EL Nino: এল নিনোর প্রভাবে প্রাকৃতিক পরিবেশের ব্যাপক রদবদল! বৃষ্টিপাত কমবে ভারতে

।। প্রথম কলকাতা ।।

EL Nino: ২০২৩ এ প্রকৃতিতে বড়সড় পরিবর্তন আসতে পারে। যার জেরে সমুদ্রের জল অস্বাভাবিক গরম হয়ে উঠবে। ক্ষতিগ্রস্ত হবেন মৎস্য চাষিরা। কৃষি কাজেও মারাত্মক প্রভাব পড়বে। গড় বৃষ্টিপাতের তুলনায় বেশি বৃষ্টিপাত হতে পারে। অপরদিকে বিভিন্ন দেশে খরা পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝে তৈরি হতে পারে সাইক্লোন আর টাইফুন। এর পিছনে একটাই কারণ, তা হল এল নিনো (EL Nino)। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এর কিছুটা প্রভাব পড়বে ভারতেও।

এল নিনো কী?

স্প্যানিশ ভাষায় এল নিনো বলতে বোঝায় ছোট্ট যিশু। এটি সর্বপ্রথম প্রকাশ্যে এসেছিল ১৬০০ সালে। তখন দক্ষিণ আমেরিকার মৎস্যজীবীরা প্রশান্ত মহাসাগরে হঠাৎ আবহাওয়ার পরিবর্তন লক্ষ্য করেন। দেখা যায়, বছরের ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি মাসের মধ্যে আবহাওয়ার এক ধরনের অস্বাভাবিক পরিবর্তন ঘটে। এই বদল হয় তিন কিংবা সাত বছর অন্তর। এর ফলে সমুদ্রের পরিবেশ এবং আবহাওয়ার তারতম্য ঘটে, যার প্রভাব পড়ে গোটা বাস্তুতন্ত্রে। এক্ষেত্রে পৃথিবীর একদিকে খরা তৈরি হতে পারে, আবার অপরদিকে অতিরিক্ত বৃষ্টি হতে পারে। এক কথায় এল নিনোর প্রভাবে আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় ভুগতে পারে গোটা বিশ্ব।

বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন প্রায় তিন বছর পর ২০২৩ এ এল নিনো ভয়ঙ্কর রূপে ফিরে আসতে পারে। যার কারণে গোটা বিশ্বজুড়ে তাপমাত্রার পরিবর্তন হবে। ইতিমধ্যেই ২০২২ সালে ১৯ শতকের তুলনায় গড়ে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে ১.১ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। ২০২০ সালেও গোটা বিশ্বকে এই এল নিনোর কারণে বেশ ভুগতে হয়েছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধির পর আইএমডির তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ ১২২ বছরের মধ্যে পঞ্চম উষ্ণতম বছর। এল নিনোর সবথেকে বেশি প্রভাব থাকে গ্রীষ্মমন্ডলীয় প্রশান্ত মহাসাগরে। এর প্রভাবে সমুদ্রের ঠান্ডা জল পৃষ্ঠের উপরে না আসায় উপকূলীয় জল অস্বাভাবিকভাবে গরম হয়ে ওঠে। যা বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের অন্যতম কারণ।

ভারতে এল নিনোর প্রভাব

আবহাওয়াবিদরা মনে করছেন, ভারত এল নিনোর ঝুঁকিতে রয়েছে। এক্ষেত্রে স্বাভাবিকের থেকে কম বৃষ্টি হবে। ভারতে এল নিনো সক্রিয় হতে পারে ২০২৩ এর জুন থেকে আগস্ট মাসের মধ্যে। আমেরিকার আবহাওয়া বিভাগ ন্যাশনাল ওশেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোস্ফিয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ভারতকে সতর্ক রক্ষা করে এই বিষয়ে একটি রিপোর্ট জারি করেছে। এই সংস্থার মতে এল নিনো ভারতের মৌসুমী বৃষ্টিপাতের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে জুলাই, আগস্ট আর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এল নিনো ৫৭ শতাংশ পর্যন্ত সক্রিয় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্ষাকালে ভারতের পরিস্থিতি কেমন হবে, তার চিত্র স্পষ্ট হবে এপ্রিল আর মে মাসে। অপরদিকে ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্ষা নিয়ে এই মুহূর্তে কিছু স্পষ্ট করে বলা যাবে না। এক্ষেত্রে যদি একটি মডেল পরপর দুই মাস ধরে এল নিনোর ইঙ্গিত দিয়ে থাকে তবে এটি গুরুত্ব সহকারে নেওয়া দরকার। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বসন্ত ঋতুর পর পরিস্থিতির পরিবর্তন হওয়ার কারণে বর্ষার একটি পরিষ্কার চিত্র শুধুমাত্র এপ্রিল থেকে মে মাসেই স্পষ্ট হতে পারে। এল নিনো আর ভারতীয় বর্ষার মধ্যে এক বিপরীত সম্পর্ক রয়েছে। যদি এল নিনো সক্রিয় হয় তাহলে সেই বছর বর্ষার বৃষ্টিপাত স্বাভাবিকের থেকে কম হবে।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version