গীতাপাঠ দিয়েই লোকসভা ভোটের রেকি ? টেস্টিং গ্রাউন্ড ব্রিগেড, মোদী মন্ত্রেই রহস্য

।। প্রথম কলকাতা ।।

লোকসভা ভোটের রেইকি, ভারতকে কোন মন্ত্রে বাঁধছেন মোদী? ‘গীতাপাঠ’ এই লুকিয়ে আসল রহস্য। পৃথিবী নয়, মন ছোঁবে রামলালা। “টেস্টিং গ্রাউন্ড” থেকেই জল মাপবে বিজেপি? স্টেপ বাই স্টেপ ছক, বাঙালি আবেগে শান দেওয়ার প্ল্যানিং। কোথায় বসে ছক সাজাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী? রেজাল্ট দেখাবে ব্রিগেড ভারতের বুকে নতুন যুগ।২৪ এর লোকসভা নির্বাচনের আগে অযোধ্যার রামমন্দিরে রামলালার অধিষ্ঠান ঘটবে। গীতাপাঠে মুখরিত হবে বাংলা। বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, এসবের দৌলতে তৃতীয়বার দিল্লির মসনদ দখল যেন সহজ হয়, সম্ভব হয় সেটাই কনফার্ম করতে চাইছে মোদী সরকার।

আর এতেই প্যালপিটিশন বাড়ছে বিরোধীদের। উঃ প্রদেশের অযোধ্যায় রামমন্দিরের উদ্বোধন, একটা গ্র্যান্ড ইভেন্ট, ভিভিআইপিদের থিকথিকে ভিড় এসব দেখে শুনে এমনিতেই হজম করতে অসুবিধা হচ্ছে বিরোধীদের। এরইমধ্যে গোঁদের উপর বিষফোঁড়া বাংলার বুকে লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠের আয়োজন। কিন্তু মোদীর লক্ষ্য স্থির। ২৪ ডিসেম্বর কলকাতায় লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠের অনুষ্ঠানের ‘প্রধান পুরোহিত’ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এখন প্রশ্ন হল এটা কি সাধারণ কোন গীতাপাঠের অনুষ্ঠান? বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে মাস তিনেক পরই লোকসভা নির্বাচন, তার আগে মানুষের মন পড়ে নেওয়ার ‘টেস্টিং গ্রাউন্ড’ ব্রিগেডে গীতপাঠ। তার মানে এই গীতাপাঠ কি বিজেপির রেকি? অনেকেই বলছেন রামমন্দির উদ্বোধনের প্রভাব বাংলায় লোকসভা ভোটে কতটা পড়বে, তার রেকি করে নিতে চাইছে বিজেপি। পরিষ্কার কথা জল মাপতে চাইছে পদ্মশিবির।

এটা তো নতুন করে বলার দরকার পড়ে না, যে বিজেপি নেতৃত্বের কাছে ২৪ এর নির্বাচনে রামমন্দিরই তাদের তুরুপের তাস। তাই পরিকল্পনা মাফিক ছকে চলছে বিজেপি। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে ভেবেচিন্তেই নির্বাচনের মুখে ঠিক করা হয়েছে অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধনের দিন। রামমন্দিরকে ঘিরে চলছে দেশজুড়ে জোরদার প্রচার। মানুষের মধ্যে কাজ করছে একটা অন্য উন্মাদনা। জড়িয়ে গেছে আবেগ। নেওয়া হয়েছে বাড়ি বাড়ি রামলালার ছবি ও প্রসাদ পৌঁছে দেওয়ার কর্মসূচি। উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত সহ বিজেপি শাসিত রাজ্যে রামমন্দির নিয়ে বিরাট সাড়া মিলেছে। কিন্তু বাংলা? রাম মন্দির উদ্বোধনের নিমন্ত্রণ থেকে শুরু করে বাড়িতে বাড়িতে হলুদ চাল, বঞ্চিত হয়নি পশ্চিমবঙ্গ ও।বরং বিশেষ গুরুত্ব দিতে স্পেশাল ট্রিটমেন্টে বাংলা কে রাখতে চাইছে বিজেপি।

বাংলায় দিল্লির নেতাদের ডেলি প্যাসেঞ্জারিটা ছিল সময়ের অপেক্ষা। সেটাও কিনা একেবারে নরেন্দ্র মোদীকে সামনে রেখে। যেটা শুরু হচ্ছে ব্রিগেড দিয়ে। মোদ্দা কথা লোকসভা নির্বাচনের আগে বড় ধামাকা বাংলার মাটিতে। যেখান থেকে এটা বোঝা যাবে রামমন্দির দাওয়াই এই রাজ্যে কতটা কাজ করলো? কতটা এফেক্ট ফেললো? মনে করিয়ে দিই, একুশের নির্বাচনের আগেও ব্রিগেডে সভা করেছিলেন মোদি। বাঙালি আবেগ কাজে লাগানোর উদ্দেশ্যে মিঠুন চক্রবর্তীকে তোলা হয়েছিল মঞ্চে। আর এবার? ভেবে দেখুন এমন সব সংগঠন সামনে আছে, যাদের কিছু নিজস্ব অনুগামী বা ভক্ত আছে। যারা ফ্রন্টলাইনে থেকে গীতাপাঠের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বাংলার বুকে ধর্মীয় আবেগ অনুভূতি প্রকাশের একটা মঞ্চ তৈরি করছে। সেই রামমন্দির স্ট্র্যাটেজি?

বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে রামমন্দির নির্মাণ ও তার উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে হিন্দুত্বের প্রচারকে এমন পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা বিজেপি এবং আরএসএসের যাতে তার দৌলতে দিল্লির মসনদে পৌঁছনোর রাস্তা পরিষ্কার হয়। বুঝতে হবে বাংলাতেও ধর্মকেন্দ্রিক রাজনীতির ট্রেন্ড ঊর্ধ্বমুখী। তাহলে সেটাকেই কি এনক্যাশ করতে চাইছে পদ্মশিবির? এর সঙ্গে রাজনীতির যোগ কতটা? উদ্যোক্তা থেকে বিজেপি নেতৃত্ব একযোগে দাবি করছে, ব্রিগেডের গীতাপাঠের অনুষ্ঠানের সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই, না থাকারই কথা। কারণ পবিত্র গীতাও ফলের আশা না করে কর্ম করার উপদেশ দিয়েছে। কিন্তু, ধর্মের সঙ্গে জড়িয়ে আছে সেন্টিমেন্ট। সেটাকে অস্বীকার এর কোনো জায়গা নেই।‌এটা ফ্যাক্ট। ফলে, লোকসভা নির্বাচনের মুখে ব্রিগেডে ঘটা করে গীতাপাঠ বিজেপিকে মানুষের মন জয়ের ক্ষেত্রে এক্সট্রা মাইলেজ দেবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version