।। প্রথম কলকাতা ।।
Money in Bank: যে ব্যাঙ্কে টাকা রেখে নিশ্চিত আপনি, আপনার সেই টাকা ব্যাঙ্ক কী করে জানেন? ব্যাঙ্ক আপনাকে সুদ দেয় কোথা থেকে? ব্যাঙ্কের কাছে এত টাকা কোথা থেকে আসে টাকা? সহজ কথায় কীভাবে টাকা উপার্জন করে একটা ব্যাঙ্ক? ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা সঞ্চয় সত্যিই নিরাপদ তো?
ব্যাঙ্ক আপনার হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ টাকা কি লকারে রেখে দেয়, নাকি সেই টাকাই ব্যাঙ্কের উপার্জনের মূল সোর্স? ধরুন আপনি যদি ব্যাঙ্কে ১০০ টাকা রাখেন , তাহলে সেই ১০০ টাকায় সেভিংস অ্যাকাউন্টে ৪ শতাংশ সুদ পাবেন আপনি, সেই সুদের টাকা কোথা থেকে আসে ব্যাঙ্কের কাছে? প্রথমে সোজা হিসেবে আসি। আপনার ১০০ টাকা রাখলে ব্যাঙ্ক সেই টাকা অন্য গ্রাহককে লোনে দিয়ে দেবে। আর সেই অন্য গ্রাহকের থেকেই ৮ পারসেন্ট ইন্টারেস্ট রেট চার্জ করবে ব্যাঙ্ক। এর মানে লোন নেওয়া গ্রাহক ব্যাঙ্ককে ফিরিয়ে দেবে ১০৮ টাকা। যার মধ্যে ১০৪ টাকা ৪ পারসেন্ট সুদ সহ আপনাকে দেবে ব্যাঙ্ক। এতো গেল সোজা হিসেব। আসলে ব্যাঙ্কের মুনাফা অর্জনের একটা নয় রয়েছে একাধিক পথ।
ব্যাঙ্কগুলি কম সুদের হারে তহবিল ধার করলেও,তারা যখন ঋণ দেয় তখন কিন্তু তুলনামূলকভাবে উচ্চ হারে সুদ নেয়। এই সুদের হারের পার্থক্যকে নেট ইন্টারেস্ট মার্জিন বলা হয়। এটি ব্যাঙ্কগুলির আয়ের অন্যতম উল্লেখযোগ্য উৎস। গ্রাহকরা তাদের সেভিংস অথবা কারেন্ট অ্যাকাউন্টে যে টাকা জমা করেন। সেটা হল সেই অর্থ যা ব্যাঙ্কগুলি ধার করে। এর পাশাপাশি ব্যাঙ্কগুলি ফিক্সড ডিপোজিট বা রেকারিং ডিপোজিটের মতো পরিষেবার উপর মোটা ঋণ আদায় করে। এছাড়া, হোম লোন, পার্সোনাল লোন, কার লোন, এবং অন্যান্য আর্থিক পণ্যের উপরও সুদ নিয়ে আয় করে ব্যাঙ্কগুলি। এই দুই সুদের হারের মধ্যে পার্থক্যই ব্যাঙ্কগুলির আয়ের প্রধান উৎস।
ব্যাঙ্কিং সেক্টরের আয়ের আরেকটি প্রধান উৎস হল ইন্টারচেঞ্জ ফি ডেবিট কার্ড বা ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে লেনদেন করার জন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি বাড়তি টাকা নিয়ে থাকে। কিছু কেনাকাটার সময় যখন একজন গ্রাহক তার কার্ড সোয়াইপ করেন। তখনই সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীর উপর একটি নির্দিষ্ট চার্জ ধার্য করা হয়। লেনদেনের বেশিরভাগ মূল্যই গ্রাহকের ব্যাঙ্কে যায়। বাকিটা যায় ব্যবসায়ীর ব্যাঙ্কে।
লেনদেনের এই মূল্য ছাড়াও, প্রতিটি ব্যাঙ্ক তাদের বিভিন্ন পরিষেবার জন্য আলাদা আলাদা মূল্য নিয়ে থাকে। যে ব্যাঙ্ক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের এটিএম কার্তাদের ছাড়া অন্য ব্যাঙ্কগুলির এটিএম থেকে
গ্রাহকদের প্রতি মাসে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক লেনদেন করার অনুমতি দেওয়া হয়। এই সীমার বাইরে এটিএম থেকে টাকা তুললে গ্রাহকদের একটি নির্দিষ্ট মূল্য দিতে হয়। কিছু কিছু ব্যাঙ্ক আবার নির্ধারিত সীমার বাইরে নিজেদের এটিএম থেকেও টাকা তোলার জন্য অতিরিক্ত মূল্য নেয়।
https://www.facebook.com/100069378195160/posts/714674774188456/?mibextid=NTRm0r7WZyOdZZsz
কিছু কিছু ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টে ন্যূনতম ব্যালেন্স রাখতে হয়। যদি গ্রাহকের ব্যালেন্স এই সীমার নিচে নেমে যায়। তবে তাঁকে একটি নির্দিষ্ট মূল্য জরিমানা দিতে হয়। ক্রেডিট কার্ড বিল পরিশোধের সময়সীমা পেরিয়ে গেলে গ্রাহকদের লেট পেমেন্ট ফি দিতে হয়। এই জরিমানার পরিমাণ বিভিন্ন ব্যাঙ্কে বিভিন্ন রকম থাকে। এছাড়াও রয়েছে বিনিয়োগ মূল্য। যে ব্যাঙ্কগুলিতে বিনিয়োগ পরিষেবা আছে তারা বিনিয়োগ ফি-ও আরোপ করে থাকে। তারা ক্লায়েন্ট বিনিয়োগ এবং অন্যান্য সম্পর্কিত পরিষেবা পরিচালনার জন্য এই ধরনের ফি আরোপ করে।
এছাড়াও ফোরেক্স অপারেশন মানে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলি বৈদেশিক মুদ্রার দালাল হিসেবে কাজ করে।
এই কর্মকাণ্ড থেকেও ব্যাঙ্কগুলির আয় হয়। থার্ড পার্টি প্রোডাক্টের উপর কমিশনও আছে। ব্যাঙ্কগুলি তাদের উপভোক্তাদের কাছে মিউচুয়াল ফান্ড বা বীমা পণ্য বিতরণের মাধ্যমে নির্দিষ্ট কমিশনও অর্জন করে। আর সুরক্ষা কতটা? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাধারণত একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে রাখা অর্থ নিরাপদ।
এমনকী মন্দার সময়েওতবে পুরোটাই ব্যালেন্সের পরিমাণ এবং অ্যাকাউন্টের প্রকারের উপর নির্ভর করে
সেই অনুযায়ী কারও টাকা নিরাপদ, কারও নয়।