Omicron Sub-variant BF.7: করোনার নয়া রূপ ভারতের জন্য কতটা মারাত্মক? কী বলছেন বিশেষজ্ঞরা?

।। প্রথম কলকাতা ।।

Omicron Sub-variant BF.7: চীন (China) সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বর্তমানে ওমিক্রনের সাব-ভ্যারিয়েন্ট বিএফ.৭ (Omicron Sub-variant BF.7) এর সংক্রমণ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বিগ্ন গোটা বিশ্ব। ভারতে এই পর্যন্ত ওমিক্রনের এই সাব-ভ্যারিয়েন্টের চারটি কেস রিপোর্ট করা হয়েছে। যার মধ্যে দুটি গুজরাটে (Gujarat) এবং দুটি উড়িষ্যায় (Odisha)। চীনে করোনা ভাইরাসের এই নয়া রূপ রীতিমত দাপট চালাচ্ছে। এখনো পর্যন্ত ওমিক্রনের এই সাব-ভ্যারিয়েন্ট ভারতকে বিপর্যয়কর ভাবে প্রভাবিত করেনি। একমাস আগে বিএফ.৭ প্রথম সনাক্ত করা হয়েছিল। ইতিমধ্যেই কেন্দ্র সমস্ত রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে সতর্ক থাকতে এবং সংক্রমণের সংখ্যাকে যথাযথভাবে ট্র্যাক করতে জিনোম সিকোয়েন্সিং বাড়াতে নির্দেশ দিয়েছে। যেহেতু এর R ফ্যাক্টর অন্যান্য সাব ভ্যারিয়েন্টের তুলনায় একটু বেশি তাই আশঙ্কায় রয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বিএফ.৭-এ সংক্রমিত ব্যক্তি একসঙ্গে ১০ থেকে ১৮ জন ব্যক্তিকে সংক্রমিত করতে পারে।

‘India TV’-তে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ন্যাশনাল আইএমএ কোভিড ট্রাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান ড. রাজীব জয়দেবন (Dr. Rajeev JayaDevan) বিএফ.৭-কে বলেছেন ওমিক্রনের নাতি(Great Grandson of Omicron)। তিনি আইএএনএস-এর সাথে কথা বলার সময় জানান, বিএফ.৭ হল ওমিক্রনের প্রপৌত্র। যে ব্যক্তিরা করোনায় পূর্বে সংক্রমিত হয়েছেন, কিংবা টিকা নিয়েছেন তাদের সংক্রমিত করার ক্ষমতা আসল ওমিক্রনের চেয়ে অনেক বেশি। এই বৈশিষ্ট্যকে বলা হয় ইমিউন ইভিসিভনেস। এটি আসল ওমিক্রনের মতো হলেও এতে রয়েছে অতিরিক্ত মিউটেশন। ২০২১ সালের নভেম্বরের দক্ষিণ আফ্রিকায় ওমিক্রনের দেখা পাওয়ার পর মাত্র দেড় মাসের মধ্যে গোটা বিশ্বে ছেয়ে গিয়েছিল। ভারতে প্রথম ওমিক্রনের বিএ ওয়ান(BA 1) সংস্করণ দেখা দেয়, তারপর আসে বিএ টু( BA 2)। এই রূপটি ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারিতে করোনার তৃতীয় তরঙ্গের সৃষ্টি করে। তারপর থেকে বিএ টু ভারতে সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ালেও, কোন বড় তরঙ্গ সৃষ্টি করেনি।

টিকা এবং স্বাভাবিকভাবে অর্জিত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থেকে বহু মানুষ কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ থেকে বেঁচে গিয়েছেন। যখন পশ্চিমা দেশগুলি ওমিক্রনের ‘বিএ ফাইভ’ ভ্যারিয়েন্টে সংক্রমিত, তখনো ভারতের বেশিরভাগ অংশে আনুপাতিকভাবে এই রূপের সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পায়নি। মাত্র কয়েক মাস আগেই বিএফ.৭ এর প্রথম রিপোর্ট করা হয়। বিজ্ঞানীরা প্রাথমিকভাবে করোনার এই নয়া রূপটি নিয়ে বেশ উত্তেজিত ছিল। কারণ একসাথে বেশ কয়েকটি দেশে সংক্রমণ ছড়াতে দেখা গিয়েছে। বিশেষ করে বেলজিয়াম, ডেনমার্ক, জার্মানি এবং ফ্রান্সেও ওমিক্রনের এই সাব-ভ্যারিয়েন্টের দেখা মিলেছে। স্বাভাবিকভাবেই তখন উদ্বেগ তৈরি হয়, যে এটিই হয়ত ওমিক্রনের অন্যান্য সাব ভ্যারিয়েন্টের মতোই দ্রুত ছড়িয়ে যাবে। যদিও এই মুহূর্তে বিএফ.৭ ভারতে যে খুব প্রভাব ফেলেছে এমন কোন ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে না, তবে ক্রমাগত নজরদারির প্রয়োজন।

বিশেষ করে গোটা বিশ্বে করোনা ভাইরাসের দ্রুত পরিবর্তনশীল প্রকৃতির কারণে বহু মানুষ নিজেদের শরীরে এই ভাইরাসকে বহন করতে পারেন। কোভিড ১৯ ক্রমাগত পরিবর্তিত হচ্ছে, বারংবার মিউটেশনের ফলে ভাইরাস মানুষের দেহে ভালোভাবে মানিয়ে নিতে এবং দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা অর্জন করেছে। বিশ্বব্যাপী গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ওমিক্রনের সাব-ভ্যারিয়েন্ট বিএফ.৭ অত্যন্ত সংক্রামক এবং অন্যান্য রূপের তুলনায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এর উপসর্গ ওমিক্রনের অন্যান্য সাব-ভ্যারিয়েন্টের মতোই। আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই, একটু সতর্ক এবং সাবধানতা মেনে চললেই করোনার এই রূপকে সহজে রুখে দেওয়া যাবে।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version