।। প্রথম কলকাতা ।।
বিশ্বজুড়ে সারের দাম হুহু করে বাড়ছে। ভারতে চাষবাস বন্ধের মুখে? মোদীর ব্যালেন্স পলিসির ধার ধারলো না রাশিয়া? ভারতকে দিল বড় ঝটকা। সস্তায় সার বিক্রি বন্ধ করলো মস্কো। সুযোগ বুঝে খেলা শুরু চীনেরও। রাশিয়ার ডিশিসনে কত বড় বিপদে পড়ে গেল ভারত? এতো বড় ধাক্কা সামাল দেবে কী করে কৃষকরা? পরিস্থিতি কন্ট্রোল করতে একটাই পথ ভারতের সামনে। জি২০ এড়িয়ে, মস্কোয় বসেই বড় চাল চেলে দিলেন পুতিন। চাপে পড়ে গেল ভারত। ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট মানে ডিএপি সারে ভারতকে ছাড় দেওয়া বন্ধ করল রাশিয়া। রাশিয়ার এই পদক্ষেপ এর জন্য সার আমদানিতে ভারতের খরচ বাড়বে। ভর্তুকির বোঝা বাড়বে।
জ্বালানির পর যুদ্ধের আবহে সার নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে মোদী সরকারের যে লাভের চুক্তি হয়েছিল তাতে বড় ধস। বিশ্বজুড়ে চাহিদা বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতেই এই সিদ্ধান্ত নিল মস্কো কিন্তু ভারতের নিখাদ বন্ধুত্বের কিনা এই দাম? একটু মনে করিয়ে দিই ইউক্রেনে হামলার জেরে পশ্চিমা বিশ্ব যখন রাশিয়াকে একঘরে করার চেষ্টায় ব্যস্ত, ঠিক সেই সময় রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক লেনদেন বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছিল ভারত। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও রুশ তেল কেনা চালিয়ে গেছে দিল্লি। রাশিয়ায় চা, কফি, চাল, ফল, সামুদ্রিক পণ্য রফতানিও শুরু করে দেশটা কিন্তু এর মধ্যেই কি সেসব দিনের কথা বেমালুম ভুলে গেল রাশিয়া? তখন ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণের প্রতিদান হিসেবেই আমাদের দেশে সার রফতানি করার আগ্রহ দেখায় রাশিয়া তারপর থেকে আমদানি করা সারের বেশির ভাগটাই এসেছে রাশিয়া থেকে।
গত ৩১ মার্চ শেষ হওয়া ২০২২-২৩ আর্থিক বছরে রাশিয়া থেকে ভারতের সার আমদানির পরিমাণ ২৪৬ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছিল ৪.৩৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন। এতো সার এসেছে তাও কিনা কম দামে। এতে লাভবান হয়েছে দেশের কৃষকরা। কিন্তু আচমকাই মস্কোর সস্তায় সার না দেওয়ার সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়ে গেল ভারত। ঝোপ বুঝে কোপ মারলো চীন ও। চীন এখন বিশ্বের বৃহত্তম সার রফতানিকারক দেশ। সুযোগ বুঝে তারাও এখন বিশ্বের অন্যান্য দেশে বিক্রি কমানোর চেষ্টা করছে। সবমিলিয়ে বিশ্বজুড়ে সারের বিপুল চাহিদা এবং হুহু করে দাম বাড়তে থাকায় নতুন সমস্যায় ভারতবর্ষ। বলে রাখা ভালো, আগে চীন, মিশর, জর্ডন, সংযুক্ত আরব আমিরশাহি থেকে সার আমদানি করত ভারত। কিন্তু রাশিয়া তাতে থাবা বসিয়েছে। তাহলে কী মস্কোর উপর নির্ভর করে বড় ভুল করলো ভারত?
দেশে মোট ১ কোটি ২৩ লক্ষ টন ডিএপি-র প্রয়োজন। এর মধ্যে ৩৪ লক্ষ ৩৪ হাজার টন উৎপাদিত হয় দেশেই। দেশের ইউরিয়ার প্রয়োজন ৩ কোটি ৫০ লক্ষ টন। এর মধ্যে ২ কোটি ৪০ লক্ষ টন ইউরিয়া উৎপাদিত হয় ভারতে। বাকিটা পূরণ করা হয় আমদানির মাধ্যমে। আপাতত সেটা নিয়েই চিন্তায় নয়াদিল্লি। আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই বিধানসভা নির্বাচন। তার ঠিক আগে বিশ্বব্যাপী সারের দাম বাড়ছে। কৃষকদের বাঁচাতে ভরতুকি বাড়ানো ছাড়া সরকারের সামনে আর কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞদের একাংশ। টাফ টাইম আসছে। রাশিয়ার এই সিদ্ধান্তের কারণে ভারতীয় কোম্পানিগুলোর জন্য আসন্ন শীতে চাহিদা মেটানো কঠিন হতে পারে। কারণ গমের জন্য ওই সময় ডিএপি সারের চাহিদা তুঙ্গে থাকে। এখন দেখার এই পুরো পরিস্থিতিকে কন্ট্রোলে আনতে কোন পথে হাঁটে মোদী সরকার।
খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়
সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম