সমুদ্রের অতলে ছুটে বেড়াবে জল মানবী! ইন্ডিয়ান নেভিতে স্পঞ্জের মতো সিস্টেম? কারা এই স্পেশাল লেডি

।। প্রথম কলকাতা ।।

সমুদ্রের জলের তলায় ছুটে বেড়াবে দুই “জল মানবী”? এদের শরীরে কি আছে? জানেন? দুই মহিলা অফিসারকে ছোঁয়া কিন্তু সহজ কথা নয়। স্পঞ্জের মতো সিস্টেম? ইন্ডিয়ান নেভিতে নতুন চমক। পুরুষ নয়, এবার বিশ্বজুড়ে সমুদ্র মিশনে তাক লাগাবে “স্পেশাল লেডি”। সমুদ্রের বুকে ঝড় তুলবেন এই জল মানবীরা। দুঃসাহসিক সমুদ্র মিশনের জন্য ইন্ডিয়ান নেভি, কাদের ফিট করে দিল? বাকি পাঁচজনের থেকে ওঁরা আলাদা। বিশ্বজুড়ে সমুদ্রে একক বিরামহীন মিশনে নামবেন তাঁরা। এই দুঃসাহসিক কাজে সামিল ইন্ডিয়ান নেভিতে কর্মরত ২ মহিলা অফিসার। সমুদ্রের বুকেই কাটবে ২৪ টা ঘন্টা? জোরকদমে নৌযান চালানোর প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে ওই দুই জল মানবীকে। তবে শুধু নৌযান চালনা নয়। আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ থেকে শুরু করে নেভিগেট সম্বন্ধে ধারণা থাকাও খুবই জরুরী। সঙ্গে এই দুজনকে শেখানো হচ্ছে নিজেদের সেফটির এ টু জেড। আরব সাগর, বঙ্গোপসাগর এবং ভারত মহাসাগরে একক অভিযান চালাবেন ওই দুই নেভি অফিসার।

মহিলা অফিসারদের এই দুঃসাহসিক অভিযানের কথা জানিয়েছেন নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল আর হরিকুমার। তাঁর মতে, আধুনিক প্রযুক্তির যুগেও এককভাবে সমুদ্রে অভিযানে বিপদের মুখোমুখি হতে হয়। এটা মহিলাদের কাছে নতুন চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন নৌবাহিনীর প্রধান। আর ঠিক সেই চ্যালেঞ্জের মোকাবেলা করতেই এই দুই মহিলা নৌ অফিসার কে নামানো হচ্ছে সমুদ্রের বুকে। নতুন এই চ্যালেঞ্জ হিসেবে একজন মহিলা নৌঅফিসারকে বিশ্বজুড়ে একক এবং বিরামহীনভাবে সমুদ্রে অভিযান চালাতে হবে। চারটি খানি কথা নয়। চান্স পাওয়াও সহজ ছিল না। এরজন্য প্রাথমিকভাবে ১৭ জনকে ট্রেনিং দেওয়া হয়েছিল। তাদের মধ্যে মাত্র ২ জনকে এই অভিযানের জন্য সিলেক্ট করা হয়। তার জন্য রীতিমত নিজেদেরকে এই মিশনের যোগ্য করে তুলতে হয়েছে। নিজেদেরকে প্রমাণ করতে হয়েছে। কিন্তু কারা এই দুই মহিলা নৌ অফিসার? তাদের আসল পরিচয় কী?

নৌবাহিনী সূত্রে খবর, এই মিশনের জন্য নির্বাচিত দু’জনের মধ্যে একজন কোঝিকোড়ের বাসিন্দা। নাম দিলনা কে। অন্যজন পুদুচেরির বাসিন্দা। লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রূপা আলাগিরিসামি। নৌবাহিনীর একক অভিযানের ফোর্থ ভার্সনে এই দুজন কাঁপাবে সমুদ্র। কমান্ডার দিলনা, নৌবাহিনীর একজন লজিস্টিক অফিসার। আর রূপা একজন নৌঅস্ত্র পরিদর্শক। বর্তমানে তারা পরিবর্তী ধাপের জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। ভারতীয় নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কমান্ডার অভিলাষ টমি নির্বাচিতদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। মাথার ঘাম পায়ে ফেলে দিন রাত এক করে চলছে ট্রেনিং। ট্রেনার অভিলাষ টমি জানিয়েছেন, এই একক অভিযানের জন্য সমস্ত রকমের দক্ষতা থাকা একান্ত প্রয়োজন।তাঁর মতে, নির্বাচিত মহিলা অফিসারদের স্পঞ্জের মতো হতে হবে। তিনি যেভাবে প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন, সেইসব কিছু স্পঞ্জের মতো শোষণ করে নিতে হবে।সেই সঙ্গে একজন প্রশিক্ষক হিসেবে তাদের সাফল্যও কামনা করেছেন অবসরপ্রাপ্ত নৌবাহিনীর ওই কমান্ডার।

জানিয়ে রাখি, মহিলা নৌ অফিসারদের দিয়ে এককভাবে সাগর অভিযানের প্ল্যানটা প্রথম মাথায় আসে প্রয়াত ভাইস অ্যাডমিরাল এমপি আওয়াতির। এর আগে আটজন নাবিক বিশ্বজুড়ে একভাবে সমুদ্রে অভিযান চালিয়েছিলেন তার মধ্যে রয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত কমান্ডার তথা প্রশিক্ষক টমিও। ২০২২ সালে তিনি সমুদ্রে এককভাবে অভিযান চালান। এর আগে দুঃসাহসিক এই অভিযানে পুরুষরাই শুধু অংশ নিয়েছেন। এবার প্রথম মহিলারা এই মিশনে নায়ছেন। এটাকে ভারতে নারী শক্তির ক্ষমতায়ন বলেই মনে করা হচ্ছে। চোখে আঙুল দিয়ে ভারত বুঝিয়ে দিচ্ছে পুরুষদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতে পারে নারীরাও। কিন্তু কবে শুরু হবে এই মিশন? জানা যাচ্ছে আগামী বছর নির্বাচিত এই দুই নৌ অফিসার তাদের মিশন শুরু করবেন। আর সাফল্য আসবে হাতের মুঠোয়।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version