গাজা প্রসঙ্গে কাশ্মীর, পাকিস্তানকে ওপেন চ্যালেঞ্জ ভারতের। ব্যাপক তরজা রাষ্ট্রপুঞ্জেও

।। প্রথম কলকাতা ।।

“গাজা পার্ট টু” জম্মু-কাশ্মীর? এক টুকরো জমিকে হাইফাই নিরাপত্তায় বাঁধছে ভারত। শ্রীনগরের মাটিতে কাশ্মীর বাঁচানোর মন্ত্র। গোপনে কোন ছক কষছে ভারত? রাষ্ট্রপুঞ্জেও প্যালেস্টাইন প্রসঙ্গে কাশ্মীর, ভারত রীতিমতো ধুয়ে দিল পাকিস্তানকে। কীসের আতঙ্কে সিঁটিয়ে উপত্যকা। এই টোটকাতেই গাজার ভয়কে জয় করবে কাশ্মীর। গাজার আতঙ্ক ফিরবে কাশ্মীরে? চান্স কতটা?পাকিস্তান উপত্যকায় ভয়ের বীজ বপন করলেও ভারত তা নির্মূল করতে জানে। শ্রীনগরের মাটিতে তোড়জোড় শুরু ভারতের। ঘটতে যাচ্ছে বড় কিছু। গাজা পার্ট টু এর আতঙ্ক উপড়ে ফেলতে সাংঘাতিক স্টেপ নিল মোদী সরকার।

সম্প্রতি রাষ্ট্রপুঞ্জে প্যালেস্টাইন প্রসঙ্গে উঠে আসে কাশ্মীরের কথা। রাষ্ট্রপুঞ্জে পাকিস্তানের স্থায়ী সদস্য মুনির আক্রম সম্প্রতি পশ্চিম এশিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে বলে বসেন, “প্যালেস্টাইন ও কাশ্মীরের অধিকৃত এলাকার বাসিন্দাদের উপরে অত্যাচার চালাচ্ছে যে সব রাষ্ট্র, এই নিরাপত্তা পরিষদেই তাদের মিত্র রাষ্ট্রেরা রয়েছে”। নাম উল্লেখ না-করলেও পাক প্রতিনিধির মন্তব্যের অন্যতম তির যে ভারতের দিকেই ছিল, তা নিয়ে ডাউট ছিল না। তাই ছেড়ে কথা বলেনি ভারতও। এর পাল্টা দিয়ে ভারতের প্রতিনিধি রবীন্দ্র বলেছেন, ‘একটি বিশেষ দেশের স্বভাবই হচ্ছে এ ধরনের মন্তব্য করা, কিন্তু ভারত সেই প্রসঙ্গে কোনও কথা বলবে না। যে ভূখণ্ডের কথা উল্লেখ করা হয়েছে তা ভারতীয় রাষ্ট্রের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এবং আমাদের দেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ, মন্তব্য ভারতীয় প্রতিনিধির। ভারতের কাছে কাশ্মীরের গুরুত্ব আলাদা। তাই ইজ়রায়েল-প্যালেস্টাইন যুদ্ধের প্রেক্ষিতে কাশ্মীরের নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে চায় প্রশাসন। এই বিষয়ে অলরেডি শ্রীনগরে উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠকও হয়ে গেছে। দ্বিতীয় ‘গাজা’ হবে না তো জম্মু কাশ্মীর?

এই ভাবনা থেকেই মূলত নিরাপত্তা নিয়ে প্ল্যানিং শুরু। জম্মু-কাশ্মীরের শ্রীনগরে ১৫ কর্পসের সদর দফতরে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর শীর্ষকর্তাদের মধ্যে বৈঠক হয়েছে। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে নতুন নিরাপত্তা পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আগামিদিনে যদি বিক্ষোভ শুরু হয় উপত্যকায়, তবে কীভাবে তা প্রতিরোধ সম্ভব, তা নিয়েও আলোচনা করা হয়। আলোচনা করা হয়েছে বিদেশি জঙ্গিদের গতিবিধি ও হিংসায় উসকানিতে তাদের ভূমিকা নিয়েও। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন জম্মু-কাশ্মীরের লেফটেন্যান্ট গভর্নরের উপদেষ্টা আর আর ভাটনগর, সেনাবাহিনীর নর্থান কম্যান্ডের কম্যান্ডার উপেন্দ্র দ্বিবেদী, জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল সহ একাধিক শীর্ষকর্তা। টিভি৯ এর রিপোর্ট অনুযায়ী, নিরাপত্তা বাহিনীর এক আধিকারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, অবস্থানগতভাবে কাশ্মীর ও গাজা অনেকটাই এক হওয়ায়, গাজার পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছেন উপত্যকাবাসী। নিরাপত্তা বাহিনীর আশঙ্কা, জম্মু-কাশ্মীরে ফের একবার বিক্ষোভ-অশান্তি শুরু হতে পারে। বিঘ্নিত হতে পারে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি। সেই কারণেই পরিস্থিতি মোকাবিলার ছক কষতে আগেভাগেই বৈঠক করা হল। কাশ্মীরকে গাজা হতে দেবেনা মোদী সরকার। আর তাই এই গ্র্যান্ড প্ল্যানিং।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের অগস্ট মাসে সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ অবলুপ্তি ও জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের পর উপত্যকার পথেঘাটে বিক্ষোভ-অশান্তি অনেকটাই কমে গিয়েছে। কিন্তু, জম্মু-কাশ্মীরে স্থানীয় জঙ্গির সংখ্যা একধাক্কায় অনেকটা কমলেও, উল্টোদিকে বিদেশি, বিশেষ করে পাকিস্তানি জঙ্গির গতিবিধি ও সন্ত্রাসে যোগ অনেকটাই বেড়েছে। চলতি বছরে উপত্যকায় ৪৬ জঙ্গিকে নিকেশ করা হয়েছে, এর মধ্যে ৩৭ জনই পাকিস্তানি। বিগত ৩৩ বছরে এই প্রথম স্থানীয় জঙ্গির তুলনায় চারগুণ বেশি বিদেশি জঙ্গিকে খতম করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। কিন্তু তারপরেও রিস্ক নিতে চাইছে না মোদী সরকার। এক চিলতে জায়গা, তা নিয়েই দুই দেশের মধ্যে দশকের পর দশক ধরে বিরোধ, শত্রুতা। নতুন করে যুদ্ধ বেধেছে ইজরায়েল ও প্যালেস্তাইনের জঙ্গি গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে। যে যুদ্ধে বলি হচ্ছে গাজা স্ট্রিপ, সেখানকার নিরপরাধ মানুষ। একদিকে যেমন হামাস গাজা স্ট্রিপ থেকে হামলা চালাচ্ছে, তেমনই বদলা নিতে গাজা স্ট্রিপে গোলাবর্ষণ করছে ইজরায়েল সেনা। দুই দেশের টানাপোড়েনে আখেরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গাজাই। আর গাজায় এই সঙ্কটই উদ্বেগ তৈরি করেছে জম্মু-কাশ্মীর নিয়েও। কিন্তু ভারত যে তার জন্য তৈরি হচ্ছে, আঁটঘাট বাঁধছে সেটাও দিনের আলোর মতো স্পষ্ট।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version