Intelligence And Investigative Agencies of India: ভারতে রয়েছে ধুরন্ধর গোয়েন্দা সংস্থা! নাম শুনলেই কেঁপে ওঠে অপরাধীরা

।। প্রথম কলকাতা ।।

Intelligence And Investigative Agencies of India: ভারতে রয়েছে ধুরন্ধর কিছু গোয়েন্দা সংস্থা। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছে তাদের গুপ্তচর। যাদের নাম শুনলেই অপরাধীরা ভয় কেঁপে ওঠে। Raw, CBI, CID, ED, IB এরা কীভাবে সন্ত্রাসের আখড়া থেকে অপরাধীদের টেনে আনে? জানা আছে আপনার? আপনার জন্য রইল অপরাধীদের যম ভারতীয় কিছু সংস্থার ক্ষমতার কথা। অপরাধী তার ভাঁড়ারে যতই কুকর্ম লুকাক, এই সংস্থা গুলির চোখ এড়ানো বড্ড কঠিন।

Raw

ভারতের শত্রুর অভাব নেই। চীন পাকিস্তানের মতো দেশগুলি সবসময় ওঁত পেতে রয়েছে, কীভাবে ছলচাতুরি করে প্যাঁচে ফেলা যায়। তবে এই কাজ ভাবলেও অতটা সোজা নয়। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে কড়া নজর রেখেছে ভারতের রিসার্চ অ্যান্ড এনালাইসিস উইং অর্থাৎ raw। এটি ভারতের একটি গোয়েন্দা সংস্থা যাদের হাতের মুঠোয় রয়েছে পৃথিবীর কোনায় কোনায় থাকা অপরাধের তথ্য। এটি এমন একটি ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা, যা দেশকে সন্ত্রাস এবং অন্যান্য হুমকি থেকে রক্ষা করে। ১৯৬২ সালে ভারত-চীন যুদ্ধের পর ১৯৬৮ সালে এই সংস্থাটি গঠন হয়। এই গোয়েন্দা সংস্থার সদর দপ্তর রয়েছে নয়া দিল্লিতে। র নিজের সিক্রেট পদ্ধতিতে সমস্ত সন্ত্রাসীদের তথ্য সংগ্রহ করতে পারে এবং সন্ত্রাসীরা ঠিক কি কার্যক্রম চালাচ্ছে তা আগেভাগেই জানতে পারে। যদিও শুধুমাত্র সন্ত্রাসীদের জন্য নয়, এই সংস্থা গঠন করা হয়েছে যাতে এই এজেন্সি অন্যান্য প্রতিবেশী দেশের খবর সম্পর্কে সতর্ক থাকে। প্রতিবেশী দেশরা শত্রুতা করছে কিনা কিংবা তারা কোন অবৈধ কাজ করছে কিনা সেই বিষয়ের খবরও থাকে র-এর ঝুলিতে। এই গোয়েন্দা সংস্থার বহু অফিসারকে বিশ্বের নানান প্রান্তে পাঠানো হয়েছে। তারা সেখানে থেকে দেশের বাইরে তথ্য সরবরাহ করে। তাদের মূল উদ্দেশ্য ভারতকে সমস্ত বিপদ থেকে রক্ষা করা।

IB

আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আরেকটি সংস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভাবে কাজ করে সেটি হল আইবি অর্থাৎ ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো। তবে এই গোয়েন্দা সংস্থার মূল কাজ দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এটি অত্যন্ত সন্তর্পণে গোপন তথ্য সংগ্রহ করে। যাতে দেশে কোন রকমের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড না ঘটে। এই সংস্থা অনেক আগে থেকেই পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য প্রস্তুতি নিতে পারে। বিশেষ করে ভারতের সীমান্তের সঙ্গে শত্রু দেশের সীমান্ত লাগোয়া এলাকায় বিশেষভাবে নজরদারি চালায়। সীমান্তের যে কোনো গতিবিধির বিষয়ে এই গোয়েন্দা সংস্থা তথ্য সংগ্রহ করে এবং সীমান্ত এলাকায় বিপ্পজনক কার্যকলাপের সব ধরনের বিষয়ে ট্র্যাকিং করতে পারে। আইবি সর্বদা সংকট পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুতি নিয়ে থাকে। এটি মূলত দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে কাজ করে। ব্রিটিশ সরকারের আমলে ১৮৮৭ সালে আইবি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল, রাশিয়ান সৈন্যদের উপর নজরদারি রাখা। কারণ তৎকালীন সময়ে ব্রিটেন এবং রাশিয়ার সম্পর্ক এক্কেবারেই ভালো ছিল না। দেশ স্বাধীনতার পর নতুন রূপে এই সংস্থাটি তৈরি হয়। এর প্রধান কার্যালয় রয়েছে নয়া দিল্লিতে।

CBI

অনেকেই আছেন যারা আইবির সঙ্গে সিবিআই-কে গুলিয়ে ফেলেন। তবে দুটি সংস্থা একটু আলাদা. দুজনের মধ্যে রয়েছে সূক্ষ্ম পার্থক্য। একটি গোয়েন্দা সংস্থা আরেকটি তদন্ত সংস্থা। সিবিআই মূলত কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে রয়েছে। এটি জালিয়াতি, দুর্নীতি, খুন প্রভৃতি তদন্ত করে থাকে। দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক অপরাধের তদন্ত করা এই সংস্থার মূল কাজ। এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৪১ সালে। ১৯৬৩ সালের এপ্রিলে এর নতুন নামকরণ হয় সেন্টাল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন। এর সদর দপ্তর রয়েছে নয়া দিল্লিতে। দুর্নীতি মোকাবেলা, অর্থনৈতিক অপরাধ এবং জাতীয় নিরাপত্তা সম্পর্কিত বিষয়গুলি বিস্তৃতভাবে তদন্তের প্রসঙ্গ আসলেই প্রথমের নাম আসে সিবিআই-এর। এটি মূলত ভারতের অফিশিয়াল ইন্টারপোল ইউনিট।

ED

বর্তমানে লোকের মুখে মুখে রয়েছে ED-র নাম। এর পুরো কথা ইনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এটি একটি অনুসন্ধানকারী এজেন্সি, তবে এর কাজ অন্যান্য সংস্থা থেকে এক্কেবারে আলাদা। সদর দপ্তর রয়েছে নিউ দিল্লিতে। এটি তৈরি হয়েছিল ১৯৫৬ সালে। এর আঞ্চলিক দপ্তর রয়েছে কলকাতা, চেন্নাই, দিল্লি, চন্ডিগড়, এবং মুম্বাইতে। এছাড়াও জোনাল অফিস রয়েছে পুনে, ব্যাঙ্গালোর, চন্ডিগড়, শ্রীনগর, চেন্নাই, দিল্লি, গুয়াহাটি, হায়দ্রাবাদ, জয়পুর, কলকাতা, পাটনা, লখনৌ প্রভৃতি জায়গায়। ভারত সরকারের বিত্ত মন্ত্রণালয়ের রাজস্ব বিভাগের অধীনে এই সংস্থা কাজ করে। এমনকি এই সংস্থায় আইএএস, আইপিএস অফিসাররাও কাজ করে থাকেন। বিভিন্ন হাইপ্রোফাইল মামলার তদন্ত করে। বিশেষভাবে নজর রাখে ভারতে বিদেশের সঙ্গে জড়িত অবৈধ সম্পত্তির উপর। ধন-সম্পত্তি সম্বন্ধিত অর্থাৎ আর্থিক টানাপোড়েনের ক্ষেত্রে আইনিভাবে সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করে। এছাড়াও কেউ যদি অবৈধভাবে সম্পত্তি উত্তরোত্তর বাড়াতেই থাকে সেক্ষেত্রে অনুসন্ধান চালায় ইডি।

CID

ভারতের পুলিশ বিভাগের সর্বোচ্চ সংস্থা হল ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট অর্থাৎ সিআইডি। এটি একটি তদন্তকারী সংস্থা। যাদের প্রধান কাজ হল অপরাধ মূলক মামলার তদন্ত করা। সেক্ষেত্রে রয়েছে অপহরণ, ডাকাতি, খুন, ধর্ষণ ইত্যাদি। দেশের বিভিন্ন রাজ্যের অপরাধমূলক কাজের গুপ্তভাবে তদন্ত করে সিআইডি অপরাধীদের খুঁজে বার করে।

NCB

নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো অর্থাৎ এমসিবির মূল কাজ হল ভারতের মাদক ব্যবসা এবং বড় আকারের মাদক চোরাচালান বন্ধ করা। ১৯৮৬ সালের মার্চ মাসে এই সংস্থা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ব্যুরো ভারতের এক ধরনের গোপন বিভাগ। NCB দেশের কোনায় কোনায় লুকিয়ে করা মাদক ব্যবসা এবং মাদক চোরা চালানকারীদের সনাক্ত করে। ভারতে কেউ যদি অবৈধভাবে মাদক গাঁজার মতো দ্রব্যের ব্যবসা করেন কিংবা পাচার করেন তাহলে এনসিবির চোখ এড়িয়ে যাওয়া বেশ মুশকিল। এর সদর দপ্তর রয়েছে দিল্লিতে। এছাড়াও বাকি অফিসগুলি রয়েছে কলকাতা, মুম্বাই, চেন্নাই, চন্ডিগড়, পাটনা, ইন্দোর, যোধপুর, আহমেদাবাদ, বাঙ্গালুরু প্রভৃতি জায়গায়। UNDCP, INCB ইত্যাদির মতো অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থার সাথে সম্পর্ক উন্নত করাও NCB-এর কাজ। NCB এর প্রধান কাজ হল অবৈধ মাদক নির্মূল করা এবং গোপনে অবৈধ মাদক পাচারের সাথে জড়িত অপরাধীদের গ্রেফতার করা।

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version