Russia-Ukraine war: যুক্তরাষ্ট্রের খেলা শেষ ! পাঁচ শর্তে শেষ হচ্ছে ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ ?

।। প্রথম কলকাতা ।।

 

Russia-Ukraine war: এবার কি থেমে যাচ্ছে ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধ? যুদ্ধ বিরতির কথা শোনা গেল খোদ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের গলায়। হ্যাঁ, এবার নাকি পুতিন নিজেই বলছেন যুদ্ধবিরতির কথা। তবে তা কিন্তু এমনি এমনি নয়। বরং পুতিন বেঁধে দিয়েছেন কিছু বড়সড় শর্ত। যুদ্ধবিরতি চাইলে এই শর্ত মানতে হবে জেলেনেস্কিকে। তবেই ইউক্রেনে ফিরবে শান্তি। কী সেই শর্ত? যা রাশিয়া বেঁধে দিয়েছে ইউক্রেনের জন্য?

 

আজকের প্রতিবেদনে পুতিনের বেঁধে দেওয়া সেই শর্ত নিয়েই আলোচনা করব আমরা। রাশিয়ার এই শর্ত কি আদৌ মানা সম্ভব ইউক্রেনের পক্ষে? পশ্চিমি বিশ্বের সমস্ত জারিজুরি বানচাল করতে চাইছে পুতিন। আমেরিকা আর তার স্কোয়াড কি তবে মাথা নত করবে পুতিনের কাছে? ন্যাটোয় যোগদানের স্বপ্ন কি ছাড়বে ইউক্রেন? যেহেতু ইউক্রেন-রাশিয়া সামরিক যুদ্ধের সূত্রপাতটাই ছিল ন্যাটোতে যোগদান নিয়ে তাই আজকের ভিডিওতে আমরা প্রথমে সেই শর্তটা নিয়েই আলোচনা করব।

 

1.রাশিয়ার দেওয়া প্রথম শর্ত : ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগদান থেকে বিরত।।

এইদিন রুশ প্রেসিডেন্ট বলেছেন, “আমরা যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করতেই পারি। কিন্তু তার জন্য ইউক্রেনকে ন্যাটোতে যোগদানের পরিকল্পনা বাতিল করতে হবে। তবেই আমরা আলোচনায় বসতে পারি।” তাই প্রশ্ন ছিল যে, যেটা থেকে যুদ্ধের সূত্রপাত, সেখান থেকে কি ইউক্রেন সরে আসবে? অবশ্য বহু আগে জেলেনেস্কি একবার জানিয়েছিলেন যে, ন্যাটোতে যোগদান থেকে বিরত থাকতে রাজি। কিন্তু সেক্ষেত্রে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে আমেরিকা সহ পশ্চিমা দেশগুলিকে। যদিও সেই বক্তব্যের পর জল বহুদূর গড়িয়েছে। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে কিন্তু আর সেই শর্ত মানতে রাজি নয় ইউক্রেন।

 

2.রাশিয়ার দেওয়া দ্বিতীয় শর্ত: অবিলম্বে সেনা সরাতে হবে ইউক্রেনকে।।

রুশ প্রেসিডেন্টের স্পষ্ট দাবি, ডোনেটস্ক, লুহানস্ক, জাপরিজজিয়া ও খেরসন থেকে সম্পূর্ণরূপে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে ইউক্রেনকে। এই চারটি অঞ্চলে কোনও সেনা থাকা যাবেনা। এই শর্ত না মানলে রাশিয়া কিন্তু যুদ্ধ থামাবেনা।

 

3.রাশিয়ার দেওয়া তৃতীয় শর্ত: সামরিক শক্তির উপর বিধিনিষেধ আরোপ করতে হবে।।

পুতিনের দাবি, ইউক্রেনকে অবিলম্বে তার সামরিক শক্তির উপর বিধিনিষেধ আরোপ করতে হবে। অর্থাৎ ইউক্রেনকে তার সেনাবাহিনীর উপর লাগাম দিতে হবে। তবে এই শর্ত মেনে নিলে ইউক্রেন অনেকটাই দূর্বল হয়ে যাবে সে আর নতুন কী?

 

4.রাশিয়ার দেওয়া চতুর্থ শর্ত: রাশিয়ার উপর সমস্ত নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে।।

এই যুদ্ধের পর রাশিয়ার উপর যা যা নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে তা সমস্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন পুতিন। অর্থাৎ এখনও অবধি আমেরিকা যেখান থেকে রাশিয়াকে ছেঁটে ফেলতে চেয়েছে সেই সব জায়গা পুতিনকে ফিরিয়ে দিতে হবে।

 

হ্যাঁ, ইউক্রেনের জন্য এই চারটি শর্তই রেখেছিল রাশিয়া। যদিও ভ্লাদিমির জেলেনেস্কি স্পষ্ট কথাতেই জনিয়ে দিয়েছেন যে, রাশিয়ায় কোনও শর্তই কিন্তু তারা মানছেন না। তাহলে সেক্ষেত্রে আগে কি?

 

যুদ্ধ কি তাহলে থামবেনা? কারণ পুতিন তো স্পষ্ট করেই দিয়েছেন যে, সুইজারল্যান্ডে যাই আলোচনা হোক না কেন, মস্কোর তাতে যায় আসেনা। রাশিয়া তখনই যুদ্ধ থামাবে যখন তার শর্ত মানা হবে‌। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির এটা স্পষ্টই বিশ্বাস করেন যে, যুদ্ধ জারি থাকাটা তাদের জন্যই লাভজনক। এদিকে আমেরিকা রাশিয়ার উপর যে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল সেটাও কিন্তু শতভাগ পূরণ হচ্ছেনা। চিন, ভারত সহ বেশকিছু দেশ কিন্তু রাশিয়া থেকে প্রাকৃতিক গ্যাস, তেল কেনাবেচা করছে।

 

সেই সাথে লাভের গুড় খাচ্ছে চিন। ইতিমধ্যেই রাশিয়ার তেল ও গ্যাস সরবরাহব্যবস্থার নিরাপত্তার দায়িত্ব নিয়েছে চিন। সেই সাথে মস্কোর ব্যাংকার ও সবচেয়ে বড় বাণিজ্য অংশীদার হয়ে উঠেছে। এমন পরিস্থীতিতে চিন তাইওয়ানের উপর হামলা করলেও তার তেল বা গ্যাস সরবরাহে কিন্তু বাধা দেওয়ার কেউ নেই। অর্থাৎ এই যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র যত বেশি জড়াবে, চীনের ততই তাইওয়ান দখলের সম্ভাবনা জোরালো হবে। আর ওয়াশিংটন কিন্তু এই বিষয়টি ভালোই জানে।

 

মনিও দীর্ঘদিন ধরেই ডলারের দাদাগিরি থেকে বেরিয়ে আসতে চাইছে রাশিয়া, চিন। সেক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের এই নিষেধাজ্ঞা একপ্রকার শাপে বর হয়ে উঠেছে।

তবে গোটা বিষয়টা পর্যালোচনা করলে বুঝতে পারবেন যে, এই মুহূর্তে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ জিইয়ে রাখায় যুক্তরাষ্ট্রের আর বিশেষ কোনও লাভ নেই। মূলত রাশিয়াকে কোণঠাসা করতে ইউক্রেনের পাশে দাঁড়িয়েছিল ওয়াশিংটন। তবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোনও প্ল্যানই কিন্তু সেভাবে কাজে দেয়নি। এমনকি এখন তো, ইউক্রেনের অস্ত্রভাণ্ডার অবধি শেষ। এই যুদ্ধ আরও লম্বা চললে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ ও অস্ত্র দুটোই জলের মত বইতে থাকবে। আর এতে অসন্তোষ বাড়বে মার্কিন জনগণের মধ্যে। আগামি দিনে গৃহযুদ্ধও শুরু হয়ে যেতে পারে। তাই আপাতত ভেবেচিন্তেই পদক্ষেপ নিচ্ছে আমেরিকা সহ পশ্চিমা দেশগুলি।

 

ইতিমধ্যেই গত ১৫ ও ১৬ জুন ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বিশ্বনেতাদের বৈঠকে বসার আহ্বান জানিয়েছিল সুইজারল্যান্ড। গোটার বিশ্বের নজর ছিল ঐ বৈঠকের দিকে‌ই। ইউক্রেন শান্তি সম্মেলনে যোগ দিয়েছিল অন্তত ৯০টি দেশ। যার অর্ধেকই ইউরোপের, অর্থাৎ ইউক্রেনের ঘনিষ্ঠ মিত্র। এছাড়াও রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানেরা উপস্থিত ছিলেন, তাদের বেশিরভাগই ইউরোপের। যদিও জেলেনস্কি চেয়েছিলেন, এই সম্মেলনে এশিয়ার তাবড় নেতারাও যোগ দিক‌। কিন্তু স্বাভাবিকভাবেই চীন এবং রাশিয়া উপস্থিত ছিলনা। ভারত তার প্রতিনিধি পাঠালেও সরাসরি সম্মেলনে অংশ নেয়নি। যদিও সম্মেলনের ফলাফল নিয়ে উচ্চাশা প্রকাশ করেছেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। আগামীতে ইউক্রেন রাশিয়ার উপর এই বৈঠকের কী কী প্রভাব পড়ে আপাতত সেদিকেই তাকিয়ে আন্তর্জাতিক মহল।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version