United States: ফাঁস যুক্তরাষ্ট্রের নীল নকশা ! কী সেই রহস্য ?

।। প্রথম কলকাতা ।।

 

United States: যুক্তরাষ্ট্রের বড় ষড়যন্ত্র। কব্জা করে নেবে রাশিয়ার সম্পদ! নীল নকশা ফাঁস হতেই তোলপাড় গোটা বিশ্বজুড়ে। তড়িঘড়ি উত্তর কোরিয়া যাচ্ছেন পুতিন। যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে কিমের সাথে কোন জরুরী আলোচনায় বসবেন পুতিন? দুর্বল হচ্ছে জো বাইডেনের পায়ের তলার মাটি। আর এই সুযোগটাই কি খুঁজছিল রাশিয়া? কিম-পুতিনের গলায় গলায় ভাব। বাইডেনের সর্বনাশের ইঙ্গিত নয় তো? নাকি রাশিয়া নিজেই জড়িয়ে পড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের চক্রান্তে? তুরুপের তাস এখন ইউক্রেন। যা হতে চলেছে ভাবতেও পারবেন না।

 

রাশিয়ার বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের ষড়যন্ত্র, বানচাল করবে কিম-পুতিনের বৈঠক!

পুতিনের পরাজয় নয়, বরং আরো ভয়ঙ্কর লক্ষ্য পূরণের দিকে এগিয়ে চলেছে পশ্চিমা বিশ্ব। ফাঁস হয়ে গেল সেই নীল নকশা। তড়িঘড়ি উত্তর কোরিয়ায় যাচ্ছেন পুতিন। কিমের সঙ্গে কোন জরুরি শলাপরামর্শ রয়েছে তাঁর? ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকেই কিন্তু গোটা বিশ্বজুড়ে দলাদলিটা শুরু হয়ে গিয়েছে। বহু পশ্চিমা দেশ জেলেনেস্কিকে সাপোর্ট করছে, যাতে সমস্ত সমর্থ্য দিয়েও রাশিয়াকে হারানো যায়। বিশেষ করে মদদ যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন ন্যাটোজোট থেকে শুরু করে ইউরোপীয় মার্কিন মিত্ররা। কিন্তু এবার যা জানা গেল তা একেবারেই অবিশ্বাস্য ব্যাপার। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনকে শুধু হারানোই নয়, বরং পশ্চিমাদের তলে তলে রয়েছে অন্যরকম প্ল্যান। এমনটাই দাবি করেছেন হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবান। তাঁর মতে, পশ্চিমা দেশগুলো নাকি রাশিয়ার জাতীয় সম্পদ কবজা করতে চায়। আর তাই তো মস্কোকে সামরিকভাবে পরাজিত করতে উঠে পড়ে লেগেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ তার মিত্র দেশগুলো। শুধুমাত্র পুতিনের পরাজয়ই নয়, বরং লুকিয়ে রয়েছে প্রচুর অর্থের লোভ।

 

যা পশ্চিমা দুনিয়াকে প্রভাব আর ক্ষমতা অর্জনে অনেকটা সাহায্য করবে। দেখুন হাঙ্গেরির এই প্রধানমন্ত্রী কিন্তু পুতিনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তাঁর মতে, ১৯৯০ এর দশকে ইউরোপিয়ানরা রুশ সরকারের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে রাশিয়ার অর্থনীতিতে অনুপ্রবেশ করেছিল। তখন কিন্তু তাদের সামনে খুব একটা প্রতিবন্ধকতা আসেনি। আর পশ্চিমারা নাকি ঠিক তখন থেকেই রাশিয়াকে শোষণ করার চেষ্টা চালাচ্ছে। যদিও রাশিয়ানরা বহু আগেই সব সম্পত্তি তাদের নিজের হাতে নিয়ে নিয়েছে। আর এখন পশ্চিমারা অপেক্ষা করছে একটা বড় সুযোগের। আর সেই সুযোগটা হল ইউক্রেনে রাশিয়ার পরাজয়। একবার যদি রাশিয়া হেরে যায়, তাহলে বড় মুনাফা পশ্চিমাদের। কারণ অস্ত্র বিক্রেতা, ঋণদাতা এবং শেয়ার বাজারের জুয়ারিরা তাদের লাভের অংশগুলো হাসিল করতে উঠে পড়ে লেগেছে। আর খটখাটা তো এখানেই। রাশিয়ার কাছে নিশ্চয়ই এসব খবর একেবারেই অজানা নয়। পশ্চিমা দেশগুলোর এই নতুন রীতি অনেকটা রাশিয়ার বিরুদ্ধে পরোক্ষভাবে যুদ্ধ ঘোষণার শামিল। যদি রাশিয়া একবার এই ধরনের ঘটনার প্রতিশোধ নিতে চায়, তাহলে কিন্তু ইউরোপে বড় পরিসরে যুদ্ধ বেঁধে যেতে পারে। এমনটাও হতে পারে, নিজের জালেই জড়িয়ে পড়বে ন্যাটো। ইউক্রেনের মাটিতেই হয়তো ন্যাটো নিজের ধ্বংস ডেকে আনবে।

 

রুশ প্রেসিডেন্ট বিরুদ্ধে যে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে, তা তিনি খুব ভালোভাবেই জানেন। তাই হয়তো এবার একটু বেশি ভরসা করছেন উত্তর কোরিয়ার শাসক কিমের উপর। সম্প্রতি পুতিন উত্তর কোরিয়া আর ভিয়েতনাম সফরে যাচ্ছেন। খেয়াল করে দেখুন, এই দুই এশীয় দেশ কিন্তু আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে প্রায় বিচ্ছিন্ন। পুতিন প্রথমে উত্তর কোরিয়ার সফরে যাবেন, তারপর সেখান থেকে রওনা দেবেন ভিয়েতনামে। পুতিনকে স্বাগত জানাতে উত্তর কোরিয়ায় রীতিমত সাজো সাজো রব। গতবছরের সেপ্টেম্বরে কিন্তু মস্কো সফরে গিয়েছিলেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। তখন পুতিন তাঁকে কথা দিয়েছিলেন, উত্তর কোরিয়াকে স্যাটেলাইট তৈরিতে মস্কোর সাহায্য করবে। মনে করা হচ্ছে, রাশিয়ার নির্মাণ খাত সহ অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিগত বেশ কয়েক মাস ধরে শ্রমিক সংকট চলছে। এই সফরে হয়ত উত্তর কোরিয়া থেকে শ্রমিক নেওয়ার ব্যাপারে কিম আর পুতিনের মধ্যে আলোচনা হতে পারে। একইভাবে ভিয়েতনামে জ্বালানি, শিক্ষা, দুই দেশের বাণিজ্যে নিজে নিজে মুদ্রার ব্যবহার ও সামরিক সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে। পশ্চিমা দেশগুলোর কাছে যে সময়টা পুতিন এক ঘরে হয়ে গিয়েছেন, সেই সময়টা কিন্তু তিনি নিজেকে কখনো ওই দুর্বল ভাবেননি। বরং নিজের শক্তি বাড়াতে বেছে নিয়েছেন বিকল্প দেশগুলোকে। যার মধ্যে অন্যতম উত্তর কোরিয়া। আর ওদিকে মধ্যপ্রাচ্যে রয়েছে ইরান।

 

হুমকির মুখে যুক্তরাষ্ট্র, দূর্বল হচ্ছে বাইডেনের পায়ের তলার মাটি

অপরদিকে পুতিনের এই সফরকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণভাবে দেখছেন কিম। কারণ সাম্প্রতিক সময়ে উন্নতমানের ব্যবহৃত ক্ষেপণাস্ত্র হুমকি মোকাবিলায় যৌথভাবে পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র আর দক্ষিণ কোরিয়া। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে কিমের পুতিনের সাহায্য বড্ড দরকার। এখন কোরীয় উপদ্বীপে চরম উত্তেজনা, আর তার মাঝেই রুশ প্রেসিডেন্টের এমন সফর একেবারেই হালকাভাবে নিচ্ছে না যুক্তরাষ্ট্র। কারন উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে রাশিয়া অংশীদারিত্ব নির্মাণ করতে চায়। আরে এমনটা হলে, তা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য একটা বড় হুমকি হতে পারে। কারণ উত্তর কোরিয়ায় এমন একটা দেশ, যে দেশ কোরীয় উপদ্বীপে ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের শিরোনামে থাকে। সম্প্রতি কিম ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষাও বাড়িয়ে দিয়েছেন। আর তার সম্ভাব্য হুমকি মোকাবিলায় যৌথ সামরিক মহড়া বাড়িয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া আর যুক্তরাষ্ট্রের জোট। আরে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি সামরিক পদক্ষেপের জেরে বেড়ে চলেছে উত্তেজনার পারদ। ঠিক সেই মুহূর্তে পুতিন যাচ্ছেন কিমের সঙ্গে দেখা করতে।

 

সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক ভূ রাজনীতিতে বিভিন্ন আঞ্চলিক যুদ্ধকে কেন্দ্র করে যেন একটু বেশি হাইলাইটেড হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র আর রাশিয়া। ইউক্রেন রাশিয়ার যুদ্ধে যেমন যুক্তরাষ্ট্র ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে, তেমনি মধ্যপ্রাচ্যে হামাস-ইসরাইল কিংবা ইসরায়েল-ইরান সংঘাতেও কিন্তু রাশিয়া আর যুক্তরাষ্ট্র পরোক্ষভাবে জড়িয়ে। সামরিক কিংবা অর্থনীতিতে বিশ্বের এক নম্বর দেশটি আজ একের পর এক মার খাচ্ছে। যেন কোথাও গিয়ে খেই হারিয়ে ফেলেছে যুক্তরাষ্ট্র। তাই মাটি কামড়ে ধরতে এমন সমস্ত জটিল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলছে, যার জেরে নিজের জায়গাটাই হারিয়ে ফেলছে দেশটা। যুক্তরাষ্ট্রের সময়টা মোটেই ভালো যাচ্ছে না । সম্প্রতি আফ্রিকাতেও নতুন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়েছে দেশটা। যেখানে বেজিংয়ের আগ্রাসন ব্যাকফুটে ঠেলে দিচ্ছে ওয়াশিংটনকে। তার উপর আফ্রিকার নাইজারে মার্কিন ঘাঁটিতে রাশিয়া ঢুকে পড়ায়, সেখানেও বড় ধাক্কা খাচ্ছে দেশটা। সোজা কথায় যুক্তরাষ্ট্র যখন আফ্রিকায় পায়ের নিচে মাটি হারাচ্ছে, ঠিক তখন এই আফ্রিকাকে গিলে খেতে চাইছে পুতিনের দেশ। আসলে পুতিন এখন নাছোড়বান্দা, ইউক্রেনের যুদ্ধের মাধ্যমে পুরো ইউরোপকে তিনি একটা বড় শিক্ষা দিতে চাইছেন। রাশিয়া কিন্তু এখন সামান্যতম নিরাপত্তা হুমকিও সহ্য করে না। তাই আন্তর্জাতিক প্রভাব বিস্তারে বিশেষভাবে নজর দিচ্ছে আফ্রিকার দিকে। তলে তলে রুশ ভাড়াটিয়া আফ্রিকার নেতাদের রক্ষা থেকে শুরু করে রাষ্ট্রগুলোকে চরমপন্থীদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করছে। আফ্রিকা কোর তৈরির মাধ্যমে রাশিয়া নাকি আফ্রিকাতে আরো জোরালো করতে চাইছে সামরিক উপস্থিতি। এমনটাই মনে করছে কূটনৈতিক মহলের একাংশ। যেখানে মূল বিষয় হয়ে উঠেছে এই মহাদেশের প্রাকৃতিক সম্পদ। আর তারই জবাব দিতে এবার পুতিনের বিরুদ্ধে মাস্টার প্ল্যান করছেন বাইডেন।

 

কিম-পুতিনের আলোচনা ভাইটাল ইস্যু, তাকিয়ে বিশ্ব রাজনীতি

কিম আর পুতিনের মধ্যে ভূ রাজনৈতিক স্ট্র্যটেজি নিয়ে যে আলোচনা হবে, এটাই স্বাভাবিক। কারণ এই দুই দেশ গোটা বিশ্বজুড়ে নিজেদের আধিপত্য ধরে রাখতে মরিয়া। পশ্চিমা দেশগুলোকে এক চুলও জায়গা ছেড়ে দিতে নারাজ। সেটা লুকিয়ে নয় বরং প্রকাশ্যে বারংবার বলে এসেছে। কিম তো রীতিমত হুমকি দিয়েই কথা বলেন। তাই আপাতত, কিম আর পুতিনের মধ্যে কি কথা হবে সেদিকে তাকিয়ে বিশ্ব রাজনীতি। আশঙ্কা করা হচ্ছে, রাশিয়ার সাপোর্ট পেলে হয়তো কিম দক্ষিণ কোরিয়ায় হামলা আরো জোরদার করতে পারে। পরোক্ষ ভাবে যুদ্ধে বেঁধে যেতে পারে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে। হিসাব অনুযায়ী, ব্যাপারটা তখন আরো জটিল থেকে জটিলতর হবে। আর যদি কিম- পুতিনের আলোচনা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে, তাহলে এই মুহূর্তে আপাতত কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা বাড়ার সম্ভাবনা নেই। কিন্তু কি বলুন তো? ভয়ের আশঙ্কাটা একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কারন কিম যা মনে করেন, ঠিক তাই করে দেখান। যুক্তরাষ্ট্র নিজের জায়গা ধরে রাখতে দক্ষিণ কোরিয়াকে আপ্রাণ সাহায্য করবে। যেমন ভাবে ইউক্রেনকে সাহায্য করে চলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বড় হাত আছে বলেই না এখনো পর্যন্ত রাশিয়ার দাপটের সামনে টিকে রয়েছে ইউক্রেন। ঠিক তেমনভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্যের জোরে উত্তর কোরিয়ার হুমকির মোকাবিলা করছে দক্ষিণ কোরিয়া। আর তাইতো যুক্তরাষ্ট্রের উপর বিশ্বের কিছু দেশের এত রাগ।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version