকে দিয়েছে শান্তির বার্তা, অপরদিকে পাকিস্তান থেকে ক্রমাগত এসেছে উস্কানি। সেনাদের চোখ এড়িয়ে ভারতের প্রবেশ করেছে জঙ্গি। সন্ত্রাসের বিষ ছড়িয়েছে ভারতের মাটিতে। তবে এসব এখন অতীত। পাকিস্তান চাইলেও ভারতে সহজে প্রবেশ করতে পারবে না। ভারতের বর্ডারে রয়েছে ইলেকট্রিকফায়েড কোবরা তার আর লেসার ওয়াল। যা গোটা সীমান্ত সিল করে দিয়েছে।
সেই ২০১৬ সালে ভারত কাঁটাতারের উপর ভরসা কমিয়ে দিয়েছে। তখনই সীমান্তে বসিয়েছিল লেসার ওয়াল। সেই সময় প্রতিবেশী দেশগুলিতে যেমন পাকিস্তান, বাংলাদেশের সংবাদ মাধ্যম গুলিতে এই নিয়ে বহু খবর ছাপা হয়। মূলত অবৈধ অনুপ্রবেশ, জঙ্গি হামলা, আর চোরাচালান রুখতে ভারত এই ব্যবস্থা নেয়। বিশেষ করে এই লেসার ওয়াল বসানো হয়েছে ভারত-পাক সীমান্তের দুর্গম এলাকা গুলিতে। যে এলাকাগুলি জঙ্গিরা অনুপ্রবেশের জন্য ব্যবহার করত। ২০১৬ সালে পাঞ্জাবে ভারত-পাক সীমান্ত বরাবর প্রতিরক্ষা মন্ত্রক প্রায় ১২ টি পয়েন্টে লেসারের বেড়াজাল বসায়। এই বিশেষ লেসার ওয়ালের দেখভাল করে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বা বিএসএফ। তারও আগে থেকে বিএসএফ বারংবার সীমান্তে লেসার দেয়ালের প্রস্তাব দিয়ে এসেছে। তখন কাজ চলছিল ঢিমে তালে। যখন পাঠানকোটে জঙ্গি হামলা হয় তখন টনক নড়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের।
ভারতীয় সীমান্তের যে সমস্ত পাহাড়ি এলাকায় বিপ্পজনক ঢাল রয়েছে সেখানে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া সম্ভব নয়, সেখানে প্রথমে লেসারের বেড়াজাল বসানো হয়। এই কাজ করা হয়েছিল উপগ্রহ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থার মাধ্যমে। যদি কোন অবৈধ গতিবিধি থাকে তাহলে সেন্সর মুহূর্তে সেই সংকেত পাঠিয়ে দেবে কম্যান্ড সিস্টেমে। এই সংকেত থাকবে অত্যন্ত নিখুঁত। যার কারণে বিএসএফের নজরে চলে আসবে ঠিক কোন এলাকা দিয়ে অবৈধ গতিবিধি চলছে। আগে খুব সহজেই জওয়ানদের চোখে এড়িয়ে কিংবা কাঁটাতারের বেড়া কেটে পাকিস্তান থেকে শত্রুরা ভারতে ঢুকত। কিন্তু লেসার দেয়াল অদৃশ্য, একে কাটাও যাবে না, আবার এড়ানো যাবে না। একবার এই রশ্মি সংস্পর্শে আসলেই সংকেত পৌঁছে যাবে ভারতীয় জওয়ানদের কাছে। এমনকি ঘন কুয়াশা, অন্ধকারেও এই লেসার ওয়াল দুর্দান্ত কাজ করে।
২০১৬ সাল থেকেই পাঞ্জাব এবং জম্মুকে ভারত সরকার সবথেকে সংবেদনশীল সীমান্ত বলে মনে করেছে। তাই সেখানেই আগে লেসার সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হয়। পশ্চিমবঙ্গে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে প্রায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার এলাকায়, আর গুজরাটে ভারত-পাক সীমান্তে এই লেসার ওয়াল বসানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এই কাছ মূলত করা হয়েছিল পাইলট প্রজেক্টের অধীনে। ২০১৯ সালে দিল্লি ভিত্তিক লেসার সাইন্স অ্যান্ড টেকনোলজি সেন্টার প্রায় ৪০ ইউনিট লেসার বেড়া তৈরি করেছিল।
এছাড়াও সীমান্ত রক্ষার জন্য রয়েছে কোবরা তার। কোবরা যেমন ভয়ঙ্কর এক সাপ, যার এক দংশনে মানুষ শেষ, তেমনি এই সাপের মতো ঘাতক কোবরা তার। এর মধ্যে দিয়ে সর্বদা ছুটে চলেছে ১১ হাজার ভোল্টের কারেন্ট। এই তার ছোঁয়া মাত্রই সেই ব্যক্তি মুহূর্তে ঝলসে যাবে। আর কেউ যদি কোন যন্ত্র দিয়ে তার কাটতে যায় তাহলে বেজে উঠবে অ্যালার্ম। কিন্তু এই বিদ্যুৎ বেড়াও শত্রু আটকাতে পারেনি। শত্রুরা অতিশয় ধুরন্ধর। তারা এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ বিদ্যুৎ বেড়ার উপর ছিটিয়ে দিতেই অকেজো হয়ে যেত। তারপর সেই বেড়া কেটে সহজে প্রবেশ করত ভারতে। তবে আর এসব সম্ভব নয়, কারণ ভারতের সমস্ত সীমান্তে বসতে চলেছে অদৃশ্য লেজার ওয়াল। যা পুরো দেশকে অদৃশ্য ভাবে সিল করে দেবে।
শুধু ভারতে নয়, এই লেজার ওয়ালের দিক থেকে কয়েক ধাপ এগিয়ে ইজরায়েল। সম্প্রতি এই দেশটিকে নিয়ে গোটা বিশ্বে হইচই পড়ে গিয়েছে। ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হুমকি মোকাবেলায় ইসরায়েল সরকার ঠিক করেছে, তাদের দেশের সীমান্তে লেসার দেয়াল নির্মাণ করবে। এটি এতটাই শক্তিশালী যে আয়রন ডোমের চেয়েও অত্যন্ত কম সময়ে বাতাসে ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র এবং রকেট ধ্বংস করতে সক্ষম। ইসরায়েলের আকাশেই লেসার দেয়াল ধ্বংস করবে শত্রুর ক্ষেপণাস্ত্র।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম