Khadija Bibi: পেয়েছেন রাষ্ট্রীয় সম্মান, নিজের হাতেই১০ হাজার শিশুর জন্ম দিয়েছিলেন এই নার্স

।। প্রথম কলকাতা ।।

Khadija Bibi: শিশু জন্মের সময় নার্সদের ভূমিকা যে কতটা বেশী তার দৃষ্টান্ত তামিলনাড়ুর এই মহিলা। অবসর কালে কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ পেয়েছেন সরকারি পুরস্কার। ঠিক কি করেছেন তিনি? জানলে অবাক হবেন সকলেই। কর্মজীবনে দশ হাজার শিশুর জন্ম হয়েছে তাঁর তত্ত্বাবধানে। মৃত্যু হয়নি একটি শিশুরও। পরম মমতায় লালন করেছেন প্রতিটি শিশুকে। তিনি খাদিজা বিবি।

তিন দশক ধরে তিনি তামিলনাড়ুর একটি সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কাজ করেছেন। জুন মাসে অবসর নিয়েছেন তিনি। তার ক্লিনিক গ্রামীণ শহর ভিলুপুরামে। চেন্নাই শহর থেকে দেড়শ কিলোমিটার দূরে। তাঁর চেম্বারে সিজার করার পরিকাঠামো নেই। তাই জটিলতা দেখলেই গর্ভবতী মহিলাদেরকে জেলা হাসপাতালে পাঠান।

খাদিজা ১৯৯০ সালে যখন কাজ শুরু করেছিলেন তখন তিনি নিজেই গর্ভবতী ছিলেন। তাঁর কথায়, কাজে যোগ দেওয়ার সময় আমি সাত মাসের গর্ভবতী ছিলাম। তবুও আমি অন্য মহিলাদের সাহায্য করতাম। দুই মাসের একটি ছোট মাতৃত্বকালীন বিরতির পর আমি কাজে ফিরে আসি। আমি জানি মহিলারা যখন প্রসবের সময় কতটা উদ্বিগ্ন হন। তাই তাদের আরামদায়ক এবং আত্মবিশ্বাসী করা আমার প্রথম অগ্রাধিকার। সেই ভাবনা থেকেই আসন্ন প্রসবাদের মন জিতে নিতে পেরেছেন খাদিজা। কাথিজার অনুপ্রেরণা তাঁর মা জুলাইকা। তিনি একজন গ্রাম্য নার্স ছিলেন। ছোটবেলায় সিরিঞ্জ নিয়ে খেলেছেন কাথিজা। হাসপাতালের গন্ধে তিনি অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিলেন। অল্প বয়স থেকেই বুঝতে পেরেছিলেন মায়ের কাজের গুরুত্ব।

আগে একটা সময় ছিল যখন বাড়িতেই সন্তান প্রসব করাতেন দাইমারা। এখনও নার্সদের ভূমিকা যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ তার উদাহরণ খাদিজা বিবি। তিনি তাঁর তেত্রিশ বছরের দীর্ঘ কর্মজীবনে মহিলাদের স্বাস্থ্যসেবার প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির অনেক পরিবর্তন দেখেছেন। তাঁর কথায়, তখন এতো বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ছিল না। সরকারি হাসপাতাল ছিল অনেক দূরে। যখন কাজ শুরু করি, সেখানে একজন ডাক্তার, সাতজন হেল্পার এবং অন্য দুইজন নার্স ছিল। প্রথম কয়েক বছরে কাজে খুব ব্যস্ততা থাকতো। আমি আমার সন্তানদের দেখাশোনা করতে পারিনি। আমি পারিবারিক অনুষ্ঠানগুলি মিস করতাম। কিন্তু সেই দিনগুলি আমাকে শেখার একটি খুব মূল্যবান অভিজ্ঞতা দিয়েছে। তিনি পঞ্চাশ জোড়া যমজ এবং এক জোড়া ট্রিপলেটকে পৃথিবীতে আনতে সাহায্য করেছেন। কর্মজীবনে প্রাপ্তির মধ্যে এটা অন্যতম। সেজন্যই তাকে রাষ্ট্রীয় পদকে ভূষিত করা হয়েছিল।

কাথিজার কথায়, যখন আমি শুরু করি, মহিলারা অস্ত্রোপচারকে ভয় করত। কিন্তু খন অনেকেই নর্মাল ডেলিভারি ভয় পায়। বেশিরভাগই সিজারে ভরসা রাখছে। তাঁর উপলব্ধি, গত তিন দশকে গ্রামীণ পরিবারের আয় বেড়েছে। সমাজ বদলেছে অনেকটাই। এখন স্বামীদের অনেকেই স্ত্রীর সাথে সন্তান প্রসবের সময় সাগ্রহে উপস্থিত থাকতে চায়। আগে মেয়ে সন্তানের জন্ম দিলে স্বামী স্ত্রীর কাছেও যেতেন না। কিছু মহিলা দ্বিতীয় বা তৃতীয় মেয়ের জন্ম দিলে অঝোরে কাঁদতেন। এখন কন্যা সন্তানকে সহজেই মেনে নেওয়া হচ্ছে। সদ্য অবসর নিয়েছেন খাদিজা। চোখের সামনে শুধুই ভাসছে ফেলে আসা দিনগুলি।সদ্যোজাতদের কান্নার শব্দ তাঁর কাছে সব সময় আলাদা অনুভূতির ছিল। সেই দিনগুলিকে বড্ড মিস করছেন খাদিজা।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version