।। প্রথম কলকাতা।।
Anger Issues: হাসি ,কান্না ,ব্যথা ,কষ্ট, আনন্দ এই সব কিছুই যেমন মানুষের আবেগ , ঠিক তেমনই হল রাগ। প্রতিটা মানুষের রাগ থাকাটা অত্যন্ত স্বাভাবিক বিষয়। এটা কারও বেশি হয়, কারও কম হয়। বিভিন্ন কারণে মানুষের মধ্যে রাগ সৃষ্টি হতে পারে । হয়তো পড়াশোনা কিংবা কাজ সম্পর্কিত কোন কারণ অথবা শারীরিক বা পারিবারিক কোনো বিষয়কে কেন্দ্র করে সাময়িক কালের জন্য রাগ প্রকাশ পেতে পারে। তবে ছোটখাটো কোন বিষয়ে রাগ, বারবার রেগে যাওয়া, রেগে গিয়ে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ না করতে পারা এইগুলি কিন্তু একেবারেই স্বাভাবিক বিষয় নয়। রাগ থেকে মানুষ অনেক সময় হিংস্র হয়ে ওঠে । আর এই রাগ শারীরিক সহ মানসিকভাবেও অসুস্থ করে তোলে মানুষকে।
মনোবিজ্ঞানীরা বর্তমানে বলছেন, এখন সারা বিশ্বে মানুষের মধ্যে মানসিক চাপ ভীষণভাবে বেড়ে চলেছে। আর এই মানসিক চাপের কারণে এমন অনেক মানুষই রয়েছেন যারা নিজেদের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছেন। তাদের রাগ এতটাই বেড়ে যাচ্ছে যে তা ক্লিনিক্যাল ডিসঅর্ডার নামক একটি রোগ সৃষ্টি করছে। সমাজ বিজ্ঞানীরা সেটাকে এজ অফ অ্যাংজাইটিও নাম দিয়েছেন। বর্তমানে ক্লিনিক্যাল অ্যাংজাইটি ডিসঅর্ডার সহ আরও বিভিন্ন ধরনের মানসিক রোগে আক্রান্ত হওয়ার পেছনে একটা বড় কারণ হচ্ছে অতিরিক্ত রাগ। এই অতিরিক্ত রাগ থেকেই ফোবিয়া, অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসঅর্ডার, পোস্ট ট্রম্যাটিক ডিসঅর্ডার কিংবা প্যানিক অ্যাটাক এর মত রোগের সম্মুখীন হচ্ছে শিশু থেকে শুরু করে বয়স্করাও।
মানুষের অতিরিক্ত রাগ সমাজে অপরাধ মূলক ঘটনা বাড়িয়ে তুলতে পারে। অসামাজিক কাজ এমনকি সহিংসতা আরও বৃদ্ধি পেতে পারে। কারণ রাগের সময় মানুষের আত্মনিয়ন্ত্রণ অনেকটাই কমে যায়। তবে কিছু সময় পরে সে নিজেকে শান্ত করে নিতে পারে। কিন্তু এই রাগ যদি রোগে পরিণত হয় তাহলেই বিপদ। এতে শুধুমাত্র কোন ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্য নয় ক্ষতিগ্রস্ত হয় শারীরিক স্বাস্থ্যও। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, মাথা ব্যথা, উচ্চ রক্তচাপ সবকিছুই হতে পারে , শুধুমাত্র অতিরিক্ত রাগের জন্য।
* সমস্যার সমাধানের উপায়
সমস্যা তৈরি হলে তার সমাধানও অবশ্যই রয়েছে। নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য , কিছু কিছু পরিস্থিতিতে নিজেকে আটকে ফেলার জন্য কাউন্সিলিং করা খুব প্রয়োজন । চিকিৎসকের পরামর্শ এক্ষেত্রে সবথেকে ভালো কাজ করে। এছাড়াও যোগা প্রশিক্ষণ, বিভিন্ন থেরাপি, আচরণ নিয়ন্ত্রণ এবং রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে । নিজের খারাপ গুণগুলি বদলে ফেলার জন্য জীবন যাপন পদ্ধতিকেও খানিকটা বদলে ফেলতে হয়। এমন কিছু করে নিজের বাড়তি সময়টুকু কাটানোর চেষ্টা করুন যা করতে আপনার ভালো লাগে। হয়তো কারও রান্না করতে ভালো লাগে, কারও গান গাইতে, বই পড়তে, ছবি আঁকতে, ঘুরতে যেতে ভালো লাগে।
অর্থাৎ নিজেকে ভালো রাখার পথ খুঁজে বার করুন। আর তার সঙ্গে অবশ্যই খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনুন। পর্যাপ্ত পরিমাণে রেস্ট দিন মস্তিষ্ককে। মানসিক চাপ প্রত্যেকটি মানুষের রয়েছে আর এটা থাকবেও। সে কাজের ক্ষেত্রে হোক কিংবা ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে। তাই বলে নিজের মানসিক স্বাস্থ্যকে আরও খারাপ করে তোলার কোন কারণই নেই। বরং আপনার মন ভালো থাকলে যতই চাপ থাকুক না কেন দিনের শেষে সেটা খুব সহজেই কাটিয়ে ওঠা যায়। নিজের রাগকে নিয়ন্ত্রণ করার কাজ শুরু করুন আজ থেকেই। যাতে এই রাগ আপনাকে না অসুস্থ করে তুলতে পারে।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম