।। প্রথম কলকাতা ।।
জয়শঙ্করের মাস্টারস্ট্রোক, বন্ধু থেকে ডিরেক্ট শত্রু চীন-রাশিয়া? নয়াদিল্লির চাল, আমেরিকার বুকে আঘাত দিল। ভারতের মাটিতে কোন গুপ্তধনের সন্ধান পেলেন পুতিন?চীন কী বড় ভুল করলো? শি’কে সরিয়ে ভারতের দিকে রাশিয়া ঝুঁকছে কীসের টানে? চীনা ফৌজ দিল্লির আতশকাঁচের তলায়। ভারত-চীন সম্পর্ক কতটা ‘অস্বাভাবিক’? যে এতো বড় প্রেডিকশন করে দিলেন জয়শঙ্কর? আমেরিকায় বসে মস্কোর নাম নিলেন। বুকের পাটা আছে ভারতের। ভারতের চরম কূটনৈতিক চালের সামনে ফেইল করবে রথী-মহারথীরাও। আমেরিকার মাটিতে সেই প্রমাণ দিলেন জয়শঙ্কর।
কানাডা ইস্যুতে যখন মোদীর পাল্লা ভারী হচ্ছে, তখন নিউইয়র্কের বৈদেশিক সম্পর্ক সংক্রান্ত পরিষদের আলোচনায় ভারত খেললো সুক্ষভাবে। পশ্চিমা বিশ্বের দু চোক্ষের বিষ মস্কো। সব জেনে বুঝেও রাশিয়ার কথা তুললেন বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর। স্ট্রেটকাট বলে দিলেন বিশ্বের বিভিন্ন শক্তিধর দেশগুলোর মধ্যে ভারত রাশিয়ার সম্পর্ক সবথেকে স্থিতিশীল। বিশ্বের দুই শক্তিধর দেশ ভারত-রাশিয়া নিজেদের মধ্যে সাত দশক ধরে সম্পর্ক বজায় রেখেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বুকে লাগলেও সহ্য করতে হবে। কানাডার হয়ে কম বাড়াবাড়ি তো করছে না আমেরিকা কিন্তু, জয়শঙ্কর যা দিলেন আমেরিকা তা নিতে পারলে হয়। ভবিষ্যতে রাশিয়া আরও বেশি করে এশিয়ার কাছে আসবে। ইউরোপের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক ‘ভয়ঙ্কর খারাপ’। তাই, এখন রাশিয়া এশিয়ার উপর বেশি নির্ভর করছে। এই নির্ভরতা বাড়ার ইঙ্গিত স্পষ্ট জয়শঙ্করের কথায়। বুঝিয়ে দিলেন, পশ্চিমা বিশ্ব যতই রাশিয়াকে নিষেধাজ্ঞার জালে জড়াক ভারত-রাশিয়ার সম্পর্ক সুপারহিট। শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, জয়শঙ্করের প্রেডিকশন চীনের বুকেও বিঁধবে।
চিন-রাশিয়ার মধ্য সীমাহীন বন্ধুত্বে, মস্কো-নয়াদিল্লির ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক যে বড় এফেক্ট ফেলবে সেটা নিশ্চয়ই বলে বোঝাতে হবে না। কারণ, জয়শঙ্কর যে তুলনা টেনেছেন তাতে যুক্তরাষ্ট্র, চীন দুই দেশরই গাত্রদাহ শুরু হয়ে গেছে।ভারত-রাশিয়া স্থির সম্পর্ক ১৯৫০ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে। গত ৭০ বছর বিশ্ব রাজনীতি আমেরিকা-রাশিয়া, রাশিয়া-চিন, ইউরোপ-রাশিয়ার মতো অনেক সম্পর্কের উত্থানপতন দেখেছে। এই সব সম্পর্কের ভালো খারাপ সময় এসেছে গেছে। কিন্তু সোভিয়েত এবং সোভিয়েত পরবর্তী সময়ে ভারত-রাশিয়ার সম্পর্ক স্থিতিশীল বলেছেন জয়শঙ্কর। আমেরিকা, চীন চুপচাপ হজম করবে পুরোটা?যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি ঠেস না দিলেও, চীন কিন্তু ক্লিন বোল্ড। ২০২০ সালে গালওয়ান সংঘর্ষের পর ভারত-চীন সম্পর্কে অবনতি হয়েছে। দুই দেশের সম্পর্ক ‘অস্বাভাবিক’। এতে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কও এফেক্টেড হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিদেশমন্ত্রী জয়শংকর। করেছেন আরও বড় ভবিষ্যদ্বাণী।
বলেছেন সীমান্ত নিয়ে যে সমস্যা তৈরি হয়েছে, তা দীর্ঘমেয়াদি এতো সহজে মেটার নয়। চীনের ভুল ধরিয়ে দিয়েছে ভারত। বেজিংয়ের বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ এনে বিদেশমন্ত্রী গত তিন বছরে সীমান্ত নিয়ে চুক্তি ভঙ্গেরও অভিযোগ করেছেন। বেজিং এর বিরুদ্ধে এই ঘটনা দুই দেশের মধ্যে স্বাভাবিক সম্পর্ক তৈরির ক্ষেত্রে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে বলেও দাবি তাঁর। রাশিয়াকে কাছে টেনে চীনকে দুষছেন জয়শঙ্কর। টেনে এনেছেন কোভিডের সময় ২০২০ সালে কি ঘটেছিল সেই প্রসঙ্গ। ২০২০ সালে সারা বিশ্ব যখন কোভিড মহামারির আতঙ্কে ভুঁগছে, জারি করা হয়েছে লকডাউন, তা থেকে ফায়দা লোটার চেষ্টা করেছে বেজিং। লাদাখে নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম করার চেষ্টা করে চীনা ফৌজ কিন্তু, ভারতীয় সেনা শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলায়, চীনের চেষ্টা ব্যর্থ হয়।
জয়শঙ্করের চাল মারাত্মক, অঙ্ক কীভাবে বদলাতে পারে বুঝতে পারছেন? নিউইয়র্কের মাটিতে দাঁড়িয়ে ভারত খেলা ঘুরিয়ে দিল। কানাডার হয়ে সাফাই গাওয়া আমেরিকার সামনে রাশিয়াকে নিয়ে বড় ঘোষণা করে দম দেখালেন জয়শঙ্কর, আবার চীনকেও ধুয়ে দিলেন। রাশিয়া-চীনের মাঝে কি ধরলো ফাটল? জয়শঙ্কর বুঝিয়ে দিলেন কূটনীতি শিখতে হবে ভারতের কাছে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম