Arthritis: হাঁটু বা শরীরের জয়েন্টের ব্যথায় নাজেহাল! আপনাকেও কাবু করছে না তো আর্থ্রাইটিস ?

।। প্রথম কলকাতা।।

Arthritis: শরীরের বিভিন্ন জয়েন্ট বিশেষত হাঁটুর জয়েন্টে তীব্র ব্যথা । হাঁটাচলা করা হয়ে উঠেছে মুশকিল । এই ব্যথা কিসের জন্য হয় জানেন ? একে বাংলায় বলে বাত আর চিকিৎসা বিজ্ঞানে এর নাম আর্থ্রাইটিস । একটি গবেষণায় জানা গিয়েছে দেশের প্রতি পাঁচজন মানুষের মধ্যে একজন আর্থ্রাইটিসে ভোগেন । অর্থাৎ এই রোগটি খুব সহজেই মানুষকে কাবু করতে পারে। কিন্তু কখন আপনি বুঝবেন যে আপনার শরীরে বাসা বেঁধেছে আর্থ্রাইটিস ? আর বুঝতে পারলেও বা করণীয় কী ? কেনই বা আপনি আক্রান্ত হলেন আর্থ্রাইটিসে ? এই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর মিলবে আজকের প্রতিবেদনে।

* কেন হয় আর্থ্রাইটিস ?

এই আর্থ্রাইটিস নির্দিষ্ট ধরনের কোন রোগ নয় । মূলত হাঁটু, কনুই সহ শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টের ব্যথাকে আর্থ্রাইটিস বলা হয়। এই রোগের অন্যতম কারণ হল বয়স বৃদ্ধি। আমাদের শরীরের প্রত্যেকটি জয়েন্টে দুটি হাড়ের মাঝে রয়েছে তরুণাস্থি । বয়স বাড়ার সাথে সাথে সেই তরুণাস্থিতে থাকা জলের পরিমাণ বাড়তে থাকে আর প্রোটিনের পরিমাণ কমতে থাকে। যার কারণে ক্ষয় হয় তরুণাস্থির। তাই হাঁটা চলার ক্ষেত্রে এই ধরনের ব্যথা অনুভূত হয়। অনেকের আবার বংশগত কারণেও এই ব্যথা হতে পারে।

* কাদের আর্থ্রাইটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি ?

সাধারণত ৩৫ থেকে ৪০ বছরের গণ্ডি পার করলেই আর্থ্রাইটিস ঘিরে ধরতে পারে। যারা প্রতিনিয়ত দীর্ঘক্ষণ বসে কিংবা দাঁড়িয়ে কাজ করেন অথবা অতিরিক্ত টেনশন যাদের নিত্য সঙ্গী হয়ে উঠেছে তাদের জন্য এই রোগ হওয়ার ঝুঁকি অনেকটাই বেশি থাকে।

* আর্থ্রাইটিসের লক্ষণ :

১. চিকিৎসকরা বলছেন আর্থ্রাইটিসের প্রাথমিক লক্ষণ গুলি শরীরে হাড়ের জয়েন্টের সঙ্গে সম্পর্কিত।

২. জয়েন্টে অতিমাত্রায় ব্যথা অনুভূত হওয়া এবং জয়েন্ট ফুলে যাওয়া।

৩. হাতের আঙুল, কনুই, কাঁধ, হাঁটু , গোড়ালি এবং পায়ের পাতায় ব্যথা অনুভূত হওয়া।

৪. শরীরের উভয় পাশে একসঙ্গে ব্যথা অনুভব করা অর্থাৎ হাতে হলে দু হাতেই পায়ে হলে দু পায়েই ব্যথা।

৫. শরীর দুর্বল লাগে , জ্বর অনুভূত হয়।

* আর্থ্রাইটিসের ধরন

শরীরের বিভিন্ন জয়েন্টের ব্যাথা যাকে আর্থ্রাইটিস বলা হয় তার বহু ধরন রয়েছে। কিন্তু সবথেকে সাধারণ ধরন যা বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে দেখা যায় তা হল অস্টিও আর্থ্রাইটিস এবং রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস।

১. অস্টিও আর্থ্রাইটিস: যখন আমাদের দেহের বিভিন্ন জয়েন্টে থাকা দুটো হাড়ের মাঝখানের তরুণাস্থি ক্ষয়ে যায় তখন যে ব্যথা অনুভূত হয় তাকে অস্টিও আর্থ্রাইটিস বলা হয়। এক্ষেত্রে খুব সহজে নড়াচড়া করা এবং হাঁটাচলা করা ভীষণ কষ্টদায়ক হয়। শরীরের যেকোন হাড়ের জয়েন্টে এই রোগ হতে পারে। বিশেষত যারা ক্রমাগত ভার বহন করেন তাদের এই ধরনের আর্থ্রাইটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। অতিরিক্ত শারীরিক ওজনের জন্যেও এই আর্থ্রাইটিস দেখা যায়।

২. রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস : এই ধরনের আর্থ্রাইটিসে হাতের ও পায়ের আঙুলের অস্থিসন্ধিতে প্রচন্ড ব্যথা অনুভূত হয়। আর তারপর সেই ব্যথা গোড়ালি , হাঁটু এমনকি ঊরু সন্ধিতেও ছড়িয়ে পড়ে । এই ধরনের আর্থ্রাইটিসকে অটো ইমিউন ডিজিজ বলা হয়। অর্থাৎ আমাদের শরীরের যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছে তা অস্থি সন্ধিকে নিজের শত্রু বলে মনে করে। তার বিরুদ্ধেই প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে যায়। এর সঠিক চিকিৎসা না করা হলে অস্থিসন্ধি বিকৃত পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে।

৩. এছাড়াও আরও বহু ধরনের আর্থ্রাইটিস দেখা যায়। বিবিসি বাংলার একটি প্রতিবেদন থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী বিজ্ঞানীরা এখনও পর্যন্ত প্রায় ২০০ রকমের আর্থ্রাইটিস এর ধরন আবিষ্কার করেছেন।

* ব্যথা কমানোর উপায়

১. আর্থ্রাইটিস এর লক্ষণ গুলি বুঝতে পারলে সর্বপ্রথম যে কোন অর্থপেডিক ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। তাঁর দেওয়া বেদনা নাশক ওষুধগুলি নিয়মিত খেলে ব্যথা থেকে মুক্তি মিলবে। তবে এছাড়াও নিজের জীবন যাপনে কিছুটা বদল আনতে হবে।

২. নিয়মিত ব্যায়াম করার অভ্যাস তৈরি করুন। হাঁটা চলা করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

৩. মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকার চেষ্টা করুন।

৪. নিয়মিত আপনার শরীর যতটা নিতে পারে ততটা পরিশ্রম করুন । অতিরিক্ত বিশ্রাম এক্ষেত্রে বিষের মতো কাজ করতে পারে

৫. শরীরের অতিরিক্ত ওজন থাকলে তা কমানোর চেষ্টা করুন এবং পুষ্টিকর খাবার খান।

৬. বেশি ঝুঁকে কোন কাজ করবেন না।

৭. চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী নিজের জীবনযাপনের ধরন একেবারে বদলে ফেলুন । সুস্থ জীবন যাপন করুন। তবেই আর্থ্রাইটিস থেকে মুক্তি মিলবে।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version