UNICEF Policy: প্রতিটি শিশুর জন্য নিশ্চিত করতে হবে ডিজিটাল লার্নিং, শিক্ষাক্ষেত্রে থাকবে না ফাঁক

।। প্রথম কলকাতা ।।

UNICEF Policy: গোটা বিশ্বের কাছে ২০২০ সাল খানিকটা দুঃস্বপ্নের মত। কারণ সেই বছর থেকেই মহামারীর প্রকোপ ভীষণভাবে দেখা গিয়েছিল বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। মহামারীর ফলে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল সবকিছুর গতি। যার প্রভাব পড়েছিল শিক্ষাক্ষেত্রেও। মহামারীর সময় এবং মহামারী পরবর্তী সময়ে যে অনলাইন পড়াশোনার কালচার শুরু হয় তাতে শিক্ষা ক্ষেত্রে বিভিন্ন ফাঁক দেখা গিয়েছে। ইউনিসেফ তার ২০২০ সালের একটি রিপোর্টে বিভিন্ন স্কুলগুলির ডিজিটাল শিক্ষার বিষয়ে যে বাধাগুলি রয়েছে সেগুলিকে স্বীকৃতি দিয়েছে।

ইউনিসেফ- এর সেই রিপোর্ট অনুযায়ী বিশ্বব্যাপী প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ শিশু অনলাইন শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়। ‘ডিজিটাল লার্নিং ফর এভরি চাইল্ড ক্লোজিং দ্য গ্যাপ ফর অ্যান ইনক্লুসিভ অ্যান্ড প্রসপোরাস ফিউচার ‘ শীর্ষক রিপোর্টে এই শিক্ষা ক্ষেত্রে বিভিন্ন বাধা এবং ব্যবধানকে দূর করার জন্য বেশ কিছু উপায় তুলে ধরা হয়েছে। করোনা পরবর্তী সময়ে প্রচলিত অনলাইন শিক্ষার ক্ষেত্রে ডিজিটাল ডিভাইড বা ডিজিটাল বিভাজিকরণ ভীষণভাবে উঠে এসেছে।

রিপোর্টটিতে ব্যাখ্যা করা হয়েছে যে, ডিজিটাল বিভাজনের অর্থ শুধুমাত্র মৌলিক পরিষেবা এবং ইন্টারনেটের অনুপলব্ধতা নয়। বরং সাশ্রয়ী মূল্যের ইন্টারনেটের সাথে পর্যাপ্ত অনলাইন প্রযুক্তির অনুপস্থিতি। কীভাবে ডিজিটাল বিভাজন দূর করা যায় এবং ন্যায়সঙ্গত শিক্ষা নিশ্চিত করা যায় তার কিছু উপায় :

১) সুবিধাবঞ্চিত ব্যবহারকারীদের উপর ফোকাস করে বিদ্যুৎ এবং ইন্টারনেট সংযোগের ক্ষেত্রে উচ্চ বিনিয়োগ

এক্ষেত্রে দেশের কিংবা রাজ্যের সরকারের সঙ্গে হাত মেলাতে হবে বেসরকারি সংস্থাগুলিকে। সরকারি- বেসরকারি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্কুলগুলিতে ডিজিটাল সংযোগকে আরও ত্বরান্বিত করতে হবে। শুধুমাত্র স্কুলেই নয়, স্কুলের আশেপাশে থাকা বিভিন্ন এলাকায় যাতে বিদ্যুতের সরবরাহ ত্রুটিহীন হয় এবং ইন্টারনেট সংযোগ সঠিক হয় তা নিশ্চিত করতে হবে সরকার সহ বেসরকারি সংস্থাগুলিকেও।

২) ডিভাইসের খরচ কমানো

শুধুমাত্র সুলভ বিদ্যুৎ পরিষেবা এবং ইন্টারনেট থাকলেই সমস্যার সমাধান হবে তেমন নয়। এর আনুষাঙ্গিক কিছু ডিভাইসেরও প্রয়োজন হয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় ফোন, কম্পিউটার প্রভৃতি। তার জন্য সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থাগুলিকে একত্রিত হয়ে কাজ করা উচিত।

৩) আসল গলদ চিহ্নিতকরণ

কেন কোন নির্দিষ্ট অঞ্চলের শিশুরা অনলাইন শিক্ষা পরিষেবা পাচ্ছে না ? সে ক্ষেত্রে কোনোভাবে সামাজিক কিংবা সাংস্কৃতিক বাধা তাদের সামনে এসে দাঁড়াচ্ছে কিনা? এই বিষয়গুলি খতিয়ে দেখার প্রয়োজন রয়েছে। এছাড়াও পরিবারকে সর্বপ্রথম সচেতন হতে হবে যাতে তাদের পরিবারের কন্যা কিংবা পুত্র সন্তান সমান ভাবে শিক্ষা লাভ করার জন্য প্রস্তুত থাকে।

৪) প্রযুক্তির সঙ্গে শিক্ষকদের মেলবন্ধন

শিশুদেরকে কিছু শেখাতে গেলে সর্বপ্রথম সে বিষয়ে একেবারে গভীরে জ্ঞান থাকা প্রয়োজন শিক্ষক শিক্ষিকাদের । বর্তমানে যেখানে কথা হচ্ছে অনলাইন শিক্ষা নিয়ে সেখানে ভার্চুয়াল ক্লাস, ডিজিটাল টিউটর এই সমস্ত বিষয়ে শিক্ষকদের দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। চিরাচরিত পাঠ্যক্রমের বাইরে বেরিয়ে এসে ইন্টারনেটের সহযোগিতায় কী ভাবে কোন বিষয়কে শিশুদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তুলে ধরা যায় এই বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে শিক্ষক শিক্ষিকাদের প্রয়োজনে তাদের জন্যও আলাদা প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা করা যেতেই পারে।

বিশ্বব্যাপী বহু এমন শিশু রয়েছেন যারা স্কুলে গিয়ে শিক্ষা লাভ করার সুযোগ টুকু পেয়েছে। কিন্তু তাদের কাছে অনলাইন শিক্ষা গ্রহণের কোনরকম পথ খোলা নেই । এমনকি তাদের স্কুলগুলিও প্রত্যন্ত এলাকায় হওয়ায় সেভাবে পড়াশোনার ক্ষেত্রে ডিজিটালাইজেশন ছোঁয়া মেলেনি। সেই সমস্ত ক্ষেত্রেও সমানভাবে সরকারি বেসরকারি সংস্থাগুলিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে হবে । তবেই বিশ্বজুড়ে শিশুদের শিক্ষার ক্ষেত্রে কোন রকম বিভাজন সৃষ্টি হবে না। ডিজিটাল লার্নিং সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা তৈরি হবে শিশুদের।

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version