Budapest: আশ্চর্য! গোটা রেল স্টেশনের দায়িত্ব শিশুদের হাতে, কীভাবে নিয়োগ করা হয়?

।। প্রথম কলকাতা ।।

Budapest: আপনি কি পাহাড় ঘেরা অরণ্যের মাঝে ট্রেনে করে ভ্রমণ করতে চান? তাহলে আপনার জন্য রয়েছে এক বিস্ময়কর জায়গা। প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখার পাশাপাশি উপরি পাওনা হিসেবে পাবেন নানান রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের সুযোগ। এখানে রয়েছে এমন এক রেলস্টেশন যার কাজকর্ম এক্কেবারে স্বাভাবিক কিন্তু স্টেশন যারা পরিচালনা করছেন তাদের দেখে অবাক হবেন। এখানে রেলস্টেশনে পরিচালকদের বয়স মাত্র ১০ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে। ট্রেন ছাড়া, টিকিট চেক করা, টিকিট দেওয়া, যাত্রীদের সুবিধা অসুবিধার দিকে খেয়াল রাখা সবই করে শিশুরা। ট্রেনের সঙ্গে রং মিলিয়ে পরে থাকে নির্দিষ্ট পোশাক। তবে তাদের মন ভোলাতে এই কাজ দেওয়া হয় না। এখানে কাজ করতে গেলে যোগ্যতার প্রমাণ দিতে হয়। মূলত মেধার উপর ভিত্তি করে তাদের নিয়োগ করা হয়। তারপর হয় প্রায় চার মাসের ট্রেনিং। সব কাজ ঠিকঠাক থাকলে কাজের জন্য প্রায় এক বছরের একটি লাইসেন্স। এমন আশ্চর্য রেলস্টেশন রয়েছে বুদাপেস্টে (Budapest)।

একটা রেলস্টেশন প্রচুর কাজ থাকে। অনেক প্রাপ্তবয়স্করাই সেই কাজ সামাল দিতে রীতিমত হিমশিম খান। সেখানে প্রায় সত্তর বছর ধরে এই গোটা রেলওয়ে স্টেশন পরিচালনা করে আসছে ১০ থেকে ১৪ বছরের শিশুরা। গেলেই দেখতে পাবেন বাচ্চাগুলো কত ব্যস্ত। নিয়মিত যাত্রী আনা-নেওয়া, ট্রেনের সিগন্যাল দেখা, স্টেশন মাস্টারের কাজ, টিকিট চেকিং করা, টিকিট বিক্রি করা প্রভৃতি কাজ তারা ছোট্ট হাতে সুন্দরভাবে সামলাচ্ছে। ছোট ছোট বাচ্চাদের নিখুঁত কাজ দেখতেও ভাল লাগবে । এই বিশেষ রেল স্টেশনটি অবস্থিত হাঙ্গেরির বুদাপেস্টে। স্টেশনের নাম জায়ারমেকভেসাট (Gyermekvasut) । বুদাপেস্টের পাহাড়ি এলাকার অরণ্যের বুক চিরে তৈরি হয়েছে ১১.২ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি রেলপথ। সেই রেল পথে চলে দুটি বগির বিশেষ ট্রেন। এই রেলপথটি পরিচালনার কাজে সমস্ত দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে পালন করে আসছে কয়েকটি শিশু।

ট্রেনটিতে দুটি বগি, একটি সাধারণ এবং অপরটি প্রথম শ্রেণীর। সাধারণ বগিতে কাঠের বেড থাকে এবং প্রথম শ্রেণীতে সবুজ ভেলভেটে ঢাকা নরম সিট। দুটো বগি সাজানো রয়েছে সুন্দর ডিজাইনে। আপনি ইচ্ছা করলে পুরো রেলপথটি ট্রেনে করে ভ্রমণ করতে পারেন, আবার মাঝ পথে নেমে গিয়ে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।

রেলপথটির নির্মাণের কাজ সমাপ্ত হয়েছিল ১৯৫০ সালে। শোনা যায় সেই বছর থেকেই বর্তমান পর্যন্ত এই স্টেশনের পরিচালনার দায়িত্ব সম্পূর্ণ শিশুদের উপরে রয়েছে। প্রথমে মেধার ভিত্তিতে বাচ্চাদের বাছাই করে নেওয়া হয়। তারপর ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে তাদেরকে দক্ষ এবং দায়িত্বশীল হিসেবে গড়ে তোলা হয়। যদিও বাচ্চাদের সমস্ত কাজই থাকে প্রাপ্তবয়স্কদের নজরদারিতে। বাচ্চাগুলি অত্যন্ত দায়িত্বের সাথে কায়িক পরিশ্রম করে। প্রায় সারা বছরই রেলপথ চালু থাকে, পুরো রেল পথটি ঘুরে আসতে সময় লাগে ৪০ থেকে ৫০ মিনিট। এছাড়াও এই রেলস্টেশনের অপর একটি আকর্ষণ হল জাদুঘর, এখানে সংরক্ষিত রয়েছে বিভিন্ন পুরনো জিনিসপত্র এবং যন্ত্রপাতি।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version