উত্তর ভারতে শনির বক্রদৃষ্টি, জলের তলায় দিল্লি। হুড়মুড়িয়ে বাড়ছে মৃত্যু, এই দিনেই বড় রিস্ক

।। প্রথম কলকাতা ।।

বন্যায় ধুঁকছে উত্তর ভারত। মৃত্যুমিছিল দীর্ঘ হচ্ছে। ভাসছে হিমাচল, উত্তরাখণ্ড। বন্যার কবলে রাজধানী, যমুনা ভাবাচ্ছে দিল্লিকে। ভারী বর্ষণের কারণে এখনই কাটছে না দুর্ভোগ। বাতিল একাধিক ট্রেন। জায়গায় জায়গায় ভূমিধস। রাস্তাঘাট, বিদ্যুৎ, জল সরবরাহ ইন্টারনেট পরিষেবা বিচ্ছিন্ন। অঝোর ধারায় বৃষ্টির মাঝে বাঁচার জন্য শেষ চেষ্টা চলছে। এটা বন্যা কবলিত উত্তর ভারতের ছবি। বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত দেশের এই অংশ। একদিকে প্লাবন, অন্যদিকে ধস। বৃষ্টির কারণে এখনও পর্যন্ত উত্তর-পশ্চিম ভারতে মৃত্যু ১৪০ ছাড়িয়েছে। সব থেকে বেশি মৃত্যু হয়েছে হিমাচল প্রদেশে। তালিকায় রয়েছে উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, পঞ্জাব, হরিয়ানা। যাকে বলে বাঁধভাঙা বৃষ্টি। ক্ষয়ক্ষতি বিশাল।

হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ডে জলের তোড়ে ভেসে গিয়েছে সব কিছু। হড়পা বানে ভেসে গিয়েছে বাড়ি ঘর, রাস্তা। তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়ছে একের পর এক সেতু, কাদা গোলা জলের তেজে সবকিছু দুমড়ে মুচড়ে একাকার। তবে, বন্যার জলের দাপট সহ্য করেও বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে হিমাচলের পঞ্চবক্ত শিব মন্দির। আর দুর্যোগের মাঝে এই নিয়েই শুরু হয়েছে তোলপাড়। না, থামছে না। আরও বৃষ্টির পূর্বাভাস আইএমডি-র। ১৭ জুলাই পর্যন্ত ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা উত্তরাখণ্ডে, জারি কমলা সতর্কতা। বৃষ্টির প্রভাব সব থেকে বেশি পড়তে পারে হরিদ্বার, পাউরি গাঢ়োয়ালে। ১৬ জুলাই রবিবার বৃষ্টির তীব্রতা বাড়তে পারে, মানুষকে আরও সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে।

বেহাল অবস্থা রাজধানী দিল্লির ও। লালকেল্লা, রাজঘাট জলমগ্ন, জল ঢুকেছে সুপ্রিম কোর্টেও। ১৬ জুলাই পর্যন্ত বন্ধ দিল্লির সব স্কুল। অলরেডি বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়াল সেনার সাহায্য চেয়েছেন। দিল্লির পাশাপাশি জলের নীচে মুম্বই শহরের অনেক এলাকাও। কয়েকদিন হয়ে গেল। গত ৮ জুলাই থেকে টানা বৃষ্টি শুরু হয়েছে উত্তরপূর্ব ভারতে। যার জেরে জনজীবন বিপর্যস্ত। উত্তরাখণ্ড, হরিয়ানা, হিমাচল প্রদেশে এখনই বৃষ্টি থামার চান্স নেই। আর এই বৃষ্টিতে মাটি এতটাই নরম হয়ে উঠেছে যে, জলধারণ ক্ষমতা কমে গেছে। বন্যা আর ধসের সম্ভাবনা বাড়ছে, বিশেষত পাহাড়ি এলাকা রিস্ক ফ্যাক্টর হয়ে দাঁড়াচ্ছে। হিমাচল, উত্তরাখণ্ড দুই রাজ্যেই আটকে বহু পর্যটক। দফায় দফায় পর্যটকদের উদ্ধার করার কাজ চলছে, হেলিকপ্টারে করেও তুলে আনা হচ্ছে। কিন্তু, দুর্ভোগ যে আরও বাড়বে সেটা স্পষ্ট।

১৭ জুলাই থেকে মধ্যপ্রদেশে বৃষ্টি বাড়তে পারে। ১৬ জুলাই উত্তর পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের উপর ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হতে পারে। সেই সঙ্গে নতুন করে পশ্চিমী ঝঞ্ঝার কারণে আগামী দিনে হিমালয়ের পার্বত্য অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমান বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। এই পরিস্থিতিতে প্রবল বৃষ্টির জন্য উত্তর ভারতগামী কিছু ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। পূর্ব রেলের তরফেও বেশ কয়েকটি ট্রেন বাতিল করা হয়েছে। দিল্লি সহ উত্তর রেলের একাধিক জায়গায় রেল চলাচল বিপর্যস্ত। যমুনা-সহ একাধিক নদীর জল বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জম্মু তাওয়াই এক্সপ্রেস বাতিল করা হয়েছে। কলকাতা অমৃতসর এক্সপ্রেস ও হাওড়া-দেরাদুন এক্সপ্রেসের যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। সবমিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির ইয়ত্তা নেই, সেই সঙ্গে প্রাণহানিও অব্যাহত। প্রাকৃতিক এই দুর্ভোগের শেষ কোথায়? জানে না কেউ।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version