কোকো দ্বীপে কোন অমূল্য রতন ? মারাত্মক স্ট্র্যাটেজি চীনের, ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের হাতে অদৃশ্য বলয়

।। প্রথম কলকাতা ।।

কোকোতে কীসের মোহ? কেন জাঁকিয়ে বসছে চীন? টেনশন বাড়ছে নয়াদিল্লির। ইন্দো প্যাসিফিকে চীনকে রুখতে উঠে পড়ে লেগেছে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, অস্ট্রেলিয়া। খতরনাক স্ট্র্যাটেজি খাটাচ্ছে বেজিং। ড্রাগনদের ট্রাম্প কার্ড কোকো আইল্যান্ড। কতটা রিস্কে ভারত? ভারত নিয়ন্ত্রিত আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের একেবারেই কোল ঘেঁষে রয়েছে কোকো আইল্যান্ড। কোকোকে ভূরাজনৈতিক কৌশলগত দিক থেকে অনেক বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন পর্যবেক্ষকরা। এক সেকেন্ডের জন্যও কোকো কে হাতছাড়া করতে নারাজ চীন। কেন কী আছে মিয়ানমারের ছোট্ট দ্বীপ কোকো আইল্যান্ডে? নয়াদিল্লির টেনশনের কারণটাই বা কী?

ভারত মহাসাগরকে ক্যাপচার করতে চাইছে বেজিং। কোকো আইল্যান্ডসে সামরিক ঘাঁটি গড়ে তোলার পাশাপাশি গোয়েন্দা প্রযুক্তি বসিয়েছে দেশটা। নির্মাণ করেছে যুদ্ধবিমান অবতরণের উপযোগী এয়ারস্ট্রিপ। ভারত মহাসাগরে নিজেদের কন্ট্রোল বাড়াতে পুরোদমে চেষ্টা চালাচ্ছে দেশটা লাভ আছে। বেইজিং কোকো দ্বীপে স্থাপিত গোয়েন্দা প্রযুক্তি দিয়ে শ্রীলংকা থেকে মালাক্কা প্রণালি পর্যন্ত ভারত মহাসাগরের বড় অঞ্চলজুড়ে নজরদারি চালাতে পারে। কোকো আইল্যান্ড থেকেই ভারতের সামরিক কার্যকলাপের ওপরেও নজরদারি চালাতে পারে। শুরুটা এখন নয়। ১৯৯৪ সালেই রাডার স্টেশন তৈরি করে নজরদারি শুরু করে চীন। ওই বছরই কোকো দ্বীপপুঞ্জের পাঁচটি দ্বীপের মধ্যে দুটি চীনকে ইজারা দিয়েছে মিয়ানমার।

আসলে বিশেষজ্ঞদের একাংশ বলছেন, চীনের একটি পুরনো স্ট্র্যাটেজি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ‘বন্ধু’ দেশের রক্ষাকারীর ভূমিকা নিয়ে সেই দেশে পরিকাঠামো ও লগ্নি প্রসারের রাস্তা তৈরি করা। তারপর নিজেদের স্বার্থ হাসিল করাই টার্গেট থাকে চীনা সরকারের। উদাহরণ দিয়ে বললে বুঝতে সুবিধা হবে মিয়ানমারের ক্ষেত্রেও চীনের সেই চেনা স্ট্র্যাটেজি। রোহিঙ্গা প্রশ্নে তারা পাশে দাঁড়িয়েছে মিয়ানমারের। আর রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে মিয়ানমারের আলোচনাতে প্রভাব খাটাচ্ছে বেইজিং।
পাকিস্তান ও আছে এই তালিকায়। কিন্তু চীনের সঙ্গে পেরে ওঠা সহজ কথা নয়। ভারতীয় প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, দক্ষিণ চীন সাগরের পাশাপাশি গোটা ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দ্রুত আধিপত্য বিস্তারের পথে হাঁটতে চাইছে শি জিনপিং প্রশাসন। আর সেক্ষেত্রে তুরুপের তাস হয়ে উঠছে কোকো ।যা ভারতের নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। এটা সুখবর নয় যুক্তরাষ্ট্রের জন্যেও।

কারণ চীনকে ঠেকানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সব কৌশলের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্রাটেজি। ভারত এবং প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের যত মিত্র দেশ আছে, এই ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্রাটেজিতে তাদেরকে একটা চীন-বিরোধী জোটে জড়ো করতে চায়। যে জোটের লক্ষ্য- সামরিক, অর্থনৈতিক, প্রযুক্তিগত এবং কূটনৈতিক। তবে সবকিছুর উপরে মূল লক্ষ্য একটাই- চীন যেন কোনো ভাবেই যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বের এক নম্বর ক্ষমতাধর দেশের অবস্থান থেকে বিচ্যুত করতে না পারে। ফলে বিষয়টা এরকম, চীন ভার্সেস ভারত, যুক্তরাষ্ট্র সহ তাদের মিত্র দেশ এখন দেখার সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আধিপত্য বিস্তারের লড়াইয়ে কে কাকে টেক্কা দেয়।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version