Wuhan Part 2: গোটা বিশ্বে ‘উহান পার্ট টু’ আতঙ্ক, চীনের কলকাঠিতেই শক্তি বাড়াচ্ছে অভিশপ্ত করোনা!

।। প্রথম কলকাতা ।।

Wuhan Part 2: ২০১৯ সালের ডিসেম্বর থেকে কিছু লক্ষণ নিয়ে অসুস্থ মানুষ উহানের (Wuhan) হাসপাতালে (Hospital) ভর্তি হতে থাকে। চীন ২০১৯ এ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে (World Health Organisation) সাফাই দিয়েছিল, উহানে নাকি নিউমোনিয়ার (pneumonia) মতো একটি রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। তখন চীন( China) কিন্তু সেভাবে কোন বিধি নিষেধ আরোপ করেনি। কোভিডের প্রাদুর্ভাব থাকা সত্ত্বেও চীন উহানে লকডাউন (lock down) আরোপ করতে একটু দেরি করে। তিন বছর পর সেই চীনেই দেখা দিয়েছে করোনা সুনামি (Corona Tsunami)। বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, হয়ত গোটা বিশ্ব আবার ‘উহান পার্ট টু’ দেখতে চলেছে।

চীনের উহান থেকে একটি নতুন এবং প্রাণঘাতী সংক্রামক ব্যাধি করোনা ভাইরাস গোটা বিশ্বজুড়ে গত তিন বছর ধরে তোলপাড় সৃষ্টি করেছে। এই করোনা মহামারী শুধুমাত্র কোটি কোটি মানুষের প্রাণ নেয়নি, সারা বিশ্বের শক্তিশালী অর্থনীতিকে ধুলোর সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছে। আমেরিকা, রাশিয়া, ব্রিটেনের মতো ধনী রাষ্ট্রগুলিতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় ধস নেমেছিল। ভারতেও (India) নেমে এসেছিল করোনা অভিশাপ। ২০২২ এর মাঝামাঝি সময় থেকে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ যখন করোনা আতঙ্ক থেকে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে, তখন চীনে আবার নতুন করে শুরু হয়েছে করোনা মহামারী।

•মহামারীকে উন্মুক্ত আমন্ত্রণ

চীন হঠাৎ করেই জিরো কোভিড নীতি বাতিল করে দেয়। চীনের এই সিদ্ধান্ত যেন মহামারীকে উন্মুক্ত আমন্ত্রণ জানিয়েছে। চীনে ঝড়ের গতিতে করোনা মহামারী ছড়িয়ে পড়ছে। প্রতিদিন প্রায় লক্ষাধিক মানুষ সংক্রমিত হচ্ছেন এবং বহু সংখ্যক মানুষ মারা যাচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতেও চীন সরকার বিদেশ থেকে আগত মানুষের জন্য কোয়ারেন্টাইন নিয়ম তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যা ভালো চোখে দেখছে না বহু দেশ। শুধুমাত্র যাদের জ্বর বা অন্যান্য ফ্লুর মতো উপসর্গ রয়েছে সেই সমস্ত যাত্রীদের বিমানবন্দরে পরীক্ষা করা হবে। অন্যান্যদের কোভিড পরীক্ষা হবে না। চীন সরকার জিরো কোভিড নীতিতে আটকে রেখেছিল সাধারণ জনগণকে। কিন্তু ধীরে ধীরে চীনের জনগণ সেই নীতির বিরুদ্ধে সরকারকে ক্রমাগত চাপ দিতে থাকে। ভাঙতে থাকে তাদের ধর্য্যের বাঁধ। দেশটিতে এখন ওষুধের বিশাল ঘাটতি। চীনা সরকার তাদের নাগরিকদের ঐতিহ্যবাহী ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। চীনের স্বাস্থ্য কমিশন কিছু বিদেশীদের দেশে প্রবেশ করা সহজ করতে বিধি-নিষেধ শিথিল করেছে। নাগরিকদের ধীরে ধীরে পর্যটনের জন্য আবার বিদেশ ভ্রমণের অনুমতি দেওয়া হবে। যা বহু দেশের হোটেল এবং সংশ্লিষ্ট ব্যবসার জন্য রাজস্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। যদিও যাত্রীদের ৪৮ ঘন্টা আগে করোনা শংসাপত্র জমা দিতে হবে এবং মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক।

 

• তিন বছর আগের অপকর্মের পুনরাবৃত্তি

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চীন আবার তিন বছর আগের সেই সংকটকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরছে। দেশটিতে ৮ই জানুয়ারি থেকে আন্তর্জাতিক যাত্রীদের কোন কোয়ারেন্টাইন প্রয়োজন হবে না। চীন মনে করছে, করোনা খুব একটা ছোঁয়াচে নয়। তাই কোভিড ‘এ’ ক্যাটাগরি থেকে সরিয়ে ‘বি’ ক্যাটাগরিতে রাখা হয়েছে। চীন এখন সেই অপকর্মের পুনরাবৃত্তি করছে যা তিন বছর আগে উহানে করেছিল। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীন যদি সঠিকভাবে বিধি নিষেধ আরোপ করত, হয়ত সারা বিশ্ব আজ এই পরিস্থিতি দেখত না। ডিসেম্বরে চীন সব জানা সত্ত্বেও লকডাউন আরোপ করেছিল ২০২০ সালের ২৩শে জানুয়ারি এসে। তত দিনে অনেকটা দেরি হয়ে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, চীন বারংবার করোনা সংক্রান্ত তথ্য লুকিয়েছে। যার কারণে সারা বিশ্বে হু হু করে ছড়িয়ে পড়ে সংক্রমণ। উহানে যে চিকিৎসক সর্বপ্রথম এই ভাইরাসের কথা বলেছিলেন তাকে চীনা সরকার শুধুমাত্র উপেক্ষাই করেনি বরং তার বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানোর অভিযোগ তুলেছে। চীনের গাফিলতির কারণে অল্প সময়ের মধ্যে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাস।

•আগামী তিন মাস চীনের জন্য ভয়ঙ্কর!

বিশেষজ্ঞরা অনুমান করছেন, চীনে করোনার খুব বিপ্পজনক তরঙ্গ আসতে চলেছে। আগামী ৯০ দিনের মধ্যেই চীনের ৬০ শতাংশ এবং বিশ্বের জনসংখ্যার ১০ শতাংশ মানুষ করোনায় সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছে। যদি এই ভাবেই সংক্রমণের হার চলতে চায় থাকে তাহলে আগামী তিন মাসে চীনের প্রায় ৯০ কোটি মানুষ সংক্রমিত হবেন। দেশটির প্রায় লক্ষাধিক মানুষের মৃত্যু ঘটবে। এই তিন মাসে চীনে তিনটি তরঙ্গ আঘাত হানতে পারে। জানুয়ারির মাঝামাঝি সংক্রমণের সংখ্যা থাকবে সর্বোচ্চ।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version