Gita Path at Brigade: কলকাতাতেই কেন গীতাপাঠের আসর! মমতা ব্যানার্জী আসবেন ? মোদীর রাজনৈতিক না ধর্মীয় চ্যালেঞ্জ

।। প্রথম কলকাতা ।।

Gita Path at Brigade: কেন কলকাতার বুকেই গীতাপাঠ করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী? রাজনীতির বাইরে বেরিয়ে ভাবুন, তাতে মঙ্গল হিন্দুদের গীতাপাঠ অনুষ্ঠানে বিজেপির কর্মীদের মানতে হবে চরম নিয়ম! নিয়মের কোনও এদিক ওদিক হবে না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পাঠানো হল নিমন্ত্রণ পত্র, তিনি কী আসবেন? হিন্দুত্বের বড় চর্চা পশ্চিমবঙ্গের বুকে নেপথ্যে কারণ রাজনৈতিক নাকি ধর্মীয়? ২৪ ডিসেম্বরই কেন রাখা হল গীতাপাঠের এই অনুষ্ঠান? রাজনীতির বাইরে বেরিয়ে এমূহুর্তে এধরণের অনুষ্ঠানের কেন দরকার পড়ল? বাংলায় টেট পরীক্ষা ডেট বদলে আবার এই ২৪ এ ডিসেম্বরেই রাখা হয়েছে নেপথ্যে কারণটা রাজনৈতিক হলেও হতে পারে? বিতর্ক বিভিন্ন মহলে অভিযোগ উঠেছে রাজ্যের তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে। আসল কারণ পড়ে খুঁজছি আপনি কি জানেন এই গীতাপাঠ অনুষ্ঠানের আয়োজন কারা করেছেন?

বিজেপি কিন্তু এর আয়োজক নয়। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই গীতাপাঠ অনুষ্ঠানের জন্য আমন্ত্রণ করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত দ্বারকামঠের শংকরাচার্য স্বামী সদানন্দ সরস্বতী। যতটা শোনা যাচ্ছে গোটা অনুষ্ঠানের সূচনা হবে একটি শোভাযাত্রার মাধ্যমে সেই শোভাযাত্রার অন্যতম আকর্ষণ হল মহাভারতের যুদ্ধস্থল কুরুক্ষেত্রের মাটি। এই শোভাযাত্রার মধ্যে দিয়ে দ্বারকাপীঠের শংকরাচার্য যখন মঞ্চে উঠবেন সেই সময় গাওয়া হবে কাজি নজরুল ইসলামের গান ‘হে পার্থসারথি!…ভীতজনে কর হে নিঃশঙ্ক’ এই গানের সঙ্গেই বাজবে ৬০ হাজার শঙ্খ। হিন্দুদের গীতাপাঠে মুসলিম কবির গান? এ নিয়ে দ্বন্দ্ব থাকলে ভারত সেবাশ্রম সংঘের সন্ন্যাসী স্বামী প্রদীপ্তানন্দ পরিস্কার বলে দিয়েছেন এই অনুষ্ঠান ধর্ম, মতামত নির্বিশেষে সবার জন্য নজরুল ইসলামের গান বাংলার মন্দিরগুলোয় গাওয়া হয় এটা তো নতুন কিছু না।

বিজেপি বিরোধী অনেকে মানুষেরই বক্তব্য বাংলাকে উত্তরপ্রদেশ বানিয়ে দেওয়া হচ্ছে নাকি? কিন্তু যদি আপনি হিন্দু হয়ে থাকেন তাহলে বলুন তো এই গীতাপাঠ অনুষ্ঠানে ক্ষতিটা কী আছে? অনেকের আবার এটাও দাবি হয়ত ভারতের হিন্দুরাষ্ট্র ঘোষণার পথে এটাই হতে পারে প্রথম ধাপ। ২৪ ডিসেম্বর গীতাজয়ন্তী তাই এই দিনটার গুরুত্ব অপরিসীম। এই কর্মসূচি নিয়েছে ‘অখিল ভারতীয় সংস্কৃত পরিষদ’। বিজেপি নেতাদের এদিন কড়া নির্দেশ দেওয়া আছে ২৪ তারিখ ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে কেউ যাতে বিজেপির ঝাণ্ডা নিয়ে হাজির না হয়। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মতো হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলি চাইছে না এই অনুষ্ঠানকে রাজনীতি রঙে রাঙানো হোক। সূত্রের খবর, এ বিষয়ে বঙ্গ-বিজেপি নেতৃত্বকেও সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মূল অতিথি হলেও একে রাজনীতির প্লাটফর্ম বিজেপি তৈরি করতে চাইছে না, কিন্তু ভিক্টোরিয়া ইস্যুর পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি উপস্থিত থাকবেন এই অনুষ্ঠানে? এটা একটা বড় প্রশ্ন এইমূহুর্তে দাঁড়িয়ে বহু গণমাধ্যম এনিয়ে খবরও করছে রীতিমত।

এক্ষেত্রে বেশ কিছু মহল বলছেন এমূহুর্তে রাজনীতির গন্ডির বাইরে বেরিয়ে এধরণের অনুষ্ঠানের দরকার কেন পড়ল? সবথেকে বড় কথা কলকাতার বুকে দাঁড়িয়ে এক্ষেত্রে কী এটা ধরে নেওয়া যেতে পারে সনাতন ধর্মের প্রচারকে এবার রাষ্ট্রীয় স্তরে গুরুত্ব দেওয়া হবে, আর এটাই তার প্রথম পদক্ষেপ। অনেকেরই দাবি, সনাতন ধর্মের প্রচার গুরুত্ব পেলেও বেশিরভাগই তা রাজনৈতিক ইস্যুতে ব্যবহার হয়ে থাকে ভোটই এলেই যেন মানুষ বেশি ঝোঁকে এর আচার আচরণ পালনে নেপথ্যে ভোটব্যঙ্কের আশা। আগে  বিভিন্ন পাড়ায়, মন্দিরে, আখরায় এধরণের গীতাপাঠের আসর বসত এখন যে হয় না সেটা নয়। তবে গুরুত্ব আরও বাড়াতে হবে সেটাই প্রয়াস। সেখানে প্রথমবার নানা বিষয় মাথায় রেখে এত বড় উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবি করে। যদিও অনেকেই বলতে পারেন এখানে আমন্ত্রিত প্রধানমন্ত্রীরও তো রাজনৈতিক পরিচয় আছে তবে তার থেকেও তো ওপরে ধর্মীয় পরিচিতি আর বিভিন্ন গণমাধ্যমে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে এই ইস্যুতে যে খবর বের হচ্ছে সেখানে বলাই বাহুল্য যে রাজ্যে এত বড় অনুষ্ঠান হচ্ছে সেখানকার মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ করা হচ্ছে এটাই তো স্বাভাবিক ও প্রাসঙ্গিক বিষয়। সবথেকে বড় কথা দুজনেরই পরিচয় এনারা হিন্দু।

এক্ষেত্রে সবথেকে কৌতুহলে বিষয় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এই অনুষ্ঠানে আসবেন কিনা! এখানে আনন্দবাজার পত্রিকা সহ বেশ কিছ গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে গীতাপাঠ কর্মসূচির আয়োজক সংস্থার সহ-সভাপতি নির্গুণানন্দ ব্রহ্মচারী বলেছেন কর্মসূচির সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক সম্পর্ক নেই। মুখ্যমন্ত্রী আসতে রাজি হলে তাঁকেও যথাযথ সম্মানে স্বাগত জানানো হবে। প্রধানমন্ত্রীর মঞ্চেই থাকবে তাঁরও আসন। এবার তিনি আসবেন কি আসবেন না সেটা সময় বলবে। এদিন যে গোটা দেশের নজর থাকবে কলকাতার ওপর এটা বলাই বাহুল্য। গীতাপাঠের এই আয়োজনের মধ্য দিয়ে রাজ্যের সংখ্যাঘরিষ্ট হিন্দু সম্প্রদায়কে আরো ঐক্যবদ্ধ করবে বলেই মনে করছেন আয়োজকরা।

 

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version