চীনের নাকের ডগায় রিনিউয়েবল এনার্জি তৈরির প্ল্যান ভারতের! সুবানসিরি তো ট্রেলার, দিবাং দেখলে কি বলবেন?

।। প্রথম কলকাতা ।।

এবার চীন সীমান্তে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে ভারত। নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে ভারতের সুবানসিরি তাক লাগাবে। কিন্তু এই সুবানসিরির জন্য কতটা লড়াই করতে হয়েছে ভারতকে? কত বছরের লড়াইয়ের পর এই সাফল্য? সুবানসিরি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প চালু হবে কবে? জলবিদ্যুৎ কে কেন এতো গুরুত্বপূর্ণ ভাবা হচ্ছে? অপেক্ষা করুন, সুবানসিরির পর দিবাংয়ে দেখবেন ভারতের চমক। চীন সীমান্তের কাছে, আসাম ও অরুণাচল প্রদেশের মাঝে সুবানসিরি লোয়ার ড্যাম জলবিদ্যুৎ প্রকল্পটি অবস্থিত। সুবানসিরি এমন একটা প্রকল্প যা ভারতের নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে চলেছে। তাই, সুবানসিরি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ২০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা রয়েছে এই প্রকল্পের।

যে নবায়নযোগ্য শক্তি নিয়ে এত কথা হচ্ছে সেটা আসলে কি?

নবায়নযোগ্য শক্তি বা রিনিউয়েবল এনার্জি হলো এমন শক্তি, যা পুনরায় বা বারবার ব্যবহার করা যায়। ব্যবহারের ফলে শক্তির উৎসটি শেষ হয়ে যায় না। আর যেগুলো পুনরায় বা বারবার ব্যবহার করা যায় না, সেগুলো অনবায়নযোগ্য শক্তি। সেক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে, সুবানসিরি নবায়নযোগ্য জলবিদ্যুৎ প্রকল্প। বিদ্যুতের জাতীয় গ্রিডের ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য জলবিদ্যুৎকে গুরুত্বপূর্ণ ভাবা হয়। কেন? কারণ, নবায়নযোগ্য দুটি উৎস সৌর ও বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে অনেক সময় উৎপাদন ব্যাহত হতে বা কমে যেতে পারে। তখন ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য জলবিদ্যুৎ খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তবে, এই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন এর জন্য ভারতকে কিন্তু কম লড়াই করতে হয়নি। তাই, ভারত সরকার প্রকল্পটির নির্মাণকাজ ২০০৩ সালে শুরু করলেও প্রায় ২০ বছর সময় লেগে গেছে নির্মাণকাজ শেষ হতে।

আসলে, বাঁধ দিয়ে জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কারণে পরিবেশের ক্ষতি নিয়ে উদ্বেগ জানিয়েছিলেন পরিবেশবাদীরা। বিক্ষোভ হয়েছে, মামলা হয়েছে। আর সেই কারণেই নির্মাণকাজে দেরী হয়েছে। মামলার কারণে আট বছর স্থগিত ছিল নির্মাণকাজ। কিন্তু, ২০১৯ সালে ভারতের ন্যাশনাল গ্রিন ট্রাইব্যুনাল আবার কাজ শুরুর অনুমতি দেয়। প্রকল্পের ব্যয় কয়েক দফায় বৃদ্ধি পেয়ে ২১ হাজার ২৫০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে, যা প্রাথমিক বরাদ্দের চেয়ে তিন গুণ বেশি। অনেক বাধা বিপত্তির পরেও থেমে থাকেনি ভারত। বরং জলবিদ্যুৎকে উৎসাহিত করতে ভারত বড় বাঁধকে পরিবেশবান্ধব জ্বালানির মর্যাদা দিয়েছে। জীবাশ্ম জ্বালানি দিয়ে উৎপাদিত বিদ্যুতের পরিবর্তে জলবিদ্যুৎ ক্রয়কে অগ্রাধিকার দিতে প্রাদেশিক বিদ্যুৎ বিতরণকারীদের বাধ্য করছে। এছাড়া ভারতের বড় জলবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলোর অর্থনৈতিক প্রভাবও রয়েছে। বলা হয়, চীন ও পাকিস্তানের উত্তেজনাপূর্ণ সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোয় স্থানীয় অর্থনীতিকে চাঙা করছে এসব জলবিদ্যুৎ প্রকল্প।

তাই হয়তো, ভারত এতো কনফিডেন্ট। তাই, সুবানসিরির পরে দিবাং নিয়ে ভারতের প্ল্যানিং অলরেডি ছকা। ২ হাজার ৯০০ মেগাওয়াটের জলবিদ্যুৎ প্রকল্প দিবাং এর কাজ শুরুর পরিকল্পনা চূড়ান্ত করে ফেলেছে ভারত। নির্মাণকাজ শেষ হলে এটাই হবে ভারতের বৃহত্তম জলবিদ্যুৎকেন্দ্র। কিন্তু, এখন সবথেকে বড় প্রশ্ন সুবানসিরি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প চালু হবে কবে? সুবানসিরি বাস্তবায়ন করছে ভারতের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ন্যাশনাল হাইড্রো পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড মানে এনএইচপিসি। তারা জানিয়েছে, আগামী জুলাই থেকে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরু হবে। জলবিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটটি আগামী ডিসেম্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আর, ২০২৪ সালের শেষের দিকে জলবিদ্যুৎকেন্দ্রটির আটটি ইউনিটই চালু হবে বলে জানিয়েছে এনএইচপিসি।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version