Bata Shoes History: ভারতে বাটা জুতোর এত জনপ্রিয়তা কেন? ইতিহাস জানলে চোখে জল আসবে

।। প্রথম কলকাতা ।।

Bata Shoes History: গোটা ভারত জুড়ে জুতোর অন্যতম একটি ব্র্যান্ডের নাম বাটা (Bata)। শুধু ভারত নয় জগৎ জোড়া এই জুতোর বেশ সুখ্যাতি রয়েছে। বাটা (Bata) ভারতবর্ষে সর্বপ্রথম তার আউটলেট খুলেছিল হুগলির কোন্নগরে। যেটি এখনো যথাস্থানে রয়ে গিয়েছে। সেই ১৯৩৪ সাল থেকে আজ পর্যন্ত ভারতের মনে ভালোবাসা জায়গা করে নিয়েছে বাটা।

বাটার নাম শুনলেই মানুষের চোখের সামনে ভেসে ওঠে একটা ভালো কোয়ালিটির জুতো। অনেকেই বাটার জুতো ব্যবহারে অভ্যস্ত এবং এই ব্র্যান্ডটিকে বেশি পছন্দ করেন। কিন্তু জানেন কি, এই জুতো কোম্পানি ভারতে বিপুল জনপ্রিয়তা পেলেও, ভারতীয় কোম্পানি নয়। এটি একটি বিদেশি কোম্পানি। হয়তো ভাবছেন একটা বিদেশি কোম্পানি হয়েও ভারতে এত জনপ্রিয়তা পেল কীভাবে ? মাত্র দুটো ঘরে শুরু হয়েছিল বাটার ব্যবসা, আজ সেই কোম্পানি সারাবিশ্বে রাজ করছে। যদিও সফলতার শীর্ষে পৌঁছানোর পথটা একেবারে সোজা ছিল না, উপরন্তু কাঁটায় ভর্তি ছিল।

চেকোস্লোভাকিয়ার ছোট্ট গ্রামে ১৮৯৪ খ্রিস্টাব্দে টোমাস বাটা শুরু করেছিল জুতোর দোকান। পরিবারগত ভাবে জুতো তৈরি কিংবা সারাই টোমাসের পেশা ছিল। কিন্তু শুধুমাত্র জীবিকা নির্বাহের জন্য তারা জুতো বানাত। সর্বপ্রথম জুতোর ব্যবসা শুরু করেন টোমাস বাটা। ৩২০ ডলার ধার করে কিনে ফেলেন জুতো সেলাই মেশিন। সাথে নিয়েছিলেন নিজের ভাই এবং বোনকে। ওই গ্রামে দু কামরার একটি ঘর ভাড়া নিয়ে শুরু করেন জুতোর ব্যবসা। কিন্তু তখন টোমাসের ভাগ্য একেবারেই সাথ দেয়নি। কর্মচারী ছিল কিন্তু কাঁচামালের জন্য টোমাসকে আবার ধার করতে হয়েছিল। জুতো বিক্রি না হওয়ায় ভাই-বোন তাকে ছেড়ে চলে যায়। কিন্তু মনের অদম্য জেদ ধরে রেখেছিল টোমাস বাটা।

প্রচুর লোকসানের পরেও তিনি প্রায় ৬ মাস ধরে জুতা বানাতে থাকেন। বাজারেও তাঁর বানানো জুতোর চাহিদা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে, তখন তিনি ঠিক করেন আরো প্রচুর কাঁচামাল নিয়ে আসবেন। সেই অনুযায়ী করেন ধার। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত সেই জুতা বিক্রি বন্ধ হয়ে যায়। সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়েন টোমাস, পা থেকে মাথা পর্যন্ত ঋণে ডুবে যান। ঋণ শোধ করতে পারেননি, উপরন্তু ভালোভাবে খেতে পর্যন্ত পেতেন না। এই অবস্থায় টোমাসকে দেউলিয়া ঘোষণা করা হয়। তখন তিনি তাঁর তিন কর্মচারীর সাথে ইংল্যান্ডে চলে আসেন এবং একটি জুতো কোম্পানিতে মজুরের কাজে নিযুক্ত হন।

অন্য কোম্পানিতে মজদুরের কাজ করলেও তাঁর স্বপ্ন কিন্তু বিন্দুমাত্র ভেঙে যায়নি। ৬ মাস পর তিনি তাঁর তিন সঙ্গীকে নিয়ে আবার নিজের কোম্পানির কাজ শুরু করেন। তারপর থেকেই তাঁকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। সফলতা লাভ করতে থাকেন প্রায় দু গুণ বেশি। মানুষ ধীরে ধীরে চিনতে শুরু করে বাটা কোম্পানিকে । ১৯১৬ সালে প্রায় ৬০০ মজদুর কাজ করত বাটাতে। সেই সময় হিসাব অনুযায়ী কাজ দেওয়ার সবথেকে বড় কোম্পানি হয়ে উঠেছিল বাটা।

বাটা ব্যবসার টার্নিং পয়েন্ট হয়ে উঠেছিল ভারত। রাবার এবং চামড়ার জন্য থমাস বাটার ছেলে থমাস জে বাটা ভারতে আসেন, সময় তখন ১৯৩১ সালে। আজ ভারতের যত্রতত্র রয়েছে বাটা কোম্পানির শোরুম। মানুষ বাটার জুতো চেনে মূল্যের থেকে বেশি তার কোয়ালিটির জন্য। বাটা কোম্পানির জুতোর গুণমান নিয়ে খুব কম প্রশ্ন রয়েছে। অথচ দাম বহু মানুষের সাধ্যের নাগালে।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version