ভারতে তেলের হাহাকার! বন্ধুত্বের একী প্রতিদান রাশিয়ার ? টেনশন বাড়ছে

।। প্রথম কলকাতা ।।

ভারতে কী তেলের জন্য হাহাকার পড়তে চলেছে? অসময়ের উপকার বেমালুম ভুলে গেল রাশিয়া? ভারতের রাষ্ট্রায়াত্ত তেল সংস্থাগুলোর কয়েক হাজার কোটি টাকা আটকে পুতিনের দেশে। চেয়েও আদায় করতে পারছে না নয়াদিল্লি।  রাশিয়ার ডিসিশনে কত বড় বিপদে পড়ে গেল ভারত? তেলের আকাল পড়ে গেলে, তেলের দাম ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গেলে সামাল দেবে কি করে ভারতের সাধারণ মানুষ? সিচুয়েশন কন্ট্রোলে আনতে কোন প্রস্তাব দিল মোদী সরকার? রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বড় ঝটকা খেলো ভারত। রাশিয়ার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে আটকে আছে ভারতের কোটি কোটি টাকা কিন্তু ভারতের টাকা রাশিয়ায় আটকে গেল কিভাবে?

বিদেশে ভারতের তেল সংস্থা ওএনজিসি- ওভিএল, অয়েল ইন্ডিয়া-ওআইএল, ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশন- আইওসি এবং ভারত পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন বিপিসিএল নামে ব্যবসা চালায়। রাশিয়ায় ভারতের তেল সংস্থাগুলোর লগ্নির মোট অঙ্ক ৫৪৬ কোটি ডলার মানে প্রায় ৪৫,০০০ কোটি টাকা। রাষ্ট্রায়ত্ত এই তেল সংস্থাগুলোর বিদেশি ওই সব ব্রাঞ্চের লভ্যাংশের টাকা প্রায় ৬০০ মিলিয়ন ডলার। এই টাকাই রাশিয়ায় তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে আটকে আছে। যা হাহুতাশ করেও ফেরত পাচ্ছে না তেল সংস্থাগুলো অংকটা কিন্তু বিরাট বড় রকমের। বিষয়টা নিয়ে নয়াদিল্লি এবং মস্কোর মধ্যে শীর্ষস্তরে আলোচনা হয়েছে। পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হচ্ছে। সমাধানের পথ বের করতে গত কয়েক মাস ধরেই ভারতীয় তেল সংস্থাগুলো তাদের রুশ পার্টনারদের সঙ্গে আলোচনা করেছে কিন্তু, কোথায় কী?

অথচ রাশিয়া কিন্তু বর্তমানে ভারতের সবচেয়ে বড় অশোধিত তেলের সোর্স। ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ কমার্শিয়াল ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড স্ট্যাটিস্টিক্সের তথ্য বলছে, শুধুমাত্র জুলাইয়ে ভারতে রাশিয়া থেকে তেল আমদানির মূল্য ছিল ৩.৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। মানে, যে দেশের সঙ্গে ভারতের এত বড় বাণিজ্যিক সম্পর্ক, এতো লেনদেন হয় তাদের সঙ্গেই কি না এত বড় রকমের সমস্যা বেঁধে বসে আছে? সেক্ষেত্রে সমস্যা না মিটলে রাশিয়া থেকে ভারতের তেল কেনার ক্ষেত্রে কোনো এফেক্ট পরবে না তো? আসলে রাশিয়া ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে আক্রমণ চালানোর পর পশ্চিমা বিশ্বের বিভিন্ন বিধিনিষেধের জালে জড়িয়ে পড়েছে মস্কো। ওয়াকিবহাল মহলের বক্তব্য, টেক্সট ইফেক্ট ইউক্রেনের উপরে আগ্রাসনের পরে রাশিয়ার প্রথম সারির ব্যাঙ্কগুলিকে আন্তর্জাতিক আর্থিক লেনদেন প্রযুক্তি ব্যবস্থা সুইফট থেকে বাদ দিয়ে দেওয়া হয়। আবার বিনিময় হারের অস্থিরতা কমাতে দেশ থেকে ডলার বেরিয়ে যাওয়ার উপরে কড়াকড়ি এনেছে মস্কোও।

আর ঠিক এই কারণেই ওই লভ্যাংশের টাকা ভারতে ফিরিয়ে আনতে পারছে না তেল সংস্থাগুলি। তাই বাধ্য হয়ে অন্য পথে হাঁটতে চাইছে ভারত। ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলো চাইছে রাশিয়ায় আটকে থাকা তাদের লভ্যাংশের টাকা থেকে ভারতের তেল আমদানির খরচ মেটানো হোক কেন? কারণ, এর মধ্যে অনেক আর্থিক এবং আইনি জটিলতা রয়েছে। ভারতের তেল সংস্থাগুলো বলছে তারা একটি সমাধানসূত্র খুঁজে বের করার জন্য চেষ্টা করছে। তেলের বকেয়াগুলোর সাথে সামঞ্জস্য করার জন্য সরাসরি টাকা ব্যবহার করা সম্ভব নয়, কারণ তার সঙ্গে হিসেব, আন্তর্জাতিক ট্যাক্স সহ নানা বিষয় জড়িয়ে আছে। আর, এই সব কারণেই ভারতীয় তেল সংস্থাগুলো মস্কোর বিরুদ্ধে পশ্চিমী দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করতে চায় না। কিন্তু আটকে থাকা টাকা দিয়ে তেলের দাম মেটানোর প্রস্তাব রাশিয়া এখনও মেনে নেয়নি। আর এখানেই যত বিপত্তি। ফলে আগামী দিনে এই সমস্যার সমাধান কিভাবে হবে বা পুরো ঘটনার জল কতদূর গড়াবে সেটা এখন থেকেই আঁচ করা কঠিন।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version