Amarnath Yatra: সারাবছর অমরনাথ যাত্রার সুযোগ, তৈরি হচ্ছে বিশেষ রাস্তা! রয়েছে অলৌকিক দৃশ্য

।। প্রথম কলকাতা ।।

Amarnath Yatra: অমরনাথ যাত্রা (Amarnath Yatra) হবে আরও সহজ। পূণ্যার্থীরা অত্যন্ত কম সময়ে বাবা অমরনাথের দর্শন পাবেন। সার্থক হবে জীবন। ভারত সরকার পূণ্যার্থীদের জন্য বানাবে বিশেষ টানেল। কথিত আছে অমরনাথের গুহায় শিবলিঙ্গের দর্শন করলে ভক্তরা জন্ম এবং মৃত্যুর বন্ধন থেকে মুক্তি পান। দুর্গম রাস্তা পেরিয়ে এক রাশ বিশ্বাস সহকারে বাবা অমরনাথের কাছে পৌঁছলে পুণ্য অর্জন হয়। দেবাদিদেব ভক্তদের সমস্ত পাপ ক্ষমা করে দেন।

পূণ্যার্থীদের সুবিধার্থে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অমরনাথের নতুন রাস্তা তৈরি হবে। এবার অমরনাথকে জোড়া হবে প্রায় ১১ কিলোমিটার টানেলে। আপাতত পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই রাস্তা তৈরির কাজ চলবে প্রায় ৬০ মাস ধরে। অমরনাথের দুর্গম রাস্তা সম্পর্কে কমবেশি সবাই জানেন। এই রাস্তা পার করতে গিয়ে প্রাণের ঝুঁকিও থাকে। তবুও ভক্তরা সমস্ত বাধা পেরিয়ে দেবাদিদেবকে একবার দর্শন করতে প্রতিবছর অমরনাথে ভিড় জমান।

সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চন্দনওয়াড়ি থেকে সঙ্গম পর্যন্ত ২২ কিমির এমন রাস্তা তৈরি করা হবে যা সব আবহাওয়াতেই ব্যবহার করা যাবে। এই রাস্তা একবার তৈরি হলে তখন আর শ্রীনগরে যেতে হবে না, জম্মু থেকে সরাসরি লাদাখ যাওয়া যাবে। এই রাস্তা তৈরির দায়িত্বে রয়েছে, জাতীয় সড়ক মন্ত্রক ন্যাশনাল হাইওয়ে অ্যান্ড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন। আপাতত এই প্রকল্পের বিডিং শুরু হতে চলেছে ১৩ই ফেব্রুয়ারি থেকে। ৫ বছরের মধ্যে এই কাজ শেষ হবে। বিশেষ করে জুলাই আর আগস্ট মাসে যখন বর্ষা নামে তখন এই রাস্তার চারিদিকে যেন বিপদ ওঁত পেতে থাকে। অমরনাথ রয়েছে ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৩ হাজার ফুট উঁচুতে। পবিত্র গুহায় পৌঁছাতে গেলে নয় পায়ে হেঁটে নয় ঘোড়ায় চেপে যেতে হয়। অমরনাথে যাওয়ার দুটি রাস্তা রয়েছে। একটি পহেলগাম থেকে, অপরটি বালতাল থেকে। পহেলগাম থেকে যাওয়ার যে রাস্তা সেটি খুব একটা ঝুঁকিপূর্ণ না হলেও সময় লাগে প্রায় চার দিন। বালতাল থেকে যাওয়ার দূরত্ব অনেক কম, মাত্র ১৫ কিলোমিটারের রাস্তা কিন্তু এই রাস্তা এতটাই খাঁড়া, যে পথ দিয়ে যেতে অনেকেই ভয় পান। বিশেষ করে জুলাই আগস্টে যখন বর্ষার জল পড়ে তখন রাস্তায় কোনায় কোনায় যেন বিপদ লুকিয়ে থাকে। প্রতিবছরই তীর্থযাত্রীরা কোন না কোন দুর্ঘটনার মুখে পড়েন। ২০২২ সালে হরপা বানের কারণে অমরনাথে প্রায় ১৫ জন তীর্থযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। তবে সরকার আশা করছে, নতুন রাস্তা তৈরি হলে এই দুর্ঘটনার সংখ্যা অনেকটা কমবে, মোট ২২ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে অর্ধেকটাই হবে টানেল। টানেল থাকবে প্রায় ১১ কিলোমিটার লম্বা। দুই বছরের মধ্যেই হয়তো এই প্রকল্প চূড়ান্ত হতে পারে, তারপরই শুরু হয়ে যাবে নির্মাণ কাজ।

শীতকালে অমরনাথ গুহার ছাদ থেকে প্রতিবছর জল চুঁয়ে চুঁয়ে বরফ জমে তৈরি হয় সুন্দর শিবলিঙ্গ। যাকে বলা হয় বাবা বরফানি। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে অমরনাথ দেবাদিদেবের একটি অন্যতম পবিত্র তীর্থস্থান। যা রয়েছে শ্রীনগর থেকে প্রায় ১৪১ কিলোমিটার দূরে এবং সমুদ্রতল থেকে প্রায় ৩৮৮০মিটার উঁচুতে। প্রচলিত কাহিনী অনুযায়ী, পঞ্চদশ শতকে অমরনাথের গুহা আবিষ্কার করেছিলেন এক মেষপালক। ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, অমরনাথের এই গুহা আবিষ্কার করেছিলেন ঋষি ভৃগু। অমরনাথের গুহা নিয়ে নানা মুনির নানান মত। অমরনাথকে কেন্দ্র করে পৌরাণিক কাহিনীর ঘনঘটার শেষ নেই। পুরাণ বলছে দেবাদিদেব পার্বতীকে এই স্থানে নিয়ে এসেছিলেন, উদ্দেশ্য ছিল অমরত্ব শিক্ষা প্রদান। শিব কৈলাস পর্বতে সমস্ত কিছু ত্যাগ করে তবেই অমরনাথে আসেন। শিব চন্দ্রকে ত্যাগ করেছিলেন চন্দনওয়াড়িতে, আর গলা থেকে সাপ ত্যাগ করে রাখেন শেষনাগ হ্রদে। এমনকি পুত্র গণেশকে রেখে এসেছিলেন মহা গনেশ পর্বতে। অমরনাথের গুহার মধ্যেই তিনি দেবী পার্বতীকে জীবন এবং অমরত্ব সম্পর্কে শিক্ষা প্রদান করেন।

৫১ সতী পিঠের মধ্যে অমরনাথ অন্যতম। কথিত আছে এখানে নাকি দেবী সতীর গোড়ালি এবং গলা পড়েছিল। অমরনাথ কেন্দ্র করে আরেকটি রহস্যজনক বিষয় কথিত আছে। বলা হয়, এটি বিশ্বের এমন এক শিব লিঙ্গ যা চাঁদের আলোর উপর নির্ভর করে বাড়তে থাকে আবার কমতে থাকে। প্রাকৃতিকভাবে প্রতিবছর নিয়ম করে এখানে বরফের শিবলিঙ্গ তৈরি হয়। বড় শিবলিঙ্গের পাশে আবার বরফের দুটি ছোট শিব লিঙ্গ থাকে, যাকে বলা হয় মা পার্বতী এবং গণেশের প্রতীক।

তাই যারা দুর্গম পথের কারণে অমরনাথ যেতে চান না, তাদের জন্য সরকারি এই উদ্যোগ রীতিমত অভিনব। এই খবরে শিব ভক্তদের মনে এখন খুশির হাওয়া।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version