Christmas Eve : ক্রিসমাস ইভে চুপি চুপি শহরে আসেন সান্তা! মোজার মাঝেই উপহার, কেন এমন রীতি ?

।। প্রথম কলকাতা।।

Christmas Eve : শীতের রাত, চারিদিক আলোয় আলোয় সেজে উঠেছে। প্রায় প্রতি বাড়িতে সুন্দর করে সাজানো হয়েছে ক্রিসমাস ট্রি (Christmas Tree) । দূর থেকে যেন ভেসে আসছে ক্যারলের ( Carol) সুর । আর জিঙ্গেল বেলস (Jingle Bells) গাইতে গাইতে সাদা বরফ পেরিয়ে নিজের বল্গা হরিণ টানা স্লেজ গাড়িতে শহরে এসে পৌঁছেছেন সান্তা বুড়ো ( Santa Claus) । লাল সাদা টুপি, লাল রঙয়ের পোশাক, সাদা লম্বা দাড়ি আর কাঁধে ঝোলানো একটা মস্ত বড় ঝোলা। সেখানেই তো রয়েছে সকলের জন্য উপহার। বড়দিনের আগের দিন রাতে অর্থাৎ ক্রিসমাস ইভে (Christmas Eve) সুন্দর করে সাজানো ক্রিসমাস ট্রের নিচে সকলের জন্য সান্তা রেখে যাবেন কিছু না কিছু উপহার।

এই কল্পনার বাস্তব ছবি কখনও দেখতে না পেলেও এটা সত্যি ভাবতে খুব একটা সমস্যা হয় না বিশ্ববাসীর। শিশু থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্করাও এখনও পর্যন্ত এটাই বিশ্বাস করতে ভালোবাসেন যে বড় দিনের আগের রাতে খোদ সান্তাক্লজ এসে তাদের জন্য উপহার দিয়ে গিয়েছেন কারণ এই রীতি তো যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। যদিও মনের কোণে আসল সত্যিটা সকলেই জানেন কিন্তু তারপরেও যে কল্পনা আনন্দ দেয়, যে কল্পনা উৎসব আনে তা ভাবতে ক্ষতি কোথায় ? এই কারণেই বড়দিনের আগের রাতে সকলে বালিশের পাশে, ঘরের কোণে কিংবা ক্রিসমাস ট্রির আশেপাশে মোজা (Socks) ঝুলিয়ে রাখেন।

সেই মোজাতেই তো সান্তা উপহার রাখবেন । কিন্তু এই মোজা ঝুলিয়ে রাখার এমন অদ্ভুত রীতি কোথা থেকে এল জানেন ? কবে থেকেই বা শুরু হল এমন ভাবে উপহার দেওয়ার চল? চলুন আসল গল্প জানা যাক। এই ক্রিসমাস ইভে মোজা ঝুলিয়ে রাখার কারণ বলতে গেলে নাম উঠে আসে সেন্ট নিকোলাসের (Saint Nicholas) । কারণ তাঁর সাথেই এই রীতি ওতপ্রোতভাবে জড়িত রয়েছে । সান্তা ক্লজকে নিয়ে যদিও নানা মুনির নানা মত। বহু গল্প প্রচলিত রয়েছে তবে তার মধ্যে সবথেকে বেশি কথিত হল এই গল্প । তখন চতুর্থ শতাব্দী, তুরস্কে বসবাস ছিল সেন্ট নিকোলাস নামে এক ধনবান ব্যক্তির।

তাঁর যেমন ধন রাশির অভাব ছিল না তেমনি দয়ার অভাবও ছিল না। অত্যন্ত দয়ালু সেন্ট নিকোলাস একেবারে ছেলেবেলাতেই নিজের বাবা মাকে হারিয়ে ফেলেছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন যারা দুঃস্থ তাদের জীবনে কিছুটা আনন্দের মুহূর্ত তৈরি করার। কিন্তু সবটাই নিজেকে আড়ালে রেখে । কথিত আছে এক সময় সেই দেশেই অর্থের অভাবে এক ব্যক্তি তাঁর তিন মেয়েকে বিয়ে দিতে পারছিলেন না। সেই খবর যখন সেন্ট নিকোলাসের কাছে যায় । তখন তিনি ওই ব্যক্তির বাড়ির ছাদে রেখে এসেছিলেন সোনা ভরা থলি। রাতের অন্ধকারকেই বেছে নিয়েছিলেন নিকোলাস। ওই ব্যক্তির বাড়ির ছাদে উঠে তাঁর চিমনিতে শুকোতে দেওয়া একটা মোজায় সেই সোনার থলি ভরে রেখে আসেন তিনি।

একবার নয় মোট তিনবার এই কাজটি করেছিলেন। কিন্তু শেষবার আর নিজেকে আড়াল করতে পারেননি। ওই ব্যক্তি নিকোলাসকে দেখে ফেলেন। কথাটা যদিও তিনি চেপে যেতে চেয়েছিলেন কিন্তু তা ক্রমশ প্রচারিত হতে থাকে। এরপর থেকে যখনই কেউ গোপনে উপহার পেতে শুরু করে তখনই মনে করা হয় এই উপহার নিকোলাসের দেওয়া। তুরস্ক জুড়ে নিঃস্বার্থ সেন্ট নিকোলাসের কথা ছড়িয়ে পড়ে আর পরবর্তীতে তা ছড়িয়ে পড়ে তুরস্কের বাইরেও। এইভাবেই সান্তা ক্লজ হিসেবে সকলের কাছে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন ফাদার নিকোলাস বা সেন্ট নিকোলাস।

আরও মজার বিষয় হচ্ছে এখনও পর্যন্ত সান্তাক্লজের বাড়ি রয়েছে এই ভূ-ভাগেই । আপনি যদি কানাডার মুস্কোকা গ্রামে যান তাহলে আপনার সান্তা ক্লজের বাড়ি ঘোরা হয়ে যাবে । কারণ ওই গ্রামকেই সান্তা ক্লজের বাড়ি বলা হয়। সেখানে তাঁর নামে একটি মেইলিং পোস্টও রয়েছে। যেখানে আজও পর্যন্ত লক্ষ লক্ষ চিঠি এসে জমা হয়। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী, সান্তা ক্লজ বা সেন্ট নিকোলাস যাই বলুন না কেন, তিনি নিঃস্বার্থভাবে সকল মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছিলেন। কিছুক্ষণের জন্য হলেও তাদের সমস্ত বিষাদ ভুলিয়ে দেবার চেষ্টা ছিল সান্তা ক্লজের। তাই প্রতিবছর ২৪ ডিসেম্বর রাতে তিনি ঠিক সেই আগের মত নিজের স্লেজ গাড়ি চেপে ঘরে ঘরে পৌঁছে যান। প্রত্যেককে দিয়ে আসেন উপহার । আর একইসঙ্গে পূরণ করেন তাদের মনবাঞ্ছা। এই কারণেই বড়দিনের আগের রাতে ঝুলিয়ে রাখা হয় মোজা।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version