Ratan Tata: ভারতবাসীর হৃদয়ে রতন টাটা, দেশের জন্য তাঁর কৃতিত্বে মুগ্ধ হবেন

।। প্রথম কলকাতা ।।

Ratan Tata: ভারতের অন্যতম প্রখ্যাত শিল্পপতি রতন টাটা (Ratan Tata)। এক ডাকে যাঁর নাম সবাই চেনে। করোনায় যখন দেশের অর্থনৈতিক মুখ থুবড়ে পড়ছিল, সেই সময় কিছুটা হলেও শক্ত হাতে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে সাহায্য করেছিলেন রতন টাটা। নিজের কোম্পানির কর্মচারীদের সঙ্গে তাঁর ব্যবহারে বারংবার মুগ্ধ হতে হয়। ১৯৯০ সাল থেকে তিনি টাটা সনসের চেয়ারম্যান হিসেবে রয়েছেন। বর্তমানে তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা। সম্পত্তির পরিমাণ মুকেশ আম্বানির থেকে কম, কিন্তু ব্যবসায়িক বিচারে রতন টাটা অনেক গুণ এগিয়ে। তাঁর সঙ্গে কারোর তুলনা চলে না। নিজের দেশকে ভালবেসে কিভাবে ব্যবসার সম্প্রসারণ ঘটাতে হয় তার জলজ্যান্ত উদাহরণ রতন টাটা। দেশের গণ্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও তাঁর সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছে। দেশ-বিদেশের নানান শিল্পপতি কিংবা উঠতি তরুণদের কাছে আদর্শের জায়গায় রয়েছেন তিনি। টাটার একাধিক সংস্থার মালিক বিভিন্ন চ্যারিটেবিল ট্রাস্ট। ব্যক্তি রতন টাটার হাতে খুব অল্প কিছু সংস্থার মালিকানা রয়েছে। ২৮শে ডিসেম্বর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। ১৯৩৭ সালের এই দিনটিতেই মুম্বাইতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন রতন টাটা। বর্তমানে তাঁর বয়স ৮৪ বছর।

টাটা গ্রুপের কাজে জড়িয়ে মূল্যবোধ

রতন টাটার (Ratan Tata) জীবনযাপন অত্যন্ত সাধারণ। তিনি টাকা ইনভেস্ট করেন যাতে তাঁর দেশ এবং দেশবাসী আরও সামনের দিকে দ্রুত এগিয়ে যেতে পারে। নানান সোশ্যাল কর্মকাণ্ডের সাথে যুক্ত রয়েছে টাটা গ্রুপ। আসলে টাটা গ্রুপ পাবলিসিটি ছাড়াই পাবলিকের জন্য কাজ করে, শুধুমাত্র মূল্যবোধের উপর নির্ভর করে। টাটা গ্রুপের ৬৬% শেয়ার আলাদা আলাদা ট্রাস্টে ভাগ করে দেওয়া। সেই তালিকায় রয়েছে স্যার দরাবজি টাটা ট্রাস্ট, স্যার রতন টাটা ট্রাস্ট, টাটা এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্ট প্রভৃতি। টাটা গ্রুপের অর্থ ভাগ করে দেওয়া হয় ভারতবর্ষের শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিল্পকলা, সংস্কৃতির ভিন্ন ভিন্ন ক্ষেত্রে। অর্থাৎ টাকা দান করা হয় দেশবাসীর জন্য। চ্যারিটির জন্য যে পরিমাণে শেয়ার রয়েছে তা যদি সব টাটা নিজের নামে করে নেন, তাহলে এশিয়ার মধ্যে সবথেকে ধনী হবে টাটা কোম্পানি।

টাটা গ্রুপের স্ট্রাগল

জামশেদজি টাটার (Jamsetji Tata) হাত ধরেই শুরু হওয়া ব্যবসা বর্তমানে যে জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে, তার মাঝের পথ খুব একটা সহজ ছিল না। জামসেদজি টাটা মাত্র ১৪ বছর বয়স থেকে মুম্বাইয়ের মত শহরে স্ট্রাগল শুরু করেছিলেন। খুব অল্প বয়সেই পরিবারের ভার তাঁর কাঁধে এসে পড়ে। মাত্র ২১ হাজার টাকা দিয়ে শুরু করেন টেক্সটাইলের কাজ। ব্যবসায় সফলতার মুখ দেখতে নাগপুরে প্রথম শুরু করেন টেক্সটাইল মিল।

এই টেক্সটাইল মিল অনেকটা মা লক্ষ্মীর মত ছিল। দুর্দান্ত লাভ এবং সফলতার মধ্য দিয়ে তিনি আরো তিনটি নতুন প্রজেক্ট শুরু করেন। কিন্তু তাঁর মাথায় ছিল প্রজেক্ট গুলি এমন হবে, যার সুবিধা সমস্ত দেশবাসী পাবেন। যদিও তা নিজের চোখে দেখার সৌভাগ্য তাঁর হয়নি। জামসেদজি টাটার মৃত্যুর পর কোম্পানির দায়িত্ব পড়ে দরাবজি টাটার উপর। তারপর একে একে তৈরি হয় আয়রন অ্যান্ড ষ্টীল কোম্পানি, হাইড্রইলেক্ট্রিক পাওয়ার, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সাইন্স প্রভৃতি। তাঁর মৃত্যুর পর টাটা গ্রুপের দায়িত্ব নিজের হাতে তুলে দেন জাহাঙ্গীর টাটা।

তিনি মোট ১৪টি কোম্পানির সামলাতে সেই সংখ্যাকে বাড়িয়ে দেন ৯৫টি কোম্পানিতে। তৈরি করেন ইন্ডিয়ার প্রথম এয়ারলাইন যার প্রথমে নাম ছিল টাটা এয়ারলাইন। পরবর্তীকালে তৎকালীন সরকার নিয়ে নেন এবং নাম রাখা হয় এয়ার ইন্ডিয়া। তারপর তিন জেনারেশনের গুরুত্বপূর্ণ কাজের দায়িত্ব এসে পরে রতন টাটার উপর। যাঁর বর্তমানে আন্তর্জাতিক সুনাম বলে শেষ করা যাবে না। ভারতবর্ষের ছোট ছোট বাচ্চারাও তাঁর নাম জানেন। ভারতবর্ষের বহু যুবক টাটা গ্রুপের সাথে কাজ করতে চান।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version