Christmas: কবে থেকে কলকাতায় শুরু হয়েছে ক্রিসমাস? কাহিনীটা জানা আছে ?

।। প্রথম কলকাতা ।।

Christmas: সামনেই বড়দিন। এই সময় গোটা কলকাতা (Kolkata) আলোর রোশনাইতে সেজে ওঠে। মানুষ ভিড় জমায় পার্কস্ট্রিট, অ্যালেন পার্কে। গোটা বাংলার মানুষের মেজাজই আলাদা থাকে। আজকাল সমস্ত ধর্ম নির্বিশেষে মানুষ মেতে ওঠে বড়দিন পালনে। সকলেরই প্রিয় উৎসব এই ক্রিসমাস। এই উৎসবে বাচ্চাদের হাতে আসে নতুন উপহার, থাকে কেকের বাহার, হয় গ্রিটিংস কার্ড বিনিময়, গির্জায় চলে বিশেষ প্রার্থনা, ঘর সাজানো হয় ক্রিসমাস ট্রি (Christmas Tree) দিয়ে, এছাড়া থাকে হরেক রকম বাহারি ভোজের আয়োজন। তবে এই বড়দিনের সঙ্গে মিশে রয়েছে কলকাতার ইতিহাস।

জানা আছে, তিলোত্তমায় কবে থেকে শুরু হল ক্রিসমাস?

শোনা যায়, বনিক জব চার্নক (Job Charnock) মুঘলদের তাড়া খেয়ে পালাচ্ছিলেন হুগলি ছেড়ে। বালেশ্বর যাবেন বলে পথে আশ্রয় নেন সুতানুটিতে (Sutanuti)। সেই সময় সুতানুটি ছিল জঙ্গলে ঘেরা এক হাট। সেখানেই তিনি গা ঢাকা দেন। সময় কেটে যায়, চলে আসে ক্রিসমাস। সাল ১৬৬৮, কলকাতায় প্রথমবারের জন্য পালিত হল বড়দিন। তখনকার কলকাতার সঙ্গে এখনকার কলকাতার ছিল আকাশ-পাতাল পার্থক্য। তবে তখনও সেভাবে জাঁকিয়ে শুরু হয়নি ক্রিসমাস। ইতিহাস বলে, আরও এক শতাব্দী পরে শহরজুড়ে জাঁকিয়ে বড়দিন পালন শুরু হয়।

পলাশি ও বক্সার যুদ্ধ জিতে ভারতে পুরোদমে শাসন কায়েম করেছিল ব্রিটিশ (British)। আর তারপরই শহরের বুকে ক্রিসমাস পালনের সূচনা। কলকাতা তখন ব্রিটিশ শাসিত ভারতের রাজধানী। সেই সময় বড়দিন হলেই দেশের সাহেব-মেমদের স্বদেশের কথা মনে পড়ত। আর তাই বড়দিনের আগেই সাহেবরা ঠিকঠাক করতে শুরু করত নিজেদের বাড়িঘর। ১৮২৩-এ কলকাতার প্রথম আর্চ বিশপ রেজিনাল্ড হেবার তাঁর জার্নালে বলেছিলেন, ওই সময় ডালহৌসি (Dalhousie) এবং চৌরঙ্গী (Chowringhee) চত্বরের প্রত্যেক সাহেববাড়ি সাজানো হত দেবদারু গাছ দিয়ে। আজকে এই শহরের বুকে দাঁড়িয়ে রয়েছে অনেক চার্চ। এখন সেগুলোতে উপাসনা হয়, ক্রিসমাসে বড় করে উৎসব হয়। সেকালের কলকাতায় সেভাবে কোনও চার্চই ছিল না।

১৭৮৭-তে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল সেন্ট জনস চার্চ (St John’s Church)। এরপর ইউরোপীয় সম্প্রদায়ের সংখ্যা কলকাতায় বেড়ে গিয়েছিল। যে কারণে পঞ্চম বিশপ ড্যানিয়েল উইলসনের উদ্যোগে ১৮৩৯-এ তৈরি হল সেন্ট ক্যাথিড্রাল চার্চ। যা ৮০০ থেকে ১০০০ মানুষের উপাসনা ক্ষেত্র। এছাড়া রবীন্দ্র সদন ও ময়দান মেট্রো স্টেশনের মাঝে অবস্থিত সেন্ট পলস ক্যাথেড্রাল চার্চ। বর্তমান সময়ে এই সমস্ত চার্চ বড়দিনের জন্য অন্যভাবেই সেজে ওঠে। যা আগে হতো না। নিজেদের বাড়িঘর সাজিয়ে সন্তুষ্ট থাকতেন সাহেব-মেমরা।

পাশাপাশি বড়দিনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে যিশু। যিনি কবিগুরুর কাছে ছিলেন কল্যাণের দূত। যাঁর জন্মোৎসব পালনকে ঘিরে শান্তিনিকেতনের পৌষ উৎসব হয়ে থাকে। এমনকি রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব খ্রিস্ট ধর্মের আরাধনা করেছিলেন। রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের কেন্দ্রগুলিতে আজও বড়দিনে যিশুর জন্মোৎসব পালিত হয়ে থাকে। ২৫-এ ডিসেম্বরের আগের দিন সন্ধ্যা আরতির পর শুরু হয় যিশুর আরাধনা। কেক, লজেন্স, ফল, পেস্ট্রি থাকে প্রসাদ হিসেবে। এক কথায় বলতে গেলে বাঙালির সঙ্গে মিলেমিশে রয়েছে বড়দিন।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version