লক্ষ্মীর বাহন এখানে হাতি! দুর্গাপুজোর মতোই থিমের চমক

।। প্রথম কলকাতা ।।

দুর্গাপুজোর পরেই মেতে ওঠা আর এক পুজো হলো লক্ষীপুজো। ঐতিহ্য, উৎসব, আড়ম্বর, থিম— কোনও কিছুই বাদ পড়ে না লক্ষ্মীপুজোয়। একদিকে যেমন দেখা যাচ্ছে থিমের আড়ম্বর তেমনি অন্যদিকে দেখা যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী শতাধিক বছর পুরনো লক্ষ্মী পুজো। কোন কিছুতেই আয়োজনে খামতি নেই। লক্ষ্মী পূজার থিমের চমক দিচ্ছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুরের সদিয়ালের লক্ষ্মীপুজো। ধর্ম বৈষম্যকে তুচ্ছ করে, মথুরাপুরের ঐতিহ্যের লক্ষ্মীপূজো সব রেকর্ড ভাঙছে। শিলিগুড়ির কামাক্ষ্যা বিশালাক্ষী মন্দিরের আদলে তৈরি হচ্ছে পুজো মণ্ডপ। আর মা লক্ষ্মী তৈরি হচ্ছে কয়েক হাজার বিভিন্ন জাতের লঙ্কা দিয়ে।

পাশাপাশি হোগলা পাতা, ফুল দিয়ে নির্মাণ হচ্ছে লক্ষ্মণের শক্তিশেল আর কয়েক হাজার রাখী দিয়ে তুলে ধরা হবে সীতার বনবাস। দেখানো হবে বালেশ্বরের ট্রেন দুর্ঘটনা।মথুরাপুরের সদিয়াল জনকল্যাণ সমিতির সহযোগিতায় আমরা সবাই ভাই ভাই সঙ্ঘের পরিচালনায় পুজো এবার ১৭ বছরে পা দিয়েছে। কৃষ্ণচন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের সদিয়াল গ্রামে শ’তিনেক মানুষের বাস। তাঁরা কেউ মৎস্যজীবী, কেউ কৃষিজীবী। তাঁরা প্রতি বছর পুজো শেষে মূর্তি বিসর্জনের পরের দিন থেকেই পরবর্তী বছরের জন্য লক্ষ্মীর ভাণ্ডারে একটু একটু করে টাকা জমাতে শুরু করেন। সারা বছরের জমানো টাকা তুলে দেওয়া হয় পুজো কর্তাদের হাতে।

অন্যদিকে ঐতিহ্যবাহী পুজোতে মেতে উঠছে বাঁকুড়ার রামকানালি গ্রামের মানুষ। এই গ্রামে লক্ষ্মীদেবীর বাহন পেঁচা নয়, হাতি। পুজোতে লক্ষ্মীর পাশাপাশি আরাধনা করা হয় গজরাজকেও।কেন এই ব্যাতিক্রমী পুজো জানেন? আজ থেকে ১২৬ বছর আগে যখন রামকানালি গ্রামে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর সূচনা হয় তখন ওই গ্রামের চারিদিকে থাকা জঙ্গল আরও বেশি ঘন ছিল। সেই জঙ্গল থেকে মাঝেমধ্যেই গ্রামে হানা দিত হাতির দল। হাতির দলের হানায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হত মাঠের ফসলের। আর তাই মাঠের ফসলকে নির্বিঘ্নে লক্ষ্মীরূপে নিজের খামারে তুলে আনতে গজরাজদের শান্ত করার প্রয়োজন ছিল। সে কারণেই আজ থেকে একশো ছাব্বিশ বছর আগে ধনদেবীর আরাধনার সঙ্গে গজরাজের পুজো শুরু হয়।

দেবী এখানে হাতির পিঠে অধিষ্ঠাত্রী। কালক্রমে সেই লক্ষ্মীপুজোই গজলক্ষ্মী হিসাবে পরিচিতি পায়। হাতির হানা থেকে ফসল বাঁচাতে কোজাগরীতে গজলক্ষ্মীর পুজো করেন রামকানালি গ্রামের মানুষ। প্রাচীন রীতি মেনেই আজও কোজাগরী পূর্ণিমায় এখানে গজলক্ষ্মীর আরধনায় মেতে উঠেন গ্রামের আট থেকে আশি। পুজোর স্বাদ নিতে গ্রামে হাজির হয় ভিন গ্রামের প্রচুর মানুষ। সব মিলিয়ে দূর্গা পূজার পর লক্ষ্মী পুজোয় আবারও নতুন করে মেতেছে বাঙালি। চারিদিকে আবার নতুন করে উৎসবে আমেজ দেখা দিচ্ছে।

 

খবরে থাকুন, ফলো করুন আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ায়

সব খবর সবার আগে, আমরা খবরে প্রথম

Exit mobile version