ভারত হিন্দুরাষ্ট্র ঘোষণা হতে পারে! মুসলিমদের ব্রেনওয়াশ জোরকদমে, দায়িত্ব বাড়বে সংখ্যাগুরুদের

।। প্রথম কলকাতা ।।

ইউনিফর্ম সিভিল কোড চালু হলেই কি ভারত হিন্দুরাষ্ট্র ঘোষিত হবে? ভারত হিন্দুরাষ্ট্র ঘোষণা হলে সংখ্যালঘু সঙ্কট নাকি সোনায় সোহাগা হবেন তারাই? খুব গুরুত্বপূর্ণ এবিষয় ভুল বোঝানোর চেষ্টা হচ্ছে। ফের যোগী আদিত্যনাথ ধ্বনি তুললেন হিন্দুরাষ্ট্র ঘোষণার। ঠিক কোন পথে এগোচ্ছে ভারত কী বলছে দেশের অভ্যন্তরীণ অবস্থা? আপনি নিজে চান ভারতের হিন্দুরাষ্ট্র হোক? না এর বিপক্ষে? কমেন্ট করে জানান প্রথম কলকাতাকে।

অযোধ্যার রাম মন্দির, তাৎক্ষণিক তিল তালাক বন্ধ করা, কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা লোপ। ভারতীয় জনতা পার্টি তাদের ম্যানিফেস্টোতে থাকা বড় বড় প্রতিশ্রুতি পূরণ করে ফেলেছে অলরেডি। মোদী যবে থেকে ইউনিফর্ম সিভিল কোড লাগুর সঙ্কেত দিয়েছেন তবে থেকে দেশে রীতিমত হইচই শুরু। এবারের বাদল অধিবেশনেই লোকসভা পেশ হতে পারে ইউনিফর্ম সিভিল কোড বিল। রাজ্যসভা কীভাবে এই বিল পাশ করানো যাবে তা নিয়ে রীতিমত চলছে কাজ। কিন্তু কেন এখন উঠছে হিন্দুরাষ্ট্রের প্রসঙ্গ? এটাই কি সংখ্যালঘুদের উস্কে দেওয়ার সঠিক সময়? কী চলছে তলায় তলায়। কেন এতটা চটে যাচ্ছেন মুসলিম সমাজের সাধারণ মানুষের থেকেও সেখানকার প্রধানেরা? সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমত ট্রেন্ডিং UCC ভারতে লাগু হলেই হিন্দুরাষ্ট্র ঘোষণা হবে ভারত। ওয়াকিবহাল প্রশ্ন তুলছেন ভারত কি এখন হিন্দুরাষ্ট্র নয়? তথ্য বলছে ভারতে ৭৮.৯ শতাংশ হিন্দুদের বাস।

কিন্তু ভারত হিন্দু দেশ ঘোষণা হওয়া মানেই কি সংখ্যালঘু বিশেষ করে মুসলিমদের ওপর অন্যায় অবিচার হবে? না এর সবথেকে বড় উদাহরণ হল তিন তালাক। মুসলিম মহিলারা আজ তাই মোদীতে মুগ্ধ। কারণ তিন তালাক বন্ধ হতে পারে এমনটা স্বপ্নেও কল্পনা করতে পারেননি বহু মুসলিম মহিলা। এখানে মনে রাখতে হবে ভারত পাকিস্তান বা বাংলাদেশ নয়। অবশ্য বাংলাদেশ সরকারও এবার কঠোর হচ্ছে সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার এক্ষেত্রে। ২০১৭ সালে যোগী আদিত্যনাথ বলেছিলেন ভারত হিন্দুরাষ্ট্র হলে যদি তাতে দেশের ও দেশের মানুষের ভালো হয় তাহলে এতে কোনও ভুল নেই। হিন্দুত্বই যে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রধানতম এজেন্ডা একথা সকলেরই জানা। কিন্তু সেই RSSর সাধারণ সম্পাদক দত্তাত্রেয় হোসাবেল চমকে দিয়েছিলেন। তাঁর দাবি ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করার দরকার নেই। ভারত এখনই হিন্দু রাষ্ট্র। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারত খাতায় কলমে হিন্দু রাষ্ট্র ঘোষণা হলেও হয়ত বাস্তবিক অবস্থায় বদলাবে না কোনও কিছুই। কারণ ভারতের সংবিধানএ সব ধর্মের সমান অধিকার রয়েছে। বরং এক্ষেত্রে সংখ্যালঘুরা হয়ত বড় সুযোগ সুবিধা পেতে পারে।

অবশ্য এসুযোগে বিরোধী রাজনৈতিক দলেরা সংখ্যলঘুদের ব্রেনওয়াশের কাজ শুরু করে দিয়েছে সেটা বুঝতে খুব একটা অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। মুসলিম সমাজের হত্তাকত্তা বিধাতারা ইতিমধ্যেই ইউনিফর্ম সিভিল কোড বিরোধ শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু জানেন কি বাস্তব অনেকটাই আলাদা৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ম্যাজিকে হিন্দুদের থেকেও বেশি মুগ্ধ মুসলিমরাই শুনে অবাক লাগছে তো। CSDS লোকনীতি-র বিশেষ সমীক্ষা বলছে মোদির কোন গুণ সবথেকে বেশি পছন্দ করেন দেশবাসী? উত্তর হিন্দুদের থেকেও বেশি শতাংশ মুসলিমরা মোদিকে সেরা বক্তা হিসেবে বেছেছেন। মোদির কথার জাদুতে যেমন মুগ্ধ ২৪ শতাংশ হিন্দু, তেমনই মুগ্ধ ২৯ শতাংশ মুসলিম। নতুন নীতি প্রয়োগের ক্ষেত্রে ১১ শতাংশ হিন্দু মোদির পক্ষে। অন্যদিকে মুসলিমদের সমর্থন ১৪ শতাংশ। ভারতের গণতন্ত্র রয়েছে দেশের ডিএনএতে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রীর একথা মনে রাখতে হবে। ছত্তিশগড়ের রায়পুরের কংগ্রেস বিধায়ক অনিতা শর্মা কংগ্রেসের অনেক নেতার এখন দাবি হিন্দুরাষ্ট্রের তাতে কংগ্রেসের উচ্চ পর্যায় কিন্তু চুপ।

কূটনৈতিক মহলের একাংশ বলছেন ভারত যদি হিন্দুরাষ্ট্র ঘোষিত হয় বাস্তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের দায়িত্ব বাড়বে।
দায়িত্ব থাকবে সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষার। বিজেপি এমন কোনও কাঁচা কাজ করবে না যাতে দেশের মান ক্ষুন্ন হয়। ভারত বর্তমানে বিশ্বে যে স্থানে নিজেদের নিয়ে যাচ্ছে তাতে সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে কোনও আপত্তিকর প্রশ্ন উঠুক কোনওদিনই চাইবে না মোদী সরকার। সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দুদের দায়িত্ব থাকবে সংখ্যালঘু সমাজের গণতান্ত্রিক, মানবিক ও রাষ্ট্রীয় অধিকার রক্ষা করা এবার দেখার পরিস্থিতি আদতে কোন পথে এগোয়৷

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version