India-Bangladesh Relationship: একেই বলে বন্ধুত্ব, ভারতের জন্য দুই বন্দর খুলে দিল বাংলাদেশ! চাঙ্গা হবে অর্থনীতি

।। প্রথম কলকাতা ।।

India-Bangladesh Relationship: একেই বলে বন্ধুত্ব, ভারতের জন্য দুই বন্দর খুলে দিল বাংলাদেশ। বাড়বে বাণিজ্য, বৃদ্ধি পাবে দুই দেশের যোগাযোগ। দুই দেশই নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ বাড়াতে মরিয়া। আখেরে লাভ দুই দেশের। ভারতের শত্রু চীনের সঙ্গে বাংলাদেশে হাত মেলালেও, শেখ হাসিনা জানিয়েছিলেন ভারতের সঙ্গে রক্তের সম্পর্ক। বাংলাদেশ বেজিংয়ের তালে গা ভাসায় নি। বাংলাদেশের একটা ছাড়পত্রে খুশির আবহ ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলে। ভারত বাংলাদেশের চট্টগ্রাম আর মংলা বন্দর ব্যবহার করতে পারবে। সহজ হবে পণ্য আমদানি রপ্তানি। ভারতকে মানতে হবে একগুচ্ছ নিয়ম।

বাংলাদেশের বন্দর ব্যবহার নিয়ে বহুদিন ধরেই জল্পনা চলছিল। এমনকি ভারত বাংলাদেশের মধ্যে এই নিয়ে চুক্তি হয়। সব দিক বিবেচনা করতে করতে বাংলাদেশ কাটিয়ে দিয়েছে বেশ কয়েকটা বছর। সম্প্রতি বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড স্থায়ী ট্রানজিট আদেশ অনুযায়ী ২০১৮ সালের স্বাক্ষরিত দুই দেশের চুক্তির অধীনে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং পদ্ধতির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে কার্গোর ট্রান্স শিপমেন্ট হবে বলে জানিয়েছে। ভারত পণ্য রপ্তানি আমদানির জন্য ব্যবহার করতে পারবে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর। মূলত বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের প্রধান বন্দর এই চট্টগ্রাম, যেখান থেকে দেশটির প্রায় 90% এর বেশি বৈদেশিক বাণিজ্য হয়ে থাকে। বঙ্গোপসাগরে থাকা বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর মংলা। এবার ভারত ট্রানজিট ও কার্গো ট্রান্স শিপমেন্টের জন্য এই দুই বন্দর ব্যবহার করতে পারবে। প্রচুর উপকার পাবে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে রাজ্যগুলি। বিপুল খরচ বাঁচবে ভারতের, খুব সহজে উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলিতে পৌঁছে যাবে পণ্য।

এনবিআর এর স্থায়ী আদেশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ এবং ভারতের মধ্যে হওয়া ‘এগ্রিমেন্ট অন দ্যা ইউজ অফ চট্টগ্রাম অ্যান্ড মোংলা পোর্ট ফর মুভমেন্ট অফ গুডস টু অ্যান্ড ফ্রম ইন্ডিয়া’ আর আওতায় দুই দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর। সেই অনুযায়ী ট্রানজিট ও ট্রানশিপমেন্ট পণ্যের কাস্টমস প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে বাংলাদেশ সরকার এই আদেশ জারি করেছে। ভারত এবার থেকে বাংলাদেশের এই দুটি বন্দর ব্যবহার করে নিজের দেশে সহজে পণ্য পরিবহন করতে পারবে। যার জন্য খোলা হয়েছে ১৬টি ট্রানজিট রুট। সেই রুটের তালিকায় রয়েছে মংলা-আখাউড়া-আগরতলা, চট্টগ্রাম-আখাউড়া-আগরতলা, তামাবিল-ডাউকি, বিবিরবাজার-শ্রীমন্তপুর এবং শেওলা-সুতারকান্দি।

যে যে নিয়ম ভারত কে মানতে হবে

ট্রান্সশিপমেন্টের ক্ষেত্রে অপারেটরকে বাংলাদেশ কাস্টমস থেকে পাঁচ বছরের জন্য লাইসেন্স নিতে হবে। বাংলাদেশ আইন অনুযায়ী নিষিদ্ধ এমন কোন পণ্য পরিবহন করা যাবে না। সাত দিনের বেশি বাংলাদেশের বন্দরে ট্রান্সশিপমেন্ট পণ্য রাখা যাবে না। বন্দরে যখনই পণ্য পৌঁছাবে তার ২৪ ঘন্টার মধ্যে সেই খবর জানাতে হবে বাংলাদেশ কাস্টমসকে। এছাড়াও কাস্টমসের কাছে জমা দিতে হবে বিল অফ এনট্রি, কমার্শিয়াল ইনভয়েস এবং প্যাকিং লিস্ট সহ প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট। পরিশোধ করতে হবে ৩০০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে কাস্টমস ডিউটি। ফ্রি এবং চার্জের উপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে। প্রত্যেকটি পণ্য সিল করতে হবে ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে।

ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলির সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য বাংলাদেশে ভারতের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের বন্দর আর স্থলপথ ব্যবহার করে খুব সহজে ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রাখা যাবে। এখানে খরচ কম, আবার সময়ও বাঁচবে। অপরদিকে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধির মাধ্যমে মোটা অঙ্কের আয় হবে বাংলাদেশের। সম্প্রতি ভারত এবং বাংলাদেশ নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ আরও শক্তিশালী করতে নানান পদক্ষেপ নিতে চলেছে। ১৯৬৫ সালে পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধের পর বেশ কয়েকটি যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে। বন্ধ হয়ে যাওয়া বেশ কয়েকটি আন্তসীমান্ত রেলপথের পুনরুজ্জীবন, নদীপথে জলপথ ব্যবস্থার সংযোগ এবং পরিবহনের জন্য বাংলাদেশের বন্দরগুলি ব্যবহার করার অনুমতি সহ নানান কাজ চালাচ্ছে দুই দেশ।

শুধু যোগাযোগ কিংবা বাণিজ্যিক নয়, প্রতিরক্ষার দিক থেকেও দুই দেশ হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করতে চায়। ভারতে তিন দিনের সফরে এসেছেন বাংলাদেশের সেনাপ্রধান। ২৭ এপ্রিল দিল্লিতে বাংলাদেশের সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে ভারতীয় প্রতিপক্ষ জেনারেল মনোজ পান্ডের একটি বৈঠক হয়েছে। কৌশলগত অংশীদারিত্বের অংশ হিসেবে প্রশিক্ষণ, সন্ত্রাস বিরোধী সহযোগিতা, সামগ্রিক দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, আন্তকার্যকারিতা এবং শক্তিশালীকরণ সংক্রান্ত নানান বিষয়ে আলোচনা হয়। বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর প্রধান ভারতীয় সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমান বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। আলোচনার মূল বিষয়বস্তু ছিল, দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে থাকা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতি এবং পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি। আশা করা হচ্ছে, দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সম্পর্ক আরো মজবুত হবে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারত ও বাংলাদেশ একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতা ও সমর্থনের ঐতিহাসিক উত্তরাধিকার ভাগাভাগি করে নিয়েছে।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version