বাঙালি বাড়ির বউ থেকে টলিউডের বিখ্যাত হেয়ার স্টাইলিস্ট জলি! কীভাবে নিজেকে প্রমাণ করলেন ?

।। প্রথম কলকাতা ।।

শ্রাবন্তী হোক বা স্বস্তিকা প্রসেনজিত চ্যাটার্জিকেও পছন্দের হেয়ারকাট করে দেন এই মহিলা। আহমেদাবাদের বড় হওয়া বাঙালি বউ আজ টলিউডের সেলিব্রেটি হেয়ার স্টাইলিস্ট। অনেক কম বয়সে বিয়ে। কলকাতায় আসতেই শ্বশুড়মশাই সাবধান করেছিলেন কিন্তু বরাবর নিজের রোজগারে বাঁচতে চেয়েছিলেন জলি। গ্যারাজে দিনের পর দিন রাত কাটিয়েছেন বাঙালি বাড়ির বউ। ২২ বছর বয়সে রিস্ত নিয়ে ভয়ে ভয়ে সোজা দিল্লি পাড়ি। সেদিনের ডিসিশনটা না নিলে আজকের সফলতা আসতো না। পিকসি কখনও বব! একদিকে শর্ট আরেকদিকে লম্বা চুল নিয়ে এক্সপিরিমেন্ট করতে ভালোবাসেন। সাধারণ ঘরের বউমা থেকে আজকের জলি চন্দা কীভাবে হলেন?

চুলের কাট একঘেঁয়ে হয়ে গেলে টলিউডের সেলিব্রেটিরা চলে আসেন জলি চন্দার পার্লারে। একেবারে মুখের বদল করে দিতে পারেন জলি। যারকাছে চুল কাটতে প্রসেনজিত, স্বস্তিকা, তৃণার লাইন পড়ে যায়। সেই জলিকে একদিন ভরসা করতে পারেনি কেউ। কাঁদতে কাঁদতে চ্যালেঞ্জ নিয়েছিলেন একদিন তাঁর নাম সকলের মুখে মুখে ঘুরবে। ঠিক তাই হল! চ্যালেঞ্জটা জিতে গিয়েছেন জলি। আহমেদাবাদে বড় হওয়া প্রবাসী বাঙালি পরিবারে জন্ম কথা হালকা টান রয়েছে। ছোট থেকেই ডাকাবুকো! বাইক নিয়ে দাপিয়ে বেড়াতেন কিন্তু ভিষণ সুন্দর নাচতেন জলি। আর সুন্দর ছিল হাতের কাজ। আঁকায় খুব ভালো হাত ছিল। ভালোই চলছিল একদিন বাবা আচমকাই কলকাতায় বিয়ে দিয়ে দেন। শ্বশুড়বাড়িতে গিয়ে যেন সমুদ্রের জলে ভেসে গেলেন জলি।

চাকরি করতে চেয়েছিলেন। শ্বশুড়মশাই প্রথমেই বারণ করেছিলেন। কলকাতার জীবন অতো সহজ নয়। বুটিক খোলার পরামর্শ দেন। কিন্তু বরাবর জলি ক্রিয়েটিভ কোনও কাজ করতে চেয়েছিলেন।  একদিন পার্লারে ফেসিয়াল করতে গিয়েই জলির জীবন বদলে যায়। ২২ বছর বয়সে একাই দিল্লিতে গিয়ে মেকআপের কোর্স করেন। একটা গ্যারাজেই কাটিয়ে দিয়েছেন দিনের পর দিন। বর তো রীতিমত অবাক কিন্তু সব সময় স্বামীকে পাশে পেয়েছেন। কলকাতায় এসে একটা চেয়ার বসিয়ে পার্লার খোলেন প্রথমে ভয়ে কেউ আসতো না। কেউ পরিচয় দিতেও চাইতো না জলির। তারপর বছরের পর বছর কঠিন লড়াই করে জলি আজ এই জায়গায়।

এখন টলিউডের সকলে জলিকে এক নামে চেনে। শুধু কী তাই! জলির কাছে চুল কাটা রীতিমতো বহুজনের স্বপ্ন এমনকী সিনেমাতে অভিনয়ও করেছেন। মনের জোরে নিজের জীবন সাজিয়েছেন জলি। হেরে যাওয়ার ভয় পাননি। জলিকে যাঁরা একদিন কাঁদিয়েছে তাঁরা আজ তাঁকে নিয়ে গর্ব করে। প্রত্যেকটি মেয়ের কাছে তিনি অনুপ্রেরণা। বর্তমান প্রজন্মকেও হেয়ার স্টাইলিস্ট হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার স্বপ্ন দেখান জলি।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version