বড় প্ল্যান ! এসব দেশে গোপনে ডেরা বেঁধেছে ভারত, চীনের স্ট্রিং অব পার্লসও ব্যাকফুটে ?

।। প্রথম কলকাতা ।।

ভারতের সামরিক জালে জড়িয়ে যাচ্ছে গোটা বিশ্ব। এই নেটওয়ার্ক কিন্তু মারাত্মক। জানেন, কোন দেশের কোথায় গোপনে ডেরা বেঁধেছে ভারত? চীনকে টেক্কা দিতে সমুদ্রপথে বড় প্ল্যান ভারতীয় নৌবাহিনীর। ছাড় পায়নি আকাশপথ ও। ক্ষমতা বৃদ্ধির লড়াইয়ে ভিনদেশে ছক্কা হাঁকাচ্ছে ভারতের সামরিক ঘাঁটি। বিদেশের মাটি থেকে অপারেট করা ভারতের সামরিক ঘাঁটি সম্পর্কে কতটুকু জানেন? ভারত মহাসাগরের সামরিক উপস্থিতি দ্রুত বাড়াচ্ছে চীন। স্ট্রিং অফ পার্লস এর অংশ হিসেবে বিভিন্ন দেশে বন্দর ও পরিকাঠামো গড়ে তুলছে দেশটা। পিছিয়ে নেই ভারত ও। করে চলেছে একের পর এক পদক্ষেপ। গোপনে বাড়িয়ে চলেছে সামরিক ঘাঁটির সংখ্যা। টার্গেট চীন-পাকিস্তানকে জব্দ করা। এইসব গোপন ডেরায় ভারত শত্রু নিধনের ছক সাজায়।

বিদেশে ভারতের প্রথম সামরিক ঘাঁটি তাজিকিস্তানে। এখানে তাজিক এয়ারফোর্সের সঙ্গে যৌথভাবে ফারখোর বায়ুসেনা ঘাঁটি পরিচালনা করে ভারতীয় বিমানবাহিনী। এটা ইসলামাবাদ থেকে আকাশপথে মাত্র ১৫ মিনিট দূরে। ইরানের চাবাহার বন্দর থেকে ফারখোর ঘাঁটিতে সামরিক সরঞ্জাম সহজেই পৌঁছে যায়। এছাড়া, ভুটানে ভারতীয় বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে মোতায়েন রয়েছে। ভুটানের স্থল ও আকাশ সীমা রক্ষা করে যে কোনও বিদেশি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে। জানলে অবাক হবেন! একটি ভারতীয় সামরিক প্রশিক্ষণ দল স্থায়ীভাবে পশ্চিম ভুটানের হা জং-এ রয়েছে! যারা রয়্যাল ভুটান আর্মি ও রয়্যাল বডিগার্ড অফ ভুটানকে প্রশিক্ষণ দেয়। নেপালের সঙ্গেও ভারতের সম্পর্ক ভালো। পরিবর্তে, প্রতিবেশী দেশকে নিরাপত্তা দেয় ভারতীয় সেনাবাহিনী। দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যে সমঝোতা এতটাই মজবুত যে, ভারত দাবি করে নেপালের উপর কোনও হামলা হলে তাকে ভারতীয় ভূখণ্ডের ওপর আক্রমণ হিসেবেই গণ্য করা হবে।

নেপালের সুরখেতে ভারতীয় বায়ুসেনার একটি এয়ার স্ট্রিপ ও রয়েছে। এদিকে ভারত মহাসাগরে জাহাজ চলাচলের উপর নজর রাখার জন্য উত্তর মাদাগাস্কারে পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করেছে ভারতীয় নৌসেনা। সেখানে, নৌ-যোগাযোগের মাধ্যমকে ইন্টারসেপ্ট করার জন্য আধুনিক রাডার ও নজরদারি সরঞ্জাম রয়েছে। অন্যান্য নৌবাহিনীর অভিযানের গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের জন্য ভারতীয় নৌবাহিনীর এই পোস্টটি ২০০৭ সালে গঠন করা হয়। এমনকি দ্বীপরাষ্ট্র মলদ্বীপের নিরাপত্তার ভার পুরোটাই ভারতীয় নৌসেনার হাতে। প্রতিবেশী দ্বীপরাষ্ট্রের সামুদ্রিক নিরাপত্তা ভারতীয় নৌসেনার নজরদারিতে থাকে। জলদস্যুদের মোকাবিলায় উপকূলে নজরদারি রাডার স্টেশন নির্মাণ করেছে নৌসেনা। ভারত ও ভিয়েতনামের মধ্যেও শক্তিশালী সামরিক সম্পর্ক রয়েছে। ভিয়েতনাম তাদের ক্যাম রন বে নৌ ও বিমান ঘাঁটির মধ্য দিয়ে দক্ষিণ চিন সাগরে ভারতীয় নৌসেনার প্রবেশের পথ খুলে দিয়েছে। তাছাড়া সেশেলস সরকারের অনুরোধে ভারত জলদস্যুর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সেশেলসের সীমান্ত রক্ষায় হেলিকপ্টার এবং প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম সরবরাহ করে সাহায্য করে ভারত।

২০০৮ সালে কাতারকে বহিরাগত হুমকি থেকে রক্ষা করতে ভারত তার সামরিক সম্পদ নিয়ে সেখানে ঘাঁটি গঠন করে। ভারতীয় নৌবাহিনী নিরাপত্তা প্রদান করে এবং পরিবর্তে সমুদ্রে অবাধ প্রবেশাধিকার ভারতীয় নৌবাহিনীকে দেওয়া হয়। ওমান প্রথম উপসাগরীয় দেশ যারা ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক আনুষ্ঠানিকভাবে স্থাপন করেছে। ২০০৮ সালে ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করে ওমান। চুক্তি অনুযায়ী, ভারতীয় রণতরী সেখানে অবাধে নোঙর করতে পারবে। দেশটির রাজধানী মাস্কাটে রয়েছে ভারতীয় নৌসেনার একটি বিমানঘাঁটি। একইভাবে ভারত এবং মোজাম্বিকের মধ্যে মজবুত সামরিক সম্পর্ক রয়েছে। ২০০৩ সালে আফ্রিকান ইউনিয়ন সম্মেলন এবং ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম সম্মেলনের সময় ভারতীয় নৌবাহিনী মোজাম্বিকের সামুদ্রিক নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়েছিল। তালিকায় রয়েছে মরিশাস। মরিশাসের উত্তর আগালেগা দ্বীপে একটি সামরিক ঘাঁটি গড়ে তুলেছে ভারত।

সেখানে উপকূলীয় নজরদারি রাডার সিস্টেম স্থাপন করেছে। মরিশাসের নিয়ন্ত্রণাধীন এই আগালেগা দ্বীপটি ভারত মহাসাগরে অবস্থিত। বাদ নেই সিঙ্গাপুর ও। সিঙ্গাপুরের চ্যাঙ্গি নৌ ঘাঁটি ভারতীয় ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা ভারতের জন্য অত্যন্ত ইম্পর্ট্যান্ট। কারণ ৭০ শতাংশ চীনা পণ্য মালাক্কা প্রণালী দিয়ে এই এলাকা পার করে। এতগুলো সামরিক ঘাঁটি গড়েছে ভারত। বিদেশের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের ওপর নজর রাখতে, প্রভাব বিস্তার করতে, চীনকে চাপে ফেলতে এক ইঞ্চিও ফাঁক রাখতে নারাজ আমাদের দেশ ভারতবর্ষ।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version