Inspirational story: এমএ, বিএড পাশ করে লোকাল ট্রেনে শাড়ি-কুর্তি বিক্রি বৃষ্টির! চোখে জল আনবে এই লড়াকু মেয়ের গল্প

।। প্রথম কলকাতা ।।

 

Inspirational story: এমএ, বিএড কম্প্লিট করে ট্রেনে ট্রেনে শাড়ি-কুর্তি ফেরি করছেন বাঁকুড়ার বৃষ্টি পাল। সংসার চালাতে বেছে নিয়েছেন হকারির রাস্তা। এই তীব্র দাবদাহে বৃষ্টির লড়াইকে কুর্নিশ আট থেকে আশির। বাঁকুড়ার এই লড়াকু নারীর গল্প শুনলে অনুপ্রাণিত হবেন আপনিও। চোখ ভেজাবে বৃষ্টি পালের জীবনের এই গল্প। বৃষ্টির এই লড়াইকাহিনী ইতিমধ্যেই আলোড়ন ফেলেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

 

তিনি বাঁকুড়ার বাসিন্দা, নাম সুপ্রিয়া পাল। যদিও মানুষ তাকে চেনে বৃষ্টি নামেই। কারণ রোজ এই নামেই ট্রেনে ট্রেনে শাড়ি ফেরি করেন ভূগোলে মাস্টার্স, বি.এড করা এই মেয়েটা। শুরুর দিকটা কঠিন মনে হলেও আজকে এই লোকাল ট্রেনটাই হয়ে উঠেছে তার স্বর্গ। লড়াকু বৃষ্টির এই কঠিন সফর আপনার চোখে জল এনে দিতে বাধ্য।

 

বাঁকুড়ার এই মেয়েটার অতীত ঘাঁটলে জানা যায়, ভূগোলে অনার্স করেছিলেন তিনি। তারপর মাস্টার্সও করেন। চাকরির আশায় ভর্তি হন বিএড কলেজে। সেখানেও ভালো নম্বর নিয়ে পাশ করেন সুপ্রিয়া পাল ওরফে বৃষ্টি। তবে চাকরি আর কোথায়? চাকরি তো মেলেইনি, উল্টে একটি বেসরকারি সংস্থা থেকে চাকরি খুইয়ে বসেন তার স্বামী। এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে সংসার চালাবেন সেই ভাবনায় রাতের ঘুম উড়ে যাওয়ার জোগাড়।

 

তবে কথায় আছে না, যার কেউ নেই তাকে নিজেকেই ঘুরে দাঁড়াতে হয়। হ্যাঁ, বৃষ্টিও ঘুরে দাঁড়িয়েছিলেন। আর পাঁচজনের মত ভেঙে না পড়ে, বেছে নিয়েছেন হকারির রাস্তা। আজও রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে সংসারের কাজ সেরে তিনি পাড়ি দেন স্টেশনের দিকে। গ্রীষ্মের প্রখর দাবদাহকে মাথায় নিয়েই রওনা দেন তিনি। তবে দুই হাতের ভারী ব্যাগের বোঝাটা এখন আর অতটাও ভারী লাগেনা তার। ট্রেনে উঠেই চলে বেচাকেনা। কাউকে নাইটি দেখাচ্ছেন, তো কেউ আবার বৃষ্টির শাড়ির কালেকশন দেখতে উদগ্রীব। এভাবেই হাসিমুখে চলে ব্যবসা। বিক্রিবাটা শেষ হলে ক্লান্ত শরীরে বাড়ি ফিরে আসেন।

 

ভূগোলের শিক্ষিকা হওয়ার স্বপ্নটা অধরা থেকে গেলেও লোকাল ট্রেনের লড়াইটা কিন্তু আজও জারি রয়েছে তার। ঐ সামান্য উপার্জন থেকেই স্বামীর জন্য একটা দোকানও করে দিয়েছেন তিনি। কারণ বৃষ্টি বিশ্বাস করেন, সংসার চালানোর দায়িত্ব যতটা একটা ছেলের ঠিক ততটাই একটা মেয়েরও হওয়া উচিত। তাই তো স্বামীর কঠিন সময়ে এক মূহুর্তের জন্যেও ভেঙে পড়েননি তিনি। উল্টে সংসারের হাল ধরতে নিয়েছেন চরম পদক্ষেপ।

 

একই সাথে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছেন সমাজের আর পাঁচটা মেয়েকেও। সাধারণ ঘরের মেয়েদের কাছে বৃষ্টি আজ এক নজিরবিহীন উদাহরণ। সমাজের পিছিয়ে পড়া মেয়েদের উদ্দেশ্যে বৃষ্টি বলেন, ‘আমি মেয়েদের বলতে চাই, জীবনে কোনও পরিস্থিতিতেই হাল ছাড়বে না। লড়াই চালিয়ে যাবে। সময়ও তোমার কাছে এসে মাথা নত করতে বাধ্য করবে।’

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version